অস্ট্রেলিয়ান লিগে খেলার প্রস্তাব পেলেন ঋতুপর্ণা চাকমা

 


ভূটানের পর এবার অস্ট্রেলিয়ান ফুটবল লিগে খেলার প্রস্তাব পেলেন ঋতুপর্ণা চাকমা। গণমাধ্যমকে তথ্য নিশ্চিত করেছেন বাফুফের সহ-সভাপতি ফাহাদ করিম।

অস্ট্রেলিয়ান যে ক্লাব থেকে খেলার প্রস্তাব পেয়েছেন ঋতুপর্ণা; সেটির নাম আপাতত প্রকাশ করছে না বাফুফে। তবে সেটি অস্ট্রেলিয়ার ন্যাশনাল প্রিমিয়ার লিগ উইমেনসের একটি ক্লাব। যারা খেলে দেশের নারী ফুটবলের তৃতীয় টায়ারে।

তবে প্রস্তাবনা পেলেও অস্ট্রেলিয়ায় ঋতুপর্ণা চাকমার খেলা অনেক কিছুর উপর নির্ভর করছে। এশিয়া ইউরোপের বেশ টি দেশের ক্লাবের সঙ্গে নারীদের খেলা নিয়েও আলোচনা করছে ফুটবল ফেডারেশন।

এশিয়ান কাপ আগামী বছর মার্চে হবে অস্ট্রেলিয়াতে। তার আগে এই লিগে ঋতুপর্ণা পাশাপাশি আরো অনেক নারী ফুটবলার খেলতে পারলে তা খেলোয়াড়দের জন্য ভালো বিষয় হয়ে উঠবে।

‘স্বায়ত্তশাসন চাওয়ায় আমাদের বিচ্ছিন্নতাবাদী ট্যাগ দেওয়া হচ্ছে’

 


শুধু এই সরকার নয়, সেই অতীত থেকে পার্বত্য চট্টগ্রাম নানাভাবে আগ্রাসনের শিকার। আমরা সামরিক বাহিনীর নির্যাতন নিরসনে স্বায়ত্তশাসন চেয়েছিলাম। তখন থেকে আমাদের বিচ্ছিন্নতাবাদী ট্যাগ দেওয়া হচ্ছে। কিন্তু কোনো অঞ্চলের স্বায়ত্তশাসন চাওয়া মানেই বিচ্ছিন্নতাবাদী নয়।

শুক্রবার ( আগস্ট) রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ের (রাবি) ডিনস কমপ্লেক্সেজুলাই গণ-অভ্যুত্থানের এক বছর: পাহাড়-সমতলে জাতিসত্তাসমূহের প্রত্যাশা প্রাপ্তিশীর্ষক আলোচনা সভায় প্রধান অতিথির বক্তব্যে ইউনাইটেড পিপলস ডেমোক্রেটিক ফ্রন্টের (ইউপিডিএফ) সংগঠক মাইকেল চাকমা এসব কথা বলেন।

মাইকেল চাকমা বলেন, ‘সেই অতীত থেকে ব্রিটিশরা তাদের সাম্রাজ্যবাদী শাসনব্যবস্থা চাপিয়ে দেওয়ার পর থেকে একে একে পার্বত্য চট্টগ্রাম নানাভাবে আগ্রাসনের শিকার হয়। ১৮০৭ সালের আগস্টের এই দিনে ব্রিটিশরা পার্বত্য চট্টগ্রামকে ব্রিটিশ সাম্রাজ্যের অন্তর্ভুক্ত করে। এর আগে আমাদের স্বাধীন শাসনব্যবস্থা ছিল। তারপর ব্রিটিশরা চলে যাওয়ার পর দেশ বিভাজনের সময় আদিবাসীরা আবারও প্রতারণার স্বীকার হয়। দেশভাগের পর পাকিস্তানের অংশ হিসেবে তাদের যে অধিকারের সাংবিধানিক রূপ দেওয়া হয়, তা আবারও বাতিল করা হয়।

ইউপিডিএফ-এর এই সংগঠক আরও বলেন, ‘দেশ স্বাধীনের পর ১৯৭২-এর সংবিধানে আমাদের বাঙালি বলা হয়। পরবর্তী সময়ে শেখ মুজিব পার্বত্য চট্টগ্রাম সফরে গিয়ে আমাদের বাঙালি হয়ে যাওয়ার কথা বলেন। তারপর জিয়া ক্ষমতায় এসে পাহাড়কে সামরিক শক্তিতে দেখতে থাকেন এবং সেখানে সামরিকায়ন করার সঙ্গে সঙ্গে তিনি সেখানে গণতান্ত্রিক আগ্রাসনের পরিকল্পনা আনেন। এই পরিকল্পনার অংশ হিসেবে লাখ লাখ শ্রমজীবী মানুষকে রাষ্ট্রীয় পৃষ্ঠপোষকতায় পুনর্বাসন করেন, যা আমাদের অস্তিত্বের সঙ্গে সাংঘর্ষিক হয়ে ওঠে।

তিনি আরও বলেন, ‘এভাবে চলতে চলতে পার্বত্য চট্টগ্রাম চুক্তি হলো। এই চুক্তির ফলেও আমরা পুনরায় প্রতারিত হলাম। আমরা যে প্রত্যাশার কথা বলছি, তা আমাদের অনেক ছিল। কিন্তু বারবার প্রত্যাশার বিপরীতে আমাদের বিরুদ্ধে রাষ্ট্র তার আধিপত্যবাদের যে চিন্তা, তা আমাদের ওপর চাপিয়ে দিয়েছে। যে সরকারই এসেছে, তারা নিজ নিজ স্বার্থে পার্বত্য চট্টগ্রাম চুক্তিকে শুধু ঝুলিয়েই রেখেছে।

রাবির সহযোগী অধ্যাপক গোলাম সারোয়ার সজন বলেন, ‘প্রকৃত অর্থে আদিবাসী জনগোষ্ঠীর যে অধিকার, তা দিন দিন সংকুচিত হচ্ছে। তারা বিভিন্ন গণতান্ত্রিক আন্দোলনসহ ফ্যাসিবাদের বিরুদ্ধে উল্লেখযোগ্য ভূমিকা রাখলেও প্রাপ্তির বেলায় শূন্য। বিগত ফ্যাসিস্ট আমলে সন্ত্রাস উচ্ছেদের নামে তাদের হত্যা করা হয়েছে। কিন্তু ফ্যাসিবাদ বিলোপ হলেও তাদের অধিকার বাস্তবায়িত হয়নি।

বিপ্লবী ছাত্র মৈত্রী রাবি শাখার সাবেক সভাপতি প্রদীপ মার্ডি বলেন, ‘পাহাড়িদের প্রাপ্তির প্রশ্নটা পঞ্চাশ বছরে প্রশ্ন হয়েই থেকেছে। রাষ্ট্রের ক্ষমতার পরিবর্তন হলেও তাদের ভাগ্যের পরিবর্তন হয়নি। কোনো রাজনৈতিক দল, প্রতিষ্ঠান কেউ- বহু জাতিত্ব স্বীকার করেনি। বাংলাদেশ বহুজাতির হলে রাষ্ট্রব্যবস্থায়ও তার উপস্থিতি থাকতে হবে।’

পিসিপি রাবি শাখার সভাপতি শামীন ত্রিপুরার সভাপতিত্বে সভায় আরও বক্তব্য দেন পিসিপি সভাপতি অমল ত্রিপুরা, রাবি শাখা ছাত্র ইউনিয়নের সভাপতি রাকিব হোসেন, রাষ্ট্রচিন্তার পক্ষে কৌশিক দাস কঙ্কন, ছাত্র গণমঞ্চের আহ্বায়ক নাসিম সরকার, ছাত্র ফেডারেশনের আহ্বায়ক আজাদ ইসলাম প্রমুখ।

স্বাস্থ্যসেবায় অবদান: জেলা পর্যায়ে শ্রেষ্ঠ পুরস্কার অর্জন এনা মানখিনের

 


এনা মানখিন। কাজ করছেন ময়নসিংহের হালুয়াঘাট উপজেলার পরিবার কল্যাণ সহকারী হিসেবে। প্রান্তিক সুবিধাবঞ্চিত মানুষের কাছে স্বাস্থ্যসেবা সহজে পৌঁছে দিতে অক্লান্ত কাজ করে যাচ্ছেন। যার ফলে গারো জনগোষ্ঠীর এই নারী ইতোমধ্যেই হয়ে উঠেছেন পরিচিত মুখ।

কাজের স্বীকৃতিস্বরূপ গত ১১ জুলাই বিশ্ব জনসংখ্যা দিবস উপলক্ষে পরিবার পরিকল্পনা মন্ত্রণালয় কর্তৃক ময়মনসিংহ জেলা পর্যায়ে শ্রেষ্ঠ পুরস্কার অর্জন করেছেন। পাশাপাশি বিভাগীয় পর্যায়েও দ্বিতীয় পুরস্কার লাভ করেন। পরিবার পরিকল্পনা ময়মনসিংহ বিভাগের পরিচালক মোহাম্মদ মতিউর রহমানের কাছ থেকে তিনি পুরস্কার গ্রহণ করেন।

এনা মানখিনের বাড়ি হালুয়াঘাট উপজেলার জয়রামকুড়া গ্রামে। পড়াশোনা করেছেন হালুয়াঘাট আদর্শ মহিলা ডিগ্রি কলেজে। পড়শোনা শেষে ২০১৮ সাল থেকে গ্রামের পিছিয়ে পড়া প্রান্তিক জনগোষ্ঠীর মাঝে স্বাস্থ্য সচেতনতা ও পরিবার পরিকল্পনার সেবা দিয়ে যাচ্ছেন। ভবিষৎতে সুবিধাবঞ্চিত মানুষের কাছে স্বাস্থ্যসেবা পৌঁছে দিতে নিরলসভাবে কাজ করে যেতে চান।  

তিনি মনে করেন, পরিবার পরিকল্পনা শুধু জন্মনিয়ন্ত্রণ নয়, এটি জনস্বাস্থ্য, অর্থনীতি ও নারীর ক্ষমতায়নের সঙ্গেও ওতোপ্রোতভাবে জড়িত। পরিকল্পিত পরিবার গঠন ও স্বাস্থ্য সচেতনতায় তরুণদের সম্পৃক্ত করা জরুরি।

এনা মানখিন ছাড়াও বিভাগ, জেলা ও উপজেলা পর্যায়ে বেসরকারি সংস্থা, সূর্যের হাসি ক্লিনিক ও সিবিডি (পরিবার পরিকল্পনা সমিতি) ভিত্তিক মোট ২৮ জন পুরস্কাপ্রাপ্ত হন। পুরস্কার প্রাপ্তদের মাঝে প্রধান অতিথিসহ অন্যান্য অতিথিরা সম্মাননা ক্রেস্ট তুলে দেন।  

খাগড়াছড়ি জেলা পরিষদের নতুন চেয়ারম্যান শেফালিকা ত্রিপুরা

 


খাগড়াছড়ি পার্বত্য জেলা পরিষদের নতুন চেয়ারম্যান হিসেবে নিয়োগ পেয়েছেন নারী উন্নয়নকর্মী শেফালিকা ত্রিপুরা। মঙ্গলবার পার্বত্য চট্টগ্রাম বিষয়ক মন্ত্রণালয়ের সিনিয়র সহকারী সচিব তাসলিমা বেগমের সই করা এক বিজ্ঞপ্তিতে এ নিদের্শনা দেওয়া হয়।

বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়, খাগড়াছড়ি পার্বত্য জেলা পরিষদ আইন, ১৯৮৯ এর ধারা ১৪ অনুযায়ী খাগড়াছড়ি পার্বত্য জেলা পরিষদের সদস্য শেফালিকা ত্রিপুরাকে পরবর্তী নির্দেশ না দেওয়া পর্যন্ত অস্থায়ী চেয়ারম্যান হিসাবে দায়িত্ব প্রদান করা হল।

এর আগে সোমবার দুর্নীতি ও অসদাচরণের অভিযোগে খাগড়াছড়ি জেলা পরিষদের চেয়ারম্যান জিরুনা ত্রিপুরাকে সকল প্রকার কার্যক্রম থেকে বিরত থাকার নির্দেশ দিয়ে বিজ্ঞপ্তি দেয় পার্বত্য চট্টগ্রাম বিষয়ক মন্ত্রণালয়।

বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়, খাগড়াছড়ি জেলা পরিষদের চেয়ারম্যান জিরুনা ত্রিপুরার বিরুদ্ধে ১৪ জন সদস্যকে অবমূল্যায়ন, খারাপ আচরণ, হস্তান্তরিত বিভাগের প্রধান ও কর্মচারীদের অবমূল্যায়ন, স্বেচ্ছাচারিতা, স্বজনপ্রীতি, ঘুষের বিনিময়ে শিক্ষক বদলি, ঠিকাদার বিলের ফাইল আটকে রেখে ঘুষ ও দুর্নীতির অভিযোগ দাখিল করা হয়। অভিযোগগুলো বর্তমানে তদন্তাধীন।

সেইসঙ্গে অভিযোগের বিষয়টি নিষ্পত্তি না হওয়া পর্যন্ত সব ধরনের কার্যক্রম থেকে তাকে বিরত থাকার নির্দেশ দেওয়া হয়েছে।

এদিকে, চেয়ারম্যান হিসেবে নিয়োগ পাওয়া পর তাৎক্ষণিক প্রতিক্রিয়ায় সকলের সহযোগিতা চেয়েছেন শেফালিকা ত্রিপুরা।

বিরিশিরি কালচারাল একাডেমির পরিচালক হলেন পরাগ রিছিল


 

বিরিশিরি ক্ষুদ্র নৃগোষ্ঠীর কালচারাল একাডেমির পরিচালক হিসেবে নিয়োগ পেয়েছেন কবি ও গবেষক পরাগ রিছিল। আজ মঙ্গলবার (৮ জুলাই), জনপ্রশাসন মন্ত্রণালয়ের উপসচিব আবু সালেহ মোঃ মাহফুজ আলম স্বাক্ষরিত এক প্রজ্ঞাপনে তাকে পরিচালক হিসেবে নিয়োগ দেয়া হয়।

আগে বিরিশিরি ক্ষুদ্র নৃগোষ্ঠীর কালচারাল একাডেমির পরিচালক ছিলেন সুজন হাজং। চলতি বছরের ২৬ এপ্রিল তাঁর চুক্তির মেয়াদ শেষ হবার পর দুর্গাপুর উপজেলার নির্বাহী অফিসার মোঃ নাভিদ রেজওয়ানুল কবীর একাডেমির পরিচালকের দায়িত্ব পালন করছিলেন।

অন্য যেকোনো পেশা, ব্যবসা কিংবা সরকারি, আধা-সরকারি, বেসরকারি প্রতিষ্ঠান/সংগঠন-এর সাথে কর্ম-সম্পর্ক পরিত্যাগের শর্তে যোগদানের তারিখ থেকে দুই বছর মেয়াদে পরিচালক পদে পরাগ রিছিলকে নিয়োগ দেয়া হয়।

পরাগ রিছিল একাধারে কবি, লেখক ও গবেষক। মান্দি জাতিসত্তার এ সংস্কৃতিজন জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয় থেকে সরকার ও রাজনীতিতে সম্মানসহ স্নাতকোত্তর সম্পন্ন করেছেন। ছাত্র জীবন থেকেই তিনি লেখালেখির সঙ্গে যুক্ত রয়েছেন। এ পর্যন্ত তাঁর প্রকাশিত বইয়ের সংখ্যা চার। তাঁর প্রথম কাব্যগ্রন্থ উম্মাচরণ কর্মকার। এছাড়াও ফুলগুলি ফুলকপির, খাবি এবং জুয়েল বিন জহিরের সাথে যৌথভাবে সাংসারেক মান্দিরাংনি ওয়ান্না নামে তাঁর গবেষণামূলক গ্রন্থ প্রকাশিত হয়েছে। 

© all rights reserved - Janajatir Kantho