সংস্কৃতি লেবেলটি সহ পোস্টগুলি দেখানো হচ্ছে৷ সকল পোস্ট দেখান
সংস্কৃতি লেবেলটি সহ পোস্টগুলি দেখানো হচ্ছে৷ সকল পোস্ট দেখান

মাহালি ভাষায় প্রথম বই প্রকাশ করলো আইইউবি

 


মাহালি ভাষায় প্রথমবারের মত প্রকাশিত হল বই। বইটির নাম মাহালি ভয়েসেস। গতকাল বুধবার ইনডিপেনডেন্ট ইউনিভার্সিটির ডিএমকে লেকচার গ্যালারিতে প্রকাশনা অনুষ্ঠানে বইটির মোড়ক উন্মোচন করা হয়।

আইইউবির উদ্যোগে প্রকাশিত বইটিতে ৩০টি লোককাহিনি, ২৪টি কবিতা বাংলা, ইংরেজি রোমান অক্ষরে লিপিবদ্ধ হয়েছে। প্রকাশনা অনুষ্ঠানে মাহালি ভাষা রক্ষার দাবি জানান মাহালি জনগোষ্ঠীর প্রতিনিধিরা।

অনুষ্ঠানে ইউনেস্কো গ্লোবাল টাস্কফোর্স সদস্য সমর সরেন বলেন, বইপত্রে আমরা ভাষাগুলোকে যেভাবে টেকাতে পারি এর চাইতে বেশি ভাষা সংরক্ষণ করে আদিবাসীদের জলাশয় গাছ। একটি জলাশয় সে সমস্ত কমিউনিটির একটি ইউনিভার্সিটি। কারণ সেই জলাশয়ে যে গাছগুলো হয়, সেখানে তাদের ভাষায় বিভিন্ন গাছের নাম থাকে। পাখির নাম থাকে। সেই ভাষাতেই তাদের নলেজ ট্রান্সফরমেশন হয়।

মাহালি ভাষার কবি সিষ্টি টুডু বলেন, ভাষাটি পুঁথিগত; ধরে রাখার যে ব্যবস্থা করেছেন তার জন্য আমি অন্তর থেকে আপনাদেরকে ধন্যবাদ জ্ঞাপন করছি।

গবেষকরা বলেন, মাহালি ভাষার নিজস্ব কোনো লিপি বা বর্ণমালা নেই। তাই রোমান অক্ষরে মাহালি ভাষার গল্প কবিতা লিপিবদ্ধ করা হয়েছে। পাশাপাশি বাংলা ইংরেজি ভাষায় সংকলিত হয়েছে।

আইইউবির স্কুল অব লিবারাল আর্টস অ্যান্ড সোশাল সায়েন্সের ডিন . বখতিয়ার আহমেদ বলেন, যে ভাষাগুলি বিপদাপন্ন, যে ভাষাগুলির অস্তিত্বগত সংকট আছে সেগুলোর সাহিত্য, তার ভাষা ভাষার যে নথিকরণ; এই সমস্ত কিছুর মধ্য দিয়ে আসলে ভাষাটাকে বেঁচে থাকার প্রাণশক্তি যোগানোর জন্য এই বই।

মুন্ডা জনজাতির অন্তর্গত মাহালি জনগোষ্ঠীর মুখের ভাষাও মাহালি। চাকরি, পড়াশোনা, সামাজিক যোগাযোগের সুবিধা সহ নানা কারণে  জনগোষ্ঠীর মুখের ভাষা এখন ঝুঁকিতে। চর্চার অভাবে বিলুপ্তির মুখে মাহালে ভাষা। তাই এই ভাষার রক্ষায় সরকারি বেসরকারি উদ্যোগ নেওয়ার তাগিদ গবেষকদের।   

গারো ভাষায় গল্প বলা প্রতিযোগিতায় বিজয়ী হলেন যারা



গারো ভাষায় গল্প বলা প্রতিযোগিতায় বিজয়ীদের নাম ঘোষণা করা হয়েছে। শুক্রবার (২৪ অক্টোবর) বনানী বিদ্যানিকেতন স্কুল অ্যান্ড কলেজ মাঠ প্রাঙ্গণে অনুষ্ঠিত ঢাকা ওয়ানগালা আয়োজনে বিজয়ীদের নাম ঘোষণা করা হয়। অসংখ্য অংশগ্রহণকারীদের মধ্যে তিনটি ক্যাটাগরিতে মোট ১৩ জন প্রতিযোগিতায় বিজয়ী হন

গারো জাতিসত্তার লোককাহিনী, সংস্কৃতি, ঐতিহ্য, ইতিহাসকে নতুন প্রজন্মের কাছে প্রাণবন্ত করে তুলতে AMBI-ATCHUNI KU'RANG শিরোনামে কালচারাল সারভাইভালের সহায়তায় ঢাকা ওয়ানগালা এ প্রতিযোগিতার আয়োজন করে।

এতে (প্রাইমারি) ক্যাটাগরিতে ম্যাক্সওয়েল নকরেক চ্যাম্পিয়ন হন। তাঁর গল্পের শিরোনাম টটেং। এছাড়াও প্রথম রানারআপ হন প্রাচ্য নকরেক (Kangining Dokru aroba Adasani golpo) ও দ্বিতীয় রানারআপ রুদ্র মারাক (Matcha aro rakkuwal)

বি ক্যাটাগরিতে (হাইস্কুল) চ্যাম্পিয়ন হন ঐশ্বরিয়া নকরেক। তাঁর গল্পের শিরোনাম Raani ni Sak'gittam Depaanthe thikana. এছাড়াও একই ক্যাটাগরিতে প্রথম রানারআপ সেংরাক দারু (Mangsinani Achiani Golpo), দ্বিতীয় রানারআপ সিলভিয়া নকরেক (Noshi dumsi anal gunal), তৃতীয় রানারআপ এস্টার চিসিম (Matchadu-Matchabet), চতুর্থ রানারআপ বঞ্চি মৃ (Mikkol)।

সি ক্যাটাগরিতে (জেনারেল) চ্যাম্পিয়ন হন জাদ্রি মানখিন। তাঁর গল্পের নাম মিদ্দাই থাৎতা। একই ক্যাটাগরিতে প্রথম রানারআপ হন এস্টিয়ার স্টিফেন মৃ (Megam Gairipa), দ্বিতীয় রানারআপ শ্রেয়া চিসিম (Matchadu-Matchabet – Folk), তৃতীয় রানারআপ রানিয়া সাংমা (Sangma Marak Susani), চতুর্থ রানারআপ প্রত্যয় নাফাক (Matchadu Matchabet)।  

ঢাকা ওয়ানগালার নকমা সঞ্চয় নাফাক, যুগ্ম কর কমিশনার কর্ণেলিউস কামা, বাংলাদেশ ব্যাংকের ডেপুটি ডিরেক্টর দীপংকর রিছিল, সাবেক নকমা অন্তর মানখিন, অর্পিত দাংগ, কারিতাস বাংলাদেশের প্রোগ্রাম ডিরেক্টর অপূর্ব ম্রং প্রমুখ বিজয়ীদের মাঝে পুরস্কার তুলে দেন। 

কাল বনানী বিদ্যানিকেতন স্কুল মাঠে ঢাকা ওয়ানগালা

 


প্রতিবছরের মত এবারো ঢাকায় অনুষ্ঠিত হচ্ছে গারো জনগোষ্ঠীর প্রাণের উৎসব ওয়ানগালা। আগামীকাল শুক্রবার (২৪ অক্টোবর), রাজধানীর বনানী বিদ্যানিকেতন স্কুল অ্যান্ড কলেজ মাঠ প্রাঙ্গণে মহা সমারোহে দিনব্যাপী এই উৎসব অনুষ্ঠিত হবে। ইতোমধ্যেই প্রায় সব ধরণের প্রস্তুতি সেরে ফেলেছেন আয়োজকেরা।  

সকালে সাসাত সওয়া, ফসল উৎসর্গ, আমুয়া, কালারফুল প্রশেসন ইত্যাদির মাধ্যমে উৎসবের সূচনা হবে। পরে গোরেরোয়া, জুম নৃত্য ও মনোজ্ঞ সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠানের আয়োজন করা হয়েছে। এবারের ঢাকা ওয়ানগালার নকমা সঞ্চয় নাফাক ও নকমিচিক ললিতা ম্রং। উৎসবে প্রধান অতিথি হিসেবে বাংলাদেশ জাতীয়তাবাদী দলের (বিএনপি) মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীরের উপস্থিত থাকার কথা রয়েছে।

এছাড়াও বিশেষ অতিথি হিসেবে বিএনপির যুগ্ম মহাসচিব সৈয়দ এমরান সালেহ প্রিন্স, প্রেসিডেন্সী ইউনিভার্টিসটির উপাচার্য (ভারপ্রাপ্ত) অধ্যাপক এএইচএম ফারুক, বাংলাদেশ স্টেশনারি অফিসের উপ-পরিচালক ব্রেনজন চাম্বুগং, যুগ্ম কর কমিশনার কর্ণেলিউস কামা, বিরিশিরি কালচারাল একাডেমির পরিচালক পরাগ রিছিল প্রমুখ উপস্থিত থাকবেন।

আয়োজকদের সঙ্গে কথা বলে জানা গেছে, প্রায় ১৮ বছর ধরে বৃহত্তর গুলশান কালাচাঁদপুর এলাকায় বসবাসরত গারো জনগোষ্ঠী ওয়ানগালা আয়োজন করছেন। উৎসবের প্রায় তিন মাস আগে থেকেই চলে নানান সাংস্কৃতিক প্রস্তুতি। ওয়ানগালা সংস্কৃতি রক্ষা চর্চার এই উদ্যোগ গারো জাতিসত্তাকে আলাদা করে; স্বতন্ত্রতা এনে দেয়। ওয়ানগালা প্ল্যাটফর্মের মাধ্যমে আগামী দিনে গারো জনগোষ্ঠী আরো ঐক্যবদ্ধ হবার প্রয়াস পাবে বলেই মনে করেন সংশ্লিষ্টরা।

সাংস্কৃতিক পুনর্জাগরণে চুনিয়ায় থকবিরিমের ওয়ানগালা আয়োজন, হাইব্রিড বলছেন সাংসারেকরা

 


অক্টোবর থেকে ডিসেম্বরগারো জাতিগোষ্ঠীর ধর্মীয় সামাজিক উৎসব ওয়ানগালা আয়োজনের মৌসুম। কৃষিবর্ষ চক্রের এই সময়ে শস্য দেবতা মিসি সালজংএর সম্মানার্থে সাংসারেক অনুসারীরা ওয়ানগালা উৎসব করে থাকে। বর্তমানে গারোদের প্রায় নব্বই শতাংশ খ্রিষ্টান ধর্মানুসারী হলেও গারো সংস্কৃতিজনেরা সাধারণভাবে সামাজিকতা আদি সংস্কৃতি চর্চার প্রবণতা বৃদ্ধির উদ্দেশ্যে ওয়ানগালা আয়োজন করে।  

যার প্রেক্ষিতে ঝিমিয়ে পড়া গারো সংস্কৃতির পুনর্জাগরণ শেকড়ের সাথে নতুন প্রজন্মের মেলবন্ধন ঘটাতে সম্প্রতি (১৬ থেকে ১৮ অক্টোবর) ওয়ানগালা উৎসবের আয়োজন করে থকবিরিম। টাঙ্গাইল মধুপুরের শালবন পরিবেষ্টিত চুনিয়া বনানী আচিক (গারো সাংস্কৃতিক) ক্লাব মাঠে ঘরোয়া পরিবেশে এই ওয়ানগালা হয়। তিনদিনব্যাপী আয়োজিত এই উৎসবে চুনিয়া ছাড়াও আশেপাশের পীরগাছা, জয়নাগাছা, নয়নপুর, সাইনামারী প্রভৃতি গ্রামের গারো জনগোষ্ঠী স্বতঃস্ফূর্তভাবে অংশ নেন। ঢাকা, ময়মনসিংহ, নেত্রকোনাসহ বিভিন্ন জায়গা থেকেও সংস্কৃতিজনেরা উৎসবে সামিল হন।

আয়োজক কমিটির প্রধান কবি  লেখক মিঠুন রাকসাম। আয়োজন সম্পর্কে জনজাতির কন্ঠকে তিনি বলেন, ‘এই ওয়ানগালা আয়োজনে আদি রীতির ফ্লেবার দেবার চেষ্টা করা হয়েছে। আমরা কোন ধরণের সাউন্ড সিস্টেমের ব্যবহার কিংবা আলাদা মঞ্চের ব্যবস্থা করিনি। বরং আচিক ফাগিচ্চামদের মত অঙ্গারি তৈরী করে সেটিকেই প্রাধান্য দেওয়া হয়েছে।

ওয়ানগালা আয়োজনে গারোদের পাশাপাশি বাঙালি সংস্কৃতিজনদের অংশগ্রহণ ছিল চোখে পড়ার মত। বিষয়টি নিয়ে কবি মিঠুন রাকসাম বলেন, ‘স্বরণকালের ইতিহাসে ওয়ানগালা উৎসবে এমন সংখ্যক ভিন্ন জাতিগোষ্ঠীর লোকজন (বাঙালি) অংশগ্রহণ করেনি। ভূমি মন্ত্রণালয়ের উপসচিব কায়সার মুহাম্মদ মঈনুল হাসান, বাংলা একাডেমির পরিচালক সরকার আমিন, সাংবাদিক শাহনাজ মুন্নী, নাগরিক উদ্যোগের জাকির হোসেন, গবেষক পাভেল পার্থ ছাড়াও জাহাঙ্গীরনগর, নেত্রকোনা বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষক, বাংলাদেশ টেলিভিশনের (বিটিভি) প্রোগ্রাম ডিরেক্টর, জাতীয় কবি কাজী নজরুল ইসলাম বিশ্ববিদ্যালয়ের একঝাঁক শিক্ষক সহ তরুণ কবি, সাহিত্যিক, গবেষকদের প্রায় ৫০-৬০ জন উপস্থিত ছিলেন। যারা দারুণ ওয়ানগালা উপভোগ করেছেন। 

তিনদিনব্যাপী ওয়ানগালা আয়োজনে যা যা ছিল

উৎসবে আজিয়া, রে রে, দামা দক্কা, আদুরি শিক্কা, চাম্বিল মেশা, গ্রিকা, সেরা চু মান্থি প্রতিযোগিতার আয়োজন নতুন মাত্রা যুক্ত করে। পার্শ্ববর্তী নয়নপুর গ্রাম থেকে বিচিত্রা ম্রং এর সেরেজিং টিম, সাইনামারির আজিয়া শিল্পীরা অংশ নেন। গারো নারীদের পাশাপাশি বাঙালি নারীরাও রাং, আদুরি, দামার সম্মিলিত দিমচেং দিমচেং তালে নৃত্যে মেতে উঠেন; ক্যামেরায় ধরা পড়েন মোহিনী রূপে।

চুনিয়া ওয়ানগালায় ভিন্ন জাতিগোষ্ঠীর তরুণীদের নৃত্য। ছবি: ফেইসবুক

এছাড়াও গারো বীর উৎপল নকরেককে বিশেষ সম্মাননা মধুপুর ইকোপার্ক বিরোধী আন্দোলনে শহীদ পীরেন স্নালকে দেওয়া হয় মরণোত্তর সম্মাননা। সংস্কৃতিতে বিশেষ অবদান রাখায় দুইজন মহীয়সী নারীকে থকবিরিমের তরফ থেকে দেওয়া হয় সম্মাননা। সম্মাননা প্রাপ্তরা হলেনকইয়নী মৃ মোনালিসা সাংমা।  

আগামীতেও ধরণের ওয়ানগালা আয়োজন করা হবে কিনা জানতে চাইলে কবি মিঠুন রাকসাম জানান বিষয়ে এখনো সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়নি। চুনিয়াবাসী সহ আমরা সবাই মিলে সম্মিলিতভাবে সিদ্ধান্ত নিবো। তবে এবারের ওয়ানগালা আয়োজনে চুনিয়াবাসী সহ আশেপাশের গ্রামের লোকজন যেভাবে সহযোগিতা করেছেন তা এক কথায় অভূতপূর্ব। তাদের সবার সহযোগিতায় ওয়ানগালা আয়োজন সফল হয়েছে।

থকবিরিমের ওয়ানগালা কেন এত আলোচনায়

চুনিয়া ওয়ানগালায় ভিন্ন সংস্কৃতি, ভিন্ন ধর্মানুসারী মানুষদের অংশগ্রহণ যেমন বৈচিত্র্যের দিককে সামনে এনেছে তেমনি তাদের দকমান্দা দকশাড়ি পরিহিতা ছবি নৃত্যগীত সোশ্যাল মিডিয়ায় বেশ বিতর্কের সৃষ্টি করেছে। বিশেষত সাংসারেক কমিউনিটির মাঝে নিয়ে আলোচনা হচ্ছে সবচেয়ে বেশি। তাদের কেউ কেউ বলছেন, বাইরের লোকেদের এনে, তাদের অর্থায়নে ওয়ানগালা উদযাপন উৎসবের প্রকৃত বার্তা বা উদ্দেশ্যেকে ম্রীয়মান করে তুলেছে।  

বিষয়টি নিয়ে কঠোর সমালোচনা করেছেন সাংসারেক শীতল স্নাল। তিনি জনজাতির কণ্ঠকে বলেন, ‘থকবিরিমের এই ওয়ান্না নিঃসন্দেহে হাইব্রিড ওয়ানগালা। এটি পৃষ্ঠপোষকদের মনোরঞ্জনের এবং তাদের দেওয়া অর্থ হালাল করার জন্য এই ওয়ান্নার আয়োজন করা হয়েছে। এখানে মান্দি জনজীবনের যে আদিমতা উঠে আসার কথা ছিল তা উঠে আসেনি। থকবিরিমের ওয়ান্না দেখে মনে হল মঞ্চে কোন নাটক দেখছি এক কথায় ওয়ান্নাকে মঞ্চস্থ করা হয়েছে।

সাংসারেক শীতল স্নাল। ছবি: সংগৃহীত

এই ওয়ানগালা আয়োজনে আদি রীতি কতটুকু অনুসরণ করা হয়েছে প্রশ্নের জবাবে শীতল স্নাল বলেন, ‘সাংসারেকদের নিয়মে ওয়ান্না বা ওয়ানগালা করতে হলে প্রথমেই কিছু প্রস্তুতিমূলক কার্য সম্পাদন করতে হয়, যা তারা করেনি। যেমন রংচুগালা, খুমানসিয়া ওয়ালদুখা ইত্যাদি। সং নকমা ছাড়া কোনোভাবেই ওয়ানগালার আয়োজন করা যায় না যেহেতু চুনিয়া গ্রামে সং নকমা বর্তমান রয়েছে। সং নকমার অনুপস্থিতি আমাদের জন্য একটা গভীর বার্তা দিয়ে যায় সেটা আমাদের উপলব্ধি করতে হবে। এইভাবে নিয়মের বালাই না রেখে এই ধরনের আয়োজন করাকে আমি নিরুৎসাহিত করি। 

চুনিয়ার ওয়ান্নাতে ভিন্ন জাতিগোষ্ঠীর অংশগ্রহণ নিয়ে শঙ্কা প্রকাশ করে তিনি আরো বলেন, ‘ওয়ানগালার মাধ্যমে ট্যুরিস্টদের আকৃষ্ট করতে বা ওয়ানগালাকে বাণিজ্যিক রূপ দেওয়ার কোন প্রশ্নই আসতে পারে না; যেহেতু এটা সাংসারেকদের ধর্মীয়, সামাজিক এবং সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠান। কিন্তু চুনিয়ার ওয়ান্নাতে এটা স্পষ্ট যে, ওয়ান্নাকে পর্যটন এবং বাণিজ্যিকীকরণের হীন চেষ্টা চালানো হয়েছে। আপনারা এটাও দেখতে পেয়েছেন যে এখানে কিছু অসুস্থ প্রতিযোগিতারও আয়োজন করা হয়েছিল।

চুনিয়া গ্রামের যুবক শাওন রুগা বলেন, ‘আমি যদি খ্রিস্টান হই, আমি যেমন হিন্দু-সনাতনীদের পূজা আয়োজন করে উদযাপন করতে পারি না, ঠিক তেমনই সাংসারেক ধর্মাবলম্বীদের ওয়ান্নাও জাতিগত সংস্কৃতি রক্ষা বিস্তারের নামে আয়োজন করে উদযাপন করতে পারি না। যদি করিতা হবে ধর্মীয় শিষ্টাচার পরিপন্থী বা আইনত ধর্মীয় অনুভূতিতে আঘাত সমতুল্য অপরাধ। 

© all rights reserved - Janajatir Kantho