দেশে প্রথমবারের মতো নির্মিত হল ম্রো ভাষায় চলচ্চিত্র ‘ক্লোবং ম্লা’। যার বাংলা নাম ‘গিরিকুসুম’। চলচ্চিত্রটির নির্মাতা প্রদীপ ঘোষ। আগামী ২৩ ফেব্রুয়ারি ঢাকার ধানমণ্ডিতে ‘মাতৃভাষা চলচ্চিত্র উৎসব ২০২৫’-এ চলচ্চিত্রটি প্রদর্শিত হবে।
ম্রো ভাষার প্রথম চলচ্চিত্রটির প্রযোজক ডা. মং উষা থোয়াই। বান্দরবানের প্রবীণ এ চিকিৎসক দীর্ঘদিন ধরেই চেষ্টা করে যাচ্ছেন পাহাড়ের বিভিন্ন জনগোষ্ঠীর ভাষায় চলচ্চিত্র নির্মাণের। এর আগে মারমা ভাষায় প্রথম চলচ্চিত্র ‘গিরিকন্যা’ প্রযোজনা করেছেন তিনি।
ডা. মং উষা থোয়াই
বলেন,
‘পার্বত্য এলাকায় ১১টি জাতিগোষ্ঠীর মানুষ আছে। প্রত্যেকের নিজস্ব ভাষা ও বর্ণমালা আছে। সেসব সিনেমার মাধ্যমে তুলে ধরতে চাই আমি।’
‘ক্লোবং ম্লা’র কাহিনি লিখেছেন ম্রো ভাষার লেখক ও গবেষক ইয়াংঙান ম্রো।
ম্রো ভাষার প্রথম অভিধান লিখেছেন তিনি। লিখেছেন নিজ ভাষার প্রথম ব্যাকরণও। ম্রো ভাষায়
প্রকাশিত প্রথম বইটিও তাঁর লেখা। এবার নিজেদের প্রথম চলচ্চিত্রের সঙ্গে জড়াল তাঁর নাম।
ম্রো সমাজে খুবই জনপ্রিয় প্রচলিত
গল্প ‘ক্লোবং ম্লা’। ক্লোবং নামের এক কন্যাশিশুকে
কেন্দ্র করে আবর্তিত গল্পটি। শৈশবে কলেরায় আক্রান্ত হয়ে মারা যায় ক্লোবংয়ের মা-বাবা।
একমাত্র বড় ভাই ক্লোবংকে আদর-স্নেহে বড় করে তোলে। ভাইটি জুম কাজে সারাক্ষণ ব্যস্ত থাকত
আর ক্লোবং ঘরের যাবতীয় কাজ করত। একসময় তার ভাই বিয়ে করে। কিন্তু আদর-স্নেহ দূরে থাক,
ক্লোবংকে অত্যাচার করতে থাকে তার বৌদি। প্রিয় বোনের প্রতি এমন অত্যাচার মেনে নিতে পারেনি
বড় ভাই। নানা ঘাত-প্রতিঘাতে সমাপ্তির দিকে যায় কাহিনি।
চিম্বুক, রামরিপাড়াসহ বান্দরবানের
বিভিন্ন জায়গায় হয়েছে স্বল্পদৈর্ঘ্য ছবিটির শুটিং। ১৮ মিনিট ব্যাপ্তির চলচ্চিত্রটিতে
মূলত ম্রোদের পারিবারিক জীবন ও সংগ্রাম চিত্রায়িত হয়েছে। অভিনয় করেছেন ইয়াংঙান ম্রোসহ
বান্দরবানের ম্রো জনগোষ্ঠীর ১৫ জন। তাদের সবার জীবনে অভিনয়ের হাতেখড়ি হয়েছে এই সিনেমা দিয়েই।