জাতীয় লেবেলটি সহ পোস্টগুলি দেখানো হচ্ছে৷ সকল পোস্ট দেখান
জাতীয় লেবেলটি সহ পোস্টগুলি দেখানো হচ্ছে৷ সকল পোস্ট দেখান

‘এম এন লারমাই প্রথম আত্মপরিচয়ের রাজনীতিকে বৈজ্ঞানিকভাবে চিহ্নিত করেছিলেন’


মানবেন্দ্র নারায়ণ (এম এন) লারমাই প্রথম আত্মপরিচয়ের রাজনীতিকে বৈজ্ঞানিকভাবে চিহ্নিত করেছিলেন। তিনি প্রথম বাংলাদেশে কাঠামোগতভাবে আত্মপরিচয়ের রাজনীতিকে স্পষ্ট করেছেন। একটি বহুত্ববাদী রাষ্ট্রের ধারণা দিয়েছিলেন তিনি। বাঙালি হেজিমনির বিরুদ্ধে তিনি আইডেন্টিটির ন্যারেটিভটা বাঁচিয়ে রাখার জন্য তৎকালীন সময়ে জোড়ালো প্রতিবাদ করেছিলেন।

আজ সোমবার বিকেল ৩টায় রাজধানীর বিশ্বসাহিত্য কেন্দ্রে পার্বত্য চট্টগ্রাম জনসংহতি সমিতির (জেএসএস) নেতা সাবেক সংসদ সদস্য এম এন লারমার ৮৬তম জন্মবার্ষিকী উপলক্ষে আয়োজিত এক আলোচনা সভায় এসব কথা বলেন লেখক গবেষক পাভেল পার্থ।বিপ্লবী মানবেন্দ্র নারায়ণ লারমার ৮৬ম জন্মবার্ষিকী উদ্যাপন কমিটি আলোচনা সভার আয়োজন করে।

পাভেল পার্থ আরো বলেন, এম এন লারমা ছোটকাল থেকে কঠিন বাস্তবতার মধ্য দিয়ে বেড়ে উঠেছিলেন। ১৯৫৫-১৯৬৫ সালের মধ্যে তৈরি হওয়া বাইনারি বিভাজন পরবর্তীতে বাংলাদেশে সরকার কর্তৃক প্রতিষ্ঠিত হয়েছে। বাইনারি মনস্তত্ত্বকে এখনো এই দেশে টিকিয়ে রাখা হয়েছে।

জেএসএসের কেন্দ্রীয় সদস্য দীপায়ন খীসা বলেন, কাপ্তাই বাঁধ না করার বিরুদ্ধে প্রতিবাদ করতে গিয়েই ছাত্র এম এন লারমার প্রতিবাদী জীবন শুরু হয়। চব্বিশের গণঅভ্যুত্থানের পর যে বৈষম্যহীন, অন্তর্ভুক্তিমূলক বাংলাদেশের কথা বলা হচ্ছে, এম এন লারমা ১৯৭২ সালে বাংলাদেশের সংবিধান প্রণয়নকালেই এসব বিষয় নিয়ে জোরালো বক্তব্য দিয়েছিলেন।

দীপায়ন খীসা আরো বলেন, ‘সংবিধান সংস্কারের বিষয়ে সংবিধান সংস্কার কমিশন বা জাতীয় ঐকমত্য কমিশন কখনো আদিবাসী জাতিগোষ্ঠীর মানুষদের সঙ্গে সংলাপ করেনি। আমরাও এই দেশের অংশ। তাহলে আদিবাসী জাতিগোষ্ঠীর মানুষদের কেন কোনো সংলাপে অংশগ্রহণ করার জন্য আহ্বান জানানো হলো না?’ 

তিনি বলেন, চব্বিশের গণঅভ্যুত্থানে আদিবাসী জাতিগোষ্ঠীর মানুষদেরও অংশীদারত্ব আছে। কিন্তু অভ্যুত্থানপরবর্তী সময়ে তাদেরই ভুলে গেল এই সরকার।

সভাপতির বক্তব্যে পার্বত্য চট্টগ্রাম চুক্তি বাস্তবায়ন আন্দোলনের যুগ্ম সমন্বয়কারী জাকির হোসেন বলেন, ‘বাঙালি হয়ে যাওকথাটার পেছনে বাঙালি মুসলিমদের জাত্যভিমানের ব্যাপারটি রয়েছে। এম এন লারমা বাংলাদেশের মধ্যে থেকে নিজেদের অধিকার নিয়ে বেঁচে থাকার জন্য আন্দোলন শুরু করেছিলেন। সেই আন্দোলনের প্রেক্ষিতে পরবর্তীকালেপার্বত্য চট্টগ্রাম চুক্তিনামে একটি চুক্তি স্বাক্ষরিত হয়েছে।’

পার্বত্য চট্টগ্রাম পাহাড়ি ছাত্র পরিষদ (পিসিপি) ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় শাখার সাধারণ সম্পাদক শান্তিময় চাকমার সঞ্চালনায় আলোচনা সভায় অন্যদের মধ্যে বাংলাদেশ আদিবাসী ফোরামের অর্থ সম্পাদক মেইনথিন প্রমীলা, সাংবাদিক এহসান মাহমুদ, বাংলাদেশ মারমা স্টুডেন্টস কাউন্সিলের কেন্দ্রীয় কমিটির সাধারণ সম্পাদক অং শোয়ে সিং মারমা প্রমুখ বক্তব্য দেন।  

‘ডিজিটাইজেশন করা গেলে পার্বত্য চট্টগ্রামের ভূমি মালিকানার জটিলতা থাকবে না’

 


পার্বত্য চট্টগ্রামের ভূমি ব্যবস্থাপনা ডিজিটাইজেশন করতে পারলে ভূমির মালিকানা নিয়ে আর জটিলতা থাকবে না। কোনো মানুষকে হয়রানির শিকার হতে হবে না বলে মন্তব্য করেছেন পার্বত্য চট্টগ্রাম বিষয়ক মন্ত্রণালয়ের উপদেষ্টা সুপ্রদীপ চাকমা।

শনিবার (১৩ সেপ্টেম্বর) দুপুরে রাঙামাটি জেলা প্রশাসনের কার্যালয়ে অনুষ্ঠিতপার্বত্য জেলাসমূহের ভূমি ব্যবস্থাপনা ডিজিটালাইজেশন সংক্রান্তকর্মশালায় প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি কথা বলেন।

উপদেষ্টা সুপ্রদীপ চাকমা বলেছেন, পার্বত্য চট্টগ্রামে বিদ্যমান ভূমি সমস্যা সবাইকে সঙ্গে নিয়ে আলোচনার মাধ্যমে সমাধান করতে হবে। মানুষের জন্য ভূমি খুবই গুরুত্বপূর্ণ। ভূমি সমস্যা নিরসন হলে দেশ থেকে অর্ধেক সমস্যা দূর হয়ে যাবে। 

সুপ্রদীপ চাকমা আরো বলেনপাহাড়ে ভূমি জরিপের কাজ অত্যন্ত জরুরি। এছাড়া ভূমি কমিশনের কাজ অনেক দিন ধরে আটকে আছে। এটি সচল করতে বিধিমালা তৈরি করে দ্রুত কার্যক্রম শুরু করতে হবে। কাজ শুরু হলে অনেক ধরনের বাধা-বিপত্তি আসবে, তাই তা আলোচনা সমন্বয়ের মাধ্যমে এগিয়ে নিতে হবে। ভূমি ব্যবস্থাপনা ডিজিটাইজেশন হলে কেউ আর অন্য কারোর কাছে আমার জমি বিক্রি করতে পারবে না এবং ঘরে বসেই ভূমি সংক্রান্ত সব কাজ করা সম্ভব হবে। এতে সময় অর্থের অপচয়ও কমবে।

চট্টগ্রাম বিভাগের ভারপ্রাপ্ত বিভাগীয় কমিশনার মোহাম্মদ নূরুল্লাহ নূরীর সভাপতিত্বে অনুষ্ঠিত কর্মশালায় মন্ত্রণালয়ের সিনিয়র সচিব এস এম সালেহ আহমেদ, পার্বত্য চট্টগ্রাম উন্নয়ন বোর্ডের চেয়ারম্যান মেজর জেনারেল (অব.) অনুপ কুমার চাকমা, রাঙ্গামাটি পার্বত্য জেলা পরিষদ চেয়ারম্যান কৃষিবিদ কাজল তালুকদার, খাগড়াছড়ি জেলা পরিষদ চেয়ারম্যান শেফালিকা ত্রিপুরাসহ তিন পার্বত্য জেলার জেলা প্রশাসকগণ, হেডম্যান-কার্বারীগণ, সাংবাদিকসহ অন্যান্য কর্মকর্তারা উপস্থিত ছিলেন।

© all rights reserved - Janajatir Kantho