রাজনীতি লেবেলটি সহ পোস্টগুলি দেখানো হচ্ছে৷ সকল পোস্ট দেখান
রাজনীতি লেবেলটি সহ পোস্টগুলি দেখানো হচ্ছে৷ সকল পোস্ট দেখান

বাহাছাসের নতুন সভাপতি অন্তর হাজং, সম্পাদক শ্রীবন

 


বাংলাদেশ হাজং ছাত্র সংগঠনের (বাহাছাস) কেন্দ্রীয় কমিটির নতুন সভাপতি হিসেবে অন্তর হাজং সাধারণ সম্পাদক শ্রীবন হাজং অক্ষয় নির্বাচিত হয়েছেন। শুক্রবার (১৩ জুন) রাতে নেত্রকোনা দুর্গাপুরের বিরিশিরি কালচারাল একাডেমি হলরুমে অনুষ্ঠিত বাহাছাসের নবম জাতীয় সম্মেলনে তারা নির্বাচিত হন।

দিনব্যাপী এই দ্বিবার্ষিক সম্মেলনের সূচনা হয় সকালেই। উদ্বোধন করেন হাজং জাতিসত্তার বিশিষ্ট লেখক গবেষক মতিলাল হাজং। সম্মেলনের প্রতিপাদ্য ছিল, ‘কালজয়ী সংগ্রামী ঐতিহ্যই আমাদের একবিংশ শতাব্দীর প্রেরণা

আলোচনা পর্বে সভাপতিত্ব করেন সংগঠনের বিদায়ী সভাপতি জিতেন্দ্র হাজং। সঞ্চালনায় ছিলেন সাধারণ সম্পাদক আশীষ হাজং যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক প্রিজম হাজং। স্বাগত বক্তব্য দেন সম্মেলন প্রস্তুতি কমিটির আহ্বায়ক অন্তর হাজং। প্রধান অতিথি হিসেবে বক্তব্য দেন দুর্গাপুরের ভারপ্রাপ্ত উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা মো. মোস্তাফিজুর রহমান।

আলোচনা সভায় অন্যানের মধ্যে বাংলাদেশ জাতীয় হাজং ছাত্র সংগঠনের প্রতিষ্ঠাতা আহ্বায়ক শরদিন্দু সরকার স্বপন হাজং, বাংলাদেশ জাতীয় হাজং সংগঠনের সভাপতি পল্টন হাজং সাধারণ সম্পাদক নয়ন হাজং, হাজং যুব সংগঠনের সভাপতি বিপুল হাজং, নারী নেত্রী সন্ধ্যা রানী হাজং  মানবাধিকারকর্মী রিপন চন্দ্র বানাই প্রমুখ বক্তব্য রাখেন।

আলোচনা সভা শেষে হাজং শিল্পীরা নিজেদের সংস্কৃতি তুলে ধরে নৃত্য সংগীত পরিবেশন করেন।

আগামী ১৩ জুন বাহাছাস’র জাতীয় ছাত্র সম্মেলন

 


আগামী ১৩ জুন (শুক্রবার) বাংলাদেশ হাজং ছাত্র সংগঠনের (বাহাছাস) নবম জাতীয় ছাত্র সম্মেলন ও কাউন্সিল অনুষ্ঠিত হবে। সংগঠনটির কেন্দ্রীয় সাধারণ সম্পাদক আশীষ হাজং সূত্রে এই তথ্য জানা গেছে।  

নেত্রকোনা দুর্গাপুরের বিরিশিরি কালচারাল একাডেমি প্রাঙ্গণে হবে এই সম্মেলন। বাহাছাসের এবারের জাতীয় ছাত্র সম্মেলনের মূলসুর ‘কালজয়ী সংগ্রামী ঐতিহ্যই আমাদের একবিংশ শতাব্দীর প্রেরণা’। সম্মেলনের উদ্বোধন করবেন বিশিষ্ট হাজং লেখক ও গবেষক মতিলাল হাজং।

সংগঠনটির কেন্দ্রীয় সভাপতি জিতেন্দ্র হাজংয়ের সভাপতিত্বে সম্মেলনে প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত থাকবার কথা রয়েছে দুর্গাপুর উপজেলা নির্বাহী অফিসার মোহাম্মদ নাভিদ রেজওয়ানুল কবীরের। এছাড়াও বিশেষ অতিথি হিসেবে বাহাছাসের প্রতিষ্ঠাতা শরদিন্দু সরকার স্বপন হাজং, দুর্গাপুর উপজেলার সহকারী কমিশনার (ভূমি) মোহাম্মদ মোস্তাফিজুর রহমান, বাংলাদেশ জাতীয় হাজং সংগঠনের সভাপতি পল্টন হাজং, বাংলাদেশ আদিবাসী ফোরামের কার্যনির্বাহী সদস্য রিপন চন্দ্র বানাই, বাংলাদেশ হাজং যুব সংগঠনের সভাপতি বিপুল হাজং প্রমুখ উপস্থিত থাকবেন।

বাংলাদেশে বসবাসরত আদিবাসীদের অধিকার আদায় সহ নিজস্ব জাতিত্ববোধ লালন করা কিছু শিক্ষিত তরুণ-তরুণীদের দ্বারা ১৯৮৮ সালে প্রতিষ্ঠিত হয় বাংলাদেশ হাজং ছাত্র সংগঠন (বাহাছাস)। প্রতিষ্ঠার পর থেকেই সংগঠনটি হাজং জাতিসত্তার আত্মপরিচয়, অধিকার আদায় ও সংস্কৃতি রক্ষার লড়াইয়ে কাজ করে চলেছে।

লালসাংময় বমের মৃত্যুকে ‘কাঠামোগত হত্যাকাণ্ড’ আখ্যা পিসিপি’র

 

কুকি চিন ন্যাশনাল ফ্রন্টের (কেএনএফ) সদস্য সন্দেহে গ্রেপ্তারের শিকার লালসাংময় বমের মৃত্যুর ঘটনাকেরাষ্ট্রীয় কাঠামোগত হত্যাকাণ্ড’ মন্তব্য করে তীব্র নিন্দা প্রতিবাদ জানিয়েছে বৃহত্তর পার্বত্য চট্টগ্রাম পাহাড়ি ছাত্র পরিষদ (পিসিপি)

আজ সোমবার (২ জুন) সংগঠনটির কেন্দ্রীয় সভাপতি অমল ত্রিপুরা ও সাধারণ সম্পাদক শুভাশীষ চাকমা সংবাদ মাধ্যমে পাঠানো এক বিবৃতিতে এ নিন্দা ও প্রতিবাদ জানান।  

বিবৃতিতে পিসিপি জানায়, দীর্ঘ দুই বছরের অধিক বিনা বিচারে চট্টগ্রাম জেলা কারাগারে আটক থাকা অবস্থায় গতকাল আনুমানিক বিকাল সাড়ে ৪টায় লালসাংময় বম চট্টগ্রাম মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে মৃত্যুবরণ করেন। এটা স্পষ্টতই রাষ্ট্রীয় কাঠামোগত হত্যাকাণ্ড। এরপূর্বেও চট্টগ্রাম কেন্দ্রীয় কারাগারে বিনা চিকিৎসায় লালত্লেং কিম বম নামের এক যুবক মারা যায়। যা ইচ্ছাকৃতভাবে তাকে মেরে ফেলার সামিল। অন্তর্বর্তী সরকার এ হত্যার দায় কখনো এড়াতে পারে না।

বিবৃতিতে আরো বলা হয়, যুদ্ধাপরাধী রাজাকার খ্যাত চিহ্নিত অপরাধী ও মৃত্যুদণ্ডপ্রাপ্ত আসামীদের দায়হীনভাবে মুক্তি দেয়া হলেও, বছরের পর বছর ধরে বিনা বিচারে আটক থাকা বম জাতির নিরপরাধ শিশু-কিশোর ও নারী-পুরুষদের এখনো মুক্তি দেয়া হচ্ছে না। নতুন বাংলাদেশ রাষ্ট্র নির্মাণের স্বপ্নে বিভোর ইউনুস সরকারের জন্য এর চেয়ে লজ্জাজনক ঘটনা আর হতে পারে না।

বিবৃতিতে নিরপরাধ বমদের মুক্তির পাশাপাশি পার্বত্য চট্টগ্রামের জনজাতির ওপর রাষ্ট্রীয় বাহিনীর নিপীড়ন ও হত্যাকাণ্ড বন্ধ করার আহ্বান জানিয়েছে পিসিপি।  

ঐকমত্য কমিশনের দ্বিতীয় ধাপের সংলাপে ডাক পায়নি ইউপিডিএফ

 


আগামী সোমবার (২ জুন) থেকে শুরু হতে যাচ্ছে রাজনৈতিক দলগুলোর সঙ্গে জাতীয় ঐকমত্য কমিশনের দ্বিতীয় ধাপের সংলাপ। প্রধান উপদেষ্টা ড. মুহাম্মদ ইউনুসের এই সংলাপের উদ্বোধন করার কথা রয়েছে। তবে দ্বিতীয় ধাপের সংলাপে ইউপিডিএফকে আমন্ত্রণ জানানো হচ্ছে না। জাতীয় ঐকমত্য কমিশন সূত্রে এসব তথ্য জানা গেছে।

জানা গেছে, আগামী সোমবার বিকেল সাড়ে ৩টায় রাজধানীর সেগুনবাগিচায় অবস্থিত ফরেন সার্ভিস একাডেমিতে সংলাপ অনুষ্ঠিত হবে। দ্বিতীয় ধাপের প্রথম দিনে কেবল প্রধান উপদেষ্টা বক্তব্য দিতে পারেন। এরপর, মঙ্গলবার থেকে আনুষ্ঠানিকভাবে দলগুলোর সঙ্গে আলোচনা শুরু করবে কমিশন।

গত ১০ মে পার্বত্য চট্টগ্রামভিত্তিক ইউনাইটেড পিপলস ডেমোক্রেটিক ফ্রন্টের (ইউপিডিএফ) সঙ্গে সংলাপ মুলতবি করে জাতীয় ঐকমত্য কমিশন। দলটির সঙ্গে সংলাপ করায় কমিশনের সমালোচনা করে অনেকেই। এ কারণে মুলতবি বৈঠক করা হয়নি। দ্বিতীয় ধাপের সংলাপে ইউপিডিএফকে আমন্ত্রণ জানানো হচ্ছে না বলেও জানা গেছে। এ ছাড়া বাকি ৩২ দল ও জোটের নেতাদের আমন্ত্রণ জানানো হচ্ছে।

এদিকে, জাতীয় ঐকমত্য কমিশনের দ্বিতীয় ধাপের সংলাপে ইউনাইটেড পিপলস ডেমোক্রেটিক ফ্রন্টকে বাদ দেয়ার সিদ্ধান্তকে বিশ্বাসঘাতকতার শামিল বলে কড়া সমালোচনা করেছে দলটি। রবিবার সংবাদ মাধ্যমে দেয়া এক বিবৃতিতে ইউপিডিএফের সহ-সভাপতি নূতন কুমার চাকমা এই মন্তব্য করেন।

বিবৃতিতে জানানো হয়, পার্বত্য চট্টগ্রামের জনগণকে ‘নতুন বাংলাদেশ’ রাষ্ট্র গঠনের প্রক্রিয়ার বাইরে দূরে সরিয়ে রেখে দেশে কখনই প্রকৃত গণতান্ত্রিক রাষ্ট্র নির্মাণ সম্ভব নয়।

ঐকমত্য কমিশনের সংলাপে আমন্ত্রণ না জানানোর বিষয়ে ইউপিডিএফ মনে করে, এ ধরনের অগণতান্ত্রিক আচরণ যারা করে থাকেন, তাদের দ্বারা গণতান্ত্রিক রাষ্ট্র কায়েম হওয়ার বিন্দুমাত্র সম্ভাবনা থাকতে পারে না।

বিবৃতিতে ইউপিডিএফ আরও জানায়, বাংলাদেশ স্বাধীনতার পর জাতীয় সংবিধান প্রণয়নকালে দেশের রাষ্ট্রনেতারা যে ভুল করেছিলেন, জুলাই-আগস্ট অভ্যুত্থানের পর সেই ভুল সংশোধনের একটি ঐতিহাসিক সুযোগ সৃষ্টি হয়েছিল। কিন্তু বর্তমান নেতৃত্ব সেই সুযোগ গ্রহণ না করে একই ভুলের পুনরাবৃত্তি করলেন, যা অত্যন্ত দুঃখজনক।  

‘বমদের উপর অন্যায়ের প্রতিবাদ না করলে একদিন আমাদের অস্তিত্ব থাকবে না’

 


কুকি চিন ন্যাশনাল ফ্রন্টের (কেএনএফ) বিরুদ্ধে অভিযানের নামে সাধারণ বমদের গ্রেফতার একটি পরিকল্পিত ঘটনা। শিশু, বৃদ্ধসহ সাধারণ বম জনগোষ্ঠী আর কেএনএফ কিন্তু এক নয়। অন্যান্য জনগোষ্ঠীদের বম জনগোষ্ঠীর পাশে দাঁড়াতে হবে। অন্যায়ের বিরুদ্ধে কথা বলতে হবে। আমরা যদি এসব অন্যায়ের বিরুদ্ধে আওয়াজ না তুলি তাহলে একদিন আমাদের অস্তিত্ব মুছে যাবে।

বুধবার (২৮ মে) রাঙ্গামাটিতে চিংমা খেয়াংয়ের ধর্ষণ ও ধর্ষণের পর হত্যার ঘটনার সুষ্ঠু বিচার ও সাধারণ বম জনগোষ্ঠীর মুক্তির দাবিতে আয়োজিত বিক্ষোভ মিছিল পরবর্তী সমাবেশে হিল উইমেন্স ফেডারেশনের নেত্রীরা এসব কথা বলেন।

সংগঠনটির রাঙ্গামাটি সরকারি কলেজ শাখা এ কর্মসূচির আয়োজন করে। এতে হিল উইমেন্স ফেডারেশন কেন্দ্রীয় কমিটির সাংগঠনিক সম্পাদক উলিসিং মারমা, পার্বত্য চট্টগ্রাম পাহাড়ী ছাত্র পরিষদ রাঙ্গামাটি সরকারি কলেজ শাখার সভাপতি সজল চাকমা, রাঙ্গামাটি সরকারি কলেজের সাধারণ শিক্ষার্থী প্রিয়োতা চাকমা প্রমুখ বক্তব্য রাখেন।

সমাবেশে এইচডব্লিউএফ-এর কেন্দ্রীয় কমিটির সাংগঠনিক সম্পাদক উলিসিং মারমা বলেন, গত ৫ মে চিংমা খেয়াংয়ের ধর্ষণ ও ধর্ষণের পর হত্যা করা হয়। ঘটনার প্রায় একমাস হতে চলেছে। অথচ ময়নাতদন্তের রিপোর্ট পর্যন্ত প্রকাশ করা হয়নি। চিংমা খেয়াংয়ের পরিবার স্পষ্টই উল্লেখ করেছেন যে, ধর্ষক ও হত্যাকারীরা হলো পর্যটক।

তিনি আরও বলেন, বান্দরবানের থানচি উপজেলায় যাওয়ার সময় অসংখ্য সেনাক্যাম্পের সামনে দিয়ে যেতে হয়। সেনাক্যাম্পে পর্যটকদের এন্ট্রি করতে হয়। অথচ প্রশাসন এখনো অপরাধীদের ধরতে পারছে না।

পিসিপি রাঙ্গামাটি কলেজ শাখার সভাপতি সজল চাকমা অভিযোগ করে বলেন, পার্বত্য চট্টগ্রামে যতগুলো ধর্ষণ ও হত্যার ঘটনা ঘটেছে তা সংঘটিত করেছে সেটেলার বাঙালিরা, যার একটিরও সুষ্ঠু বিচার হয়নি। প্রশাসনের মদদে মূলত এসব ঘটনা ঘটানো হচ্ছে। যার কারণে প্রশাসন এসব ঘটনার ব্যাপারে উদাসীন থাকে।

এই ছাত্রনেতার অভিযোগ, ৭২-এর সংবিধানে আমাদেরকে অস্বীকার করা হয়েছিলো। আজকের গঠিত সংবিধানেও সংস্কার কমিশনে বহুত্ববাদকে তারা গ্রহণ করতে চায় না। আমাদের অস্বীকার করা হচ্ছে। আমাদের এর বিরুদ্ধে লড়াই করতে হবে। কঠোর প্রতিরোধ গড়ে তুলতে হবে।

হিল উইমেন্স ফেডারেশন রাঙ্গামাটি সরকারি কলেজ শাখার সাংগঠনিক সম্পাদক সূচনা চাকমার সঞ্চালনায় ও সভাপতি এলি চাকমার সভাপতিত্বে সমাবেশে প্রিয়া চাকমা, সাধারণ শিক্ষার্থী প্রিয়োতা চাকমা বক্তব্য রাখেন।  

চাকসু’তে ‘আদিবাসী বিষয়ক পদ’ অন্তর্ভুক্তির প্রস্তাবনা

 

চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ের (চবি) কেন্দ্রীয় ছাত্রসংসদে (চাকসু) আদিবাসী বিষয়ক সম্পাদক সহ পাঁচটি পদ অন্তর্ভুক্তির প্রস্তাবনা দেওয়া হয়েছে। সোমবার (২৬ মে) দুপুরে বিশ্ববিদ্যালয়ের চাকসু ভবনের সামনে আয়োজিত এক সংবাদ সম্মেলনে কয়েকটি আদিবাসী সংগঠনের নেতারা এই দাবি জানান।

সংবাদ সম্মেলনে লিখিত বক্তব্য পাঠ করেন পাহাড়ি ছাত্র পরিষদের চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয় শাখার সভাপতি রোনাল চাকমা। লিখিত বক্তব্যে তিনি বলেন, চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয় বহুজাতি, বহু ভাষা, ধর্ম ও সাংস্কৃতিক বৈচিত্র্যপূর্ণ একটি বিশ্ববিদ্যালয়। এই বিশ্ববিদ্যালয়ে পাহাড় ও সমতলের প্রায় ১৫টির অধিক বিভিন্ন জাতিগোষ্ঠীর শিক্ষার্থী অধ্যয়ন করছে, যার সংখ্যা প্রায় ৭ শতাধিক।

তিনি আরও জানান, জাতিগোষ্ঠীসমূহের শিক্ষার্থীদের অধিকার, ভাষা ও সংস্কৃতির বিকাশ, সংরক্ষণ ও গবেষণায় চাকসু হতে পারে শিক্ষার্থীদের অন্যতম প্ল্যাটফর্ম। পিছিয়ে পড়া জনগোষ্ঠী কিংবা পিছিয়ে পড়া অঞ্চল থেকে সংসদীয় ব্যবস্থায় প্রতিনিধিত্বের সুযোগ রাষ্ট্রের সকল নাগরিকের সমান অবস্থান ও মর্যাদা নিশ্চিত করবে। যা অন্তর্ভুক্তিমূলক গণতান্ত্রিক ব্যবস্থার অন্যতম সৌন্দর্য।

এসময় রোনাল চাকমা বর্তমান চাকসু গঠনতন্ত্র নিয়ে কিছু প্রস্তাবনা তুলে ধরেন। প্রস্তাবিত ৫ দাবি হল, পরিবহন ও আবাসন বিষয়ক সম্পাদক, নারী বিষয়ক সম্পাদক, আদিবাসী বা সংখ্যালঘু জাতিসত্তা বিষয়ক সম্পাদক, স্বাস্থ্য বিষয়ক সম্পাদক এবং হল ছাত্র সংসদ নির্বাচনে ভিপি অথবা জিএস যেকোন একটি গুরুত্বপূর্ণ পদে তাঁদের প্রতিনিধিত্ব নিশ্চিত করা।

লিখিত বক্তব্যে আরো ২টি প্রস্তাবনা তুলে ধরা হয়। আদিবাসী ছাত্রনেতারা বলেন, চাকসুর গঠনতন্ত্রের অনুচ্ছেদ ০২ অনুযায়ী চাকসু'র লক্ষ্য ও উদ্দেশ্য সুস্পষ্ট হওয়া উচিত। লক্ষ্য ও উদ্দেশ্য হিসেবে, বিশ্ববিদ্যালয় সকল শিক্ষার্থীর সমান সুযোগ ও অধিকার নিশ্চিত করা, সংখ্যালঘুদের অধিকার সংরক্ষণ, শিক্ষক-শিক্ষার্থীদের সম্পর্কের উন্নতি এবং শিক্ষার্থীদের অধিকার আদায়ে একটি চাপ প্রয়োগকারী সংস্থা এবং রাষ্ট্রীয় বিভিন্ন নীতির সমালোচনা ও নাগরিক অধিকার চর্চার একটি মুখপাত্র হয়ে উঠা উচিত।

এসময় অন্যান্যের মধ্যে বাংলাদেশ মারমা স্টুডেন্টস কাউন্সিলের সাংগঠনিক সম্পাদক সাথোয়াই অং মারমা, ত্রিপুরা স্টুডেন্টস ফোরাম চট্টগ্রাম মহানগরের সভাপতি ধন রঞ্জন ত্রিপুরা, ওঁরাও জনগোষ্ঠীর প্রতিনিধি পিযুষ টপ্য, বিশ্ববিদ্যালয়ের ইংরেজী বিভাগের শিক্ষার্থী সিনেট চাকমা উপস্থিত ছিলেন। 

পিসিপি’র নতুন সভাপতি রুমেন, সাধারণ সম্পাদক সুপ্রিয়

 


পার্বত্য চট্টগ্রাম পাহাড়ী ছাত্র পরিষদ (পিসিপি) কেন্দ্রীয় কমিটির নতুন সভাপতি হয়েছেন রুমেন চাকমা। সংগঠনটির নতুন সাধারণ সম্পাদক সুপ্রিয় তঞ্চঙ্গ্যা। আজ বুধবার (২১ মে) রাঙ্গামাটির শিল্পকলা একাডেমি মিলনায়তনে পিসিপি’র দিনব্যাপী ২৯তম কেন্দ্রীয় কাউন্সিল ও প্রতিনিধি সম্মেলনে তারা নির্বাচিত হন।

সম্মেলনে তিন পার্বত্য জেলা, মহানগর, বিশ্ববিদ্যালয়, থানা, কলেজ, শহর, ইউনিয়ন কমিটি থেকে প্রায় তিন শতাধিক প্রতিনিধি ও পর্যবেক্ষক অংশগ্রহণ করেন। সম্মেলনের প্রথম অধিবেশনে পিসিপির বিদায়ী কমিটির অর্থ সম্পাদক টিকেল চাকমার সভাপতিত্বে এবং সহ-সাধারণ সম্পাদক জিকো চাকমার সঞ্চালনায় প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন পার্বত্য চট্টগ্রাম জনসংহতি সমিতির সহ-সভাপতি ঊষাতন তালুকদার।

কেন্দ্রীয় কাউন্সিল ও প্রতিনিধি সম্মেলনের অধিবেশনে পিসিপি’র বিদায়ী কমিটির সহ-সভাপতি খোকন চাকমা কমিটির ৩৩ সদস্য বিশিষ্ট ২৯তম কেন্দ্রীয় কমিটি প্রস্তাব করেন। প্রস্তাবিত কমিটিকে উপস্থিত প্রতিনিধি ও পর্যবেক্ষকবৃন্দ সর্বসম্মতিক্রমে নির্বাচিত করে মুহুর্মুহু করতালির মাধ্যমে স্বাগত জানান। 

সম্মেলনে রুমেন-সুপ্রিয় ছাড়াও সাংগঠনিক সম্পাদক হিসেবে সৈসানু মারমাকে নির্বাচিত করে ৩৩ সদস্য বিশিষ্ট কমিটি গঠন করা হয়। নব নির্বাচিত কমিটিকে শপথ বাক্য পাঠ করান বিদায়ী কমিটির সহ-সভাপতি খোকন চাকমা।

পরে দ্বিতীয় অধিবেশনের সভাপতি ও বিদায়ী ২৮তম কেন্দ্রীয় কমিটির সভাপতি নিপন ত্রিপুরা দিক নির্দেশনামূলক বক্তব্যের মধ্য দিয়ে সম্মেলনের সমাপ্তি ঘটে।

‘অন্তর্বর্তী সরকার পার্বত্য চট্টগ্রামের বেলায় ভুল নীতিতে অগ্রসর হচ্ছে’

 


আগের সরকারগুলোর মত বর্তমান অন্তর্বর্তীকালীন সরকারও পার্বত্য চট্টগ্রামের বেলায় ভুল নীতিতে অগ্রসর হচ্ছে। এই সরকার সকল জাতিগোষ্ঠী-সম্প্রদায়কে তার তথাকথিত অন্তর্ভূক্তিমূলক ব্যবস্থায় আনতে সক্ষম হয়নি। যার কারণে আদিবাসীদের দুর্দশা, তাদের বঞ্চনা এখনো শেষ হয়নি উপরন্তু আরও বেড়েই চলেছে।

আজ মঙ্গলবার (২০ মে) পার্বত্য চট্টগ্রাম পাহাড়ী ছাত্র পরিষদের ৩৬তম প্রতিষ্ঠাবার্ষিকী উপলক্ষে রাঙ্গামাটির জেলা শিল্পকলা একাডেমি মিলনায়তনে আয়োজিত আলোচনা সভায় এসব কথা বলেন পার্বত্য চট্টগ্রাম জনসংহতি সমিতির সহ-সভাপতি ঊষাতন তালুকদার।

সভায় ঊষাতন তালুকদার বলেন, পার্বত্য চট্টগ্রামের রাজনৈতিক সমস্যার স্থায়ী সমাধানে এই সরকারের কাছ থেকে আমরা এখনও আন্তরিকতা দেখতে পাইনি। বাংলাদেশের স্বাধীনতা ও সার্বভৌমত্বের প্রতি সম্মান রেখে ১৯৯৭ সালের ২রা ডিসেম্বর পার্বত্য চুক্তি স্বাক্ষরিত হয়েছিল। পার্বত্য চট্টগ্রাম সমস্যার সমাধান করতে এই চুক্তির বাস্তবায়ন অতীব জরুরি।

পিসিপি’র নেতাকর্মীদের উদ্দেশ্যে তিনি আরও বলেন, আজ পাহাড়ী ছাত্র পরিষদ ৩৬ বছরে পা রাখতে যাচ্ছে। চেতনার অন্ধকারকে তাড়িয়ে সংগ্রামের আলো হাতে নিয়ে জুম্ম ছাত্র সমাজকে হাঁটতে হবে। শোষণ-নিপীড়ন থেকে মুক্তির স্বপ্ন নিয়ে এম এন লারমারা যেভাবে গ্রামে গ্রামে গিয়ে জুম্ম জনগণকে রাজনৈতিকভাবে ঐক্যবদ্ধ করেছিল আজকের পাহাড়ী ছাত্র পরিষদের কর্মীদেরও সেভাবে গ্রামে ফিরতে হবে, শেকড়ের কাছে যেতে হবে। ছাত্র যুব সমাজ তথা গণমানুষকে নতুন করে জাগিয়ে তুলতে হবে।

বাংলাদেশ আদিবাসী ফোরাম পার্বত্য চট্টগ্রাম 'ক' অঞ্চলের সভাপতি প্রকৃতি রঞ্জন চাকমা বলেন, ছাত্র ও যুব সমাজ হলেন আমাদের আলো, আমাদের পথের দিশারি। জনগণের আন্দোলনে এই অগ্রণী ছাত্র সমাজকে সাথে নিয়ে পাহাড়ী ছাত্র পরিষদকে দুর্বার গতিতে এগিয়ে যেতে হবে। একমাত্র শিক্ষিত ছাত্র সমাজের ঐক্যবদ্ধ অংশগ্রহণই জনগণের আন্দোলনকে এগিয়ে নিয়ে যাবে।

শিক্ষাবিদ শিশির চাকমা বলেন, পার্বত্য চট্টগ্রাম তথা সমগ্র দেশ যখন ক্রান্তিকাল পার করছে আজকে সেই সময়ে পাহাড়ী ছাত্র পরিষদ ৩৬ বছরে পদার্পণ করলো। ৩৬ বছরের পথচলায় পাহাড়ী ছাত্র পরিষদ বহু ত্যাগ তিতিক্ষা স্বীকার করেছে যা ছাত্র সমাজের সংগ্রামী চেতনাকে আরও শাণিত করেছে। আজকে ছাত্র সমাজকে পাহাড়ী ছাত্র পরিষদের উত্থানের ইতিহাস এবং তার প্রয়োজনীয়তাকে অনুধাবন করতে হবে।

সংগঠনটির সভাপতি নিপন ত্রিপুরার সভাপতিত্বে এবং সাধারণ সম্পাদক রুমেন চাকমার সঞ্চালনায় সমাবেশে স্বাগত বক্তব্য রাখেন পিসিপির কেন্দ্রীয় সদস্য সৈসানু মারমা।

এরআগে, সকাল ১০টায় রাঙ্গামাটি জেলা শিল্পকলা একাডেমি প্রাঙ্গণে বেলুন উড়িয়ে অনুষ্ঠানের উদ্বোধন ঘোষণা করেন উদ্বোধক ও প্রধান অতিথি ঊষাতন তালুকদার। এসময় গিরিসুর শিল্পীগোষ্ঠীর শিল্পীবৃন্দের পরিবেশনায় জাতীয় সংগীত ও দলীয় সংগীতের মধ্যে জাতীয় পতাকা ও দলীয় পতাকা উত্তোলন করা হয়।

আলোচনা সভার শুরুতে জুম্ম জনগণের আত্মনিয়ন্ত্রণাধিকার প্রতিষ্ঠার লড়াইয়ে যারা নিজেদের জীবন আত্মোৎসর্গ করেছেন তাঁদের স্মরণে দাঁড়িয়ে ২ মিনিট নীরবতা পালন করা হয়।

© all rights reserved - Janajatir Kantho