‘অপরাধ দমনের নামে একটি জাতিগোষ্ঠীকে দমন করা হচ্ছে’

বম জনগোষ্ঠী পিসিপি

বান্দরবানে ব্যাংক কর্মকর্তা অপহরণ, ডাকাতি ও পুলিশ-আনসারের অস্ত্র লুটের ঘটনাকে কেন্দ্র করে বম জাতিসত্তার জনগণের ওপর নিপীড়ন ও শিক্ষার্থী, চাকরিজীবীসহ সাধারণ মানুষকে অন্যায়ভাবে গ্রেফতার ও নির্যাতনের প্রতিবাদে ঢাকায় বিক্ষোভ হয়েছে। বৃহস্পতিবার (২৪ এপ্রিল) বিকাল ৪ টায় ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের টিএসসি চত্ত্বরে গণতান্ত্রিক ছাত্র জোট এ কর্মসূচির আয়োজন করে।

সমাবেশে গণতান্ত্রিক ছাত্র জোটের সমন্বয়ক ও পাহাড়ি ছাত্র পরিষদের সভাপতি অঙ্কন চাকমার সভাপতিত্ব ও বিপ্লবী ছাত্র মৈত্রীর সাধারণ সম্পাদক দিলীপ রায়ের সঞ্চালনায় বাংলাদেশ ছাত্র ইউনিয়নের সহ-সভাপতি মিখা পিরেগু, সমাজতান্ত্রিক ছাত্র ফ্রন্টের সভাপতি সালমান সিদ্দিকী, গণতান্ত্রিক ছাত্র কাউন্সিলের সভাপতি ছায়েদুল হক নিশান বক্তব্য রাখেন।   

সমাবেশে বক্তারা বলেন, শাসকগোষ্ঠী পার্বত্য চট্টগ্রামের মানুষের উপর স্মরণকালের ভয়াবহ নিপীড়ন জারি রেখেছে। পার্বত্য চট্টগ্রামে রাষ্ট্রীয় বাহিনীর ক্যাম্প সম্প্রসারণ, ভূমি বেদখল, উন্নয়নের নামে পাহাড়িদের উচ্ছেদ করে তাদের অস্তিত্ব ধ্বংস করে দেওয়া হয় একের পর এক নির্যাতনের সংস্কৃতি চালু রেখেছে।

ছাত্রনেতাদের অভিযোগ, গত কয়েকদিনে বান্দরবানে এক নাটকীয় ঘটনায় পরিপ্রেক্ষিতে পাহাড়ে বিপুল পরিমানে সেনাবাহিনী মোতায়েনের দাবি তোলার বিষয়টি তা প্রমাণ করে। গত ২ ও ৩ এপ্রিল বান্দরবানের রুমা ও থানচিতে ব্যাংক ডাকাতি, ম্যানেজারকে অপহরণ, রাষ্ট্রীয় বাহিনীর অস্ত্র লুটকে কেন্দ্র করে এই গণনির্যাতন চালানো হচ্ছে; তা শাসকগোষ্ঠীর চক্রান্ত ও সাজানো নাটকের বহিঃপ্রকাশ। পাহাড়ে অতীতের ঘটনা বলে দেয় শাসকগোষ্ঠীর মদদ ছাড়া শহর অঞ্চলে দিন দুপুরে সশস্ত্র মহড়া বা হামলা কোনভাবেই সম্ভব নয়।

সমাবেশে জানানো হয়, রাষ্ট্রীয় বিভিন্ন বাহিনীর যৌথ অভিযানে এ পর্যন্ত বম জনগোষ্ঠীর শিক্ষার্থী, চাকরিজীবীসহ ৬০ জন গ্রামবাসীকে গ্রেফতার করা হয়েছে। এর মধ্যে অন্তত দুইজন অন্তঃসত্তা নারীও রয়েছেন। এছাড়া তিন উপজেলায় চালসহ নিত্য প্রয়োজনীয় জিনিসপত্র পরিবহনের ওপর সেখানকার নিরাপত্তা বাহিনী নিষেধাজ্ঞা আরোপ করেছে। অপরাধ দমনের নামে একটি জাতিগোষ্ঠীকে দমন করা হচ্ছে, এর মাধ্যমে মানবতাবিরোধী অপরাধ সংগঠিত করা হচ্ছে।

সমাবেশে বম জাতিসত্তার নিরীহ জনগণের ওপর নিপীড়ন ও গ্রেফতার বন্ধ এবং আটককৃতদের নিঃশর্তে মুক্তির দাবি জানানো হয়। 

কোন মন্তব্য নেই

© all rights reserved - Janajatir Kantho