সংস্কৃতি লেবেলটি সহ পোস্টগুলি দেখানো হচ্ছে৷ সকল পোস্ট দেখান
সংস্কৃতি লেবেলটি সহ পোস্টগুলি দেখানো হচ্ছে৷ সকল পোস্ট দেখান

গারোদের দুয়াল গোত্রের ঐতিহ্যবাহী ‘ওয়াচি চুগান’ উৎসব পালন


 

ময়মনসিংহের ধোবাউড়ায় গারো জনগোষ্ঠীর অন্যতম দুয়াল গোত্রের ঐতিহ্যবাহী ওয়াচি চুগান উৎসব পালিত হয়েছে। 

শুক্রবার (৩ অক্টোবর), বিকেলে ধোবাউড়ার সীমান্তবর্তী দিঘলবাঘ গ্রামে বিরিশিরি কালচারাল একাডেমি এ উৎসবের আয়োজন করে। এতে বিভিন্ন শ্রেণীপেশার মানুষ অংশ নেয়। 

নতুন ফসল উৎসর্গ ও মৃতস্বজনদের স্মরণ অনুষ্ঠান হচ্ছে ওয়াচি চুগান। উৎসবে নয়াপাঁড়া, দিঘলবাঘ সহ আশেপাশে দুয়াল গোত্রের লোকজন অংশগ্রহণ করেন।

মায়া আরেং এর সঞ্চালনায় উৎসব আয়োজনে সভাপতিত্ব করেন লেখক ধীরেশ চিরান। এতে সমাজসেবায় স্বাধীনতা পুরস্কারপ্রাপ্ত লেখক ও সমাজসেক অরণ্য ই. চিরান, বিরিশিরি কালচারাল একাডেমির পরিচালক কবি পরাগ রিছিল, কবি মতেন্দ্র মানখিন, তুলি চিসিম সহ গারো জাতিগোষ্ঠীর সাংস্কৃতিক ব্যক্তিত্বরা উপস্থিত ছিলেন। 

গারো ভাষায় গল্প বলে জিতে নিন ২০ হাজার টাকা

 


আপনি কি নিজের ভাষায় (গারো) গল্প বলতে ভালোবাসেন? জাদুকরী সব শব্দমালায় মাতিয়ে তুলতে চান গল্পপ্রেমীদের? তাহলে ঢাকা ওয়ানগালার গল্প বলার প্রতিযোগিতার আয়োজন হতে পারে আপনার জন্যই।

ঢাকা ওয়ানগালা গারো জাতিগোষ্ঠীর ইতিহাস, ঐতিহ্য, লোককথা, সংস্কৃতিকে প্রাণবন্ত করে তুলতে AMBI-ATCHUNI KU'RANG শিরোনামে গল্প বলার প্রতিযোগিতার আয়োজন করেছে। এই প্রতিযোগিতায় দুটি ক্যাটাগরিতে তিন হাজার থেকে সর্বোচ্চ বিশ হাজার টাকা পর্যন্ত পুরস্কার দেওয়ার ঘোষণা দিয়েছেন আয়োজকেরা। 

প্রতিযোগিতার প্রথম ক্যাটাগরিতে প্রাইমারি ও হাইস্কুলে অধ্যয়নরত শিক্ষার্থীরা অংশগ্রহণ করতে পারবেন। এতে প্রথম পুরস্কার বিজয়ী দশ হাজার টাকা, দ্বিতীয় পুরস্কার বিজয়ী ছয় হাজার টাকা এবং তৃতীয় পুরস্কার বিজয়ী পাবেন তিন হাজার টাকা।  


দ্বিতীয় ক্যাটারিতে কলেজ, বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থী ও অন্যান্যরা অংশ নিতে পারবেন। এই ক্যাটাগরিতে বিজয়ী প্রথম পুরস্কার হিসেবে বিশ হাজার টাকা, দ্বিতীয় পুরস্কার পনেরো হাজার টাকা এবং তৃতীয় পুরস্কার পাঁচ হাজার টাকা পাবেন।

গারোদের ইতিহাস, ঐতিহ্য, সংস্কৃতি, পৌরাণিক কাহিনী নিয়ে গল্প বলা বলা যাবে। তবে গল্প অবশ্যই গারো ভাষায় (আবেং, আত্তং, চিবক, দুয়াল, মিগাম) বলতে হবে। আয়োজকদের সরবরাহকৃত লিঙ্ক কিংবা হোয়াটসঅ্যাপ নাম্বারে গল্প আগামী ৫ অক্টোবরের মধ্যে পাঠাতে হবে। 

গল্প বলা প্রতিযোগিতায় বিজয়ীরা আগামী ২৪ অক্টোবর বনানী বিদ্যানিকেতন স্কুল অ্যাণ্ড কলেজ মাঠ প্রাঙ্গণে অনুষ্ঠিতব্য ঢাকা ওয়ানগালায় গল্প বলার সুযোগ পাবেন। 

প্রতিযোগিতায় অংশগ্রহণের লিঙ্ক’সহ বিস্তারিত জানা যাবে Ambi-Atchuni Ku'rang নামের ফেইসবুক পেইজে। এছাড়াও এই লিঙ্কেও গল্প জমা দেয়া যাবে। লিঙ্ক https://shorturl.at/dAmFD

মধুপুরের জয়নাগাছায় রংচুগালার আয়োজন

 


টাঙ্গাইল মধুপুরের শালবন পরিবেষ্টিত গারো গ্রামগুলো মেতে উঠেছে রংচুগালা উৎসবে। ধরাতি, থানারবাইদ, বন্দোরিয়ার পর গতকাল শুক্রবার ( সেপ্টেম্বর) জয়নাগাছা গ্রামে রংচুগালার আনুষ্ঠানিকতা শুরু হয়। এই অনুষ্ঠান কয়েকদিন পর্যন্ত চলবে।

জয়নাগাছার সং নকমা অনন্ত নকরেকের বাড়ি থেকে রংচুগালা উৎসবের আনুষ্ঠানিকতা শুরু হয়। উৎসবে আমুয়া সহ অন্যান্য কৃত্যাদিতে পৌরহিত্য করেন খামাল জোসেন দিব্রা। এসময় মিদং খা (মৃত ব্যক্তির জন্য শস্য বীজ প্রদান) পর্বের আনুষ্ঠানিকতা সম্পন্ন করা হয়। মৃত ব্যক্তির আত্মীয়স্বজনেরা মিদং খিম্মায় বেঁধে উৎসর্গ করেন।

পরে ঘরে ঘরে ঘুরে জগতের সকলের মঙ্গল কামনায় মারাং গাল্লা অনুষ্ঠান করা হয়। এসময় দামা, আদুরি, রাং বাজিয়ে মিল্লাম স্ফী হাতে খামাল গ্রিকা (যুদ্ধ নৃত্য প্রদর্শন) করেন।  

জয়নাগাছা গ্রামের বাসিন্দা কাজল চিসিম জনজাতির কণ্ঠকে বলেন, ‘মন্দ কোনো কিছু যেন অনিষ্ট সাধন করতে না পারে সেজন্য মারাং গাল্লা করা হয়। গতকাল ১২টি ঘরে এই অনুষ্ঠান করা হয়। এই অনুষ্ঠানের পরপরই বৃষ্টি হচ্ছে। ধীরে ধীরে গ্রামের বাকি পরিবারগুলোতে মারাং গাল্লা করা হবে। 

রংচুগালার বিষয়ে জানতে চাইলে সাংসারেক মতাদর্শে বিশ্বাসী জেসি দালবত বলেন, ‘সাংসারেক ধর্ম অনুসারীদের প্রধান দুটি উৎসব রংচুগালা ওয়ানগালা। সাংসারেক মান্দিদের বিশ্বাস প্রকৃতি নির্ভর। জীবনধারনের জন্য প্রকৃতির যে কয়টি অপরিহার্য শক্তি রয়েছে, যেগুলো ছাড়া শুধু মানব জীবন নয়, কোন প্রাণ বা জীবের টিকে থাকা সম্ভব নয়; সেইসব প্রাকৃতিক শক্তিকে নিজেদের রক্ষাকর্তা দেবতা হিসাবে পূজা করতো এবং নিজেদের পালনকর্তা হিসাবে মেনে চলতো। সাংসারেকরা প্রকৃতির সাথে সহাবস্থান সহমর্মিতাকে প্রাধান্য দিয়ে থাকে, প্রকৃতির কাছে ক্ষমাপ্রার্থনা অনুগত থাকার অনুষ্ঠান হল রংচুগালা।

জেসি দালবত আরো বলেন, ‘সাংসারেকদের বিশ্বাস বাগুবা বরম্বির চিফাংপাকসা (গর্ভ) থেকে পৃথিবীর সকল প্রাণের জন্ম। তাই তারা তাদের খাদ্যশস্য উৎপাদনের বিভিন্ন কার্যক্রমের সময় যেসব প্রাণ প্রকৃতির ক্ষতিসাধন করে যেসব প্রাণীকূলের জীবন বিনষ্ট করে তার জন্য রংচুগালার মাধ্যমে প্রাণ প্রকৃতির কাছে ক্ষমাপ্রার্থনা চেয়ে নিজেদের অনুগত স্বীকার করে অনুষ্ঠানটি করা হয়।

বিরিশিরি কালচারাল একাডেমির পরিচালক হলেন পরাগ রিছিল


 

বিরিশিরি ক্ষুদ্র নৃগোষ্ঠীর কালচারাল একাডেমির পরিচালক হিসেবে নিয়োগ পেয়েছেন কবি ও গবেষক পরাগ রিছিল। আজ মঙ্গলবার (৮ জুলাই), জনপ্রশাসন মন্ত্রণালয়ের উপসচিব আবু সালেহ মোঃ মাহফুজ আলম স্বাক্ষরিত এক প্রজ্ঞাপনে তাকে পরিচালক হিসেবে নিয়োগ দেয়া হয়।

আগে বিরিশিরি ক্ষুদ্র নৃগোষ্ঠীর কালচারাল একাডেমির পরিচালক ছিলেন সুজন হাজং। চলতি বছরের ২৬ এপ্রিল তাঁর চুক্তির মেয়াদ শেষ হবার পর দুর্গাপুর উপজেলার নির্বাহী অফিসার মোঃ নাভিদ রেজওয়ানুল কবীর একাডেমির পরিচালকের দায়িত্ব পালন করছিলেন।

অন্য যেকোনো পেশা, ব্যবসা কিংবা সরকারি, আধা-সরকারি, বেসরকারি প্রতিষ্ঠান/সংগঠন-এর সাথে কর্ম-সম্পর্ক পরিত্যাগের শর্তে যোগদানের তারিখ থেকে দুই বছর মেয়াদে পরিচালক পদে পরাগ রিছিলকে নিয়োগ দেয়া হয়।

পরাগ রিছিল একাধারে কবি, লেখক ও গবেষক। মান্দি জাতিসত্তার এ সংস্কৃতিজন জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয় থেকে সরকার ও রাজনীতিতে সম্মানসহ স্নাতকোত্তর সম্পন্ন করেছেন। ছাত্র জীবন থেকেই তিনি লেখালেখির সঙ্গে যুক্ত রয়েছেন। এ পর্যন্ত তাঁর প্রকাশিত বইয়ের সংখ্যা চার। তাঁর প্রথম কাব্যগ্রন্থ উম্মাচরণ কর্মকার। এছাড়াও ফুলগুলি ফুলকপির, খাবি এবং জুয়েল বিন জহিরের সাথে যৌথভাবে সাংসারেক মান্দিরাংনি ওয়ান্না নামে তাঁর গবেষণামূলক গ্রন্থ প্রকাশিত হয়েছে। 

কবি সুবর্ণা পলি দ্রং’র প্রথম কাব্যগ্রন্থের পাঠ উন্মোচন

 


গারো জাতিসত্তার কবি লেখক সুবর্ণা পলি দ্রং এর প্রথম কাব্যগ্রন্থপরিযায়ী পাখি পাঠ উন্মোচন হয়েছে। শুক্রবার (৩০ মে), বিকেলে কমিউনিটি ট্রাস্ট ময়মনসিংহ ফোরাম হল রুমে পাঠ উন্মোচন হয়।

থকবিরিম প্রকাশনী বাংলাদেশ আচিক সাহিত্য-সাংস্কৃতিক সংসদ যৌথভাবে পাঠ উন্মোচন অনুষ্ঠানের আয়োজন করে। আবৃত্তিকার মোহাম্মদ আসাদুজ্জামান রুবেলের সঞ্চালনায় অনুষ্ঠানে সভাপতিত্ব করেন বাংলাদেশ আচিক সাহিত্য-সাংস্কৃতিক সংসদের সভাপতি অরণ্য চিরান (স্বাধীনতা পদকপ্রাপ্ত)

আলোচক হিসেবে কবি আবু সাইদ কামাল, কবি মিজানুর রহমান টিটু, কবি মিঠুন রাকসাম, সালেসিয়ান সিস্টার্স নার্সিং কলেজের অধ্যক্ষ সিস্টার লিয়া দ্রং উপস্থিত ছিলেন। এসময় আলোচনা কবিতা পাঠের মধ্য দিয়ে অনেকেই কবিকে উৎসাহ যুগিয়েছেন।

পরিযায়ী পাখি কাব্যগ্রন্থটির প্রকাশনী থকবিরিম।

সুবর্ণা পলি দ্রং গারো জাতিসত্তার লিখিয়েদের মধ্যে অন্যতম একজন। তিনি শৈশবকাল থেকেই লেখালেখি করেন। প্রথমে তার কবিতা লেখালেখির প্রতি ঝোঁক থাকলেও পরে তিনি ছোটগল্প লেখার দিকে মনোযোগ দেন। এখন পর্যন্ত বিভিন্ন পত্রিকা, ম্যাগাজিন, ছোট কাগজে কবিতা সহ তার লেখা অনেক কিছুই ছাপা হয়েছে।

বুনোফুল তাঁর প্রথম প্রকাশিত গ্রন্থ। ২০১৭ সালের অমর একুশে গ্রন্থমেলায় বইটি প্রথম প্রকাশিত হয়। বর্তমানে তিনি শান্তি মিত্র সমাজকল্যাণ সংস্থার নির্বাহী পরিচালক হিসেবে কর্মরত আছেন। ইতিমধ্যে তিনি অনেকগুলো দেশ ভ্রমণ করেছেন। 

© all rights reserved - Janajatir Kantho