জাতীয় বাজেটে আদিবাসীদের জন্য বরাদ্দ বৃদ্ধির দাবি

 

আসন্ন ২০২৫-২০২৬ অর্থবছরের জাতীয় বাজেটে আদিবাসীদের জন্য বরাদ্দ বৃদ্ধির দাবি জানিয়েছে বাংলাদেশ আদিবাসী ইউনিয়ন। আদিবাসীদের  জন্য নতুন অর্থবছরে যে বাজেট বরাদ্দ করা হবে, তা কীভাবে ব্যয় করা হবে তা নির্ধারিত করে আলাদা অনুচ্ছেদ লিপিবদ্ধ করার দাবিও তুলেছে এ সংগঠন।

শুক্রবার (৩০ মে) সকালে জাতীয় প্রেসক্লাবে আয়োজিত এক সংবাদ সম্মেলনে বাংলাদেশ আদিবাসী ইউনিয়নের উপদেষ্টা ডা. দিবালোক সিংহ এ দাবি তুলে ধরেন। এসময় সংগঠনটির সভাপতি রেবেকা সরেন ও সাধারণ সম্পাদক শ্রীকান্ত মাহাতো উপস্থিত ছিলেন।

আদিবাসী ইউনিয়ন বলছে, একটি অন্তর্ভুক্তিমূলক ও ন্যায্য বাজেট নিশ্চিত করতে হবে, যাতে সমতল ও পার্বত্য চট্টগ্রামের আদিবাসীদের উন্নয়ন যথাযথভাবে প্রতিফলিত হয়।

লিখিত বক্তব্যে আদিবাসী ইউনিয়ন জানায়, আদিবাসীদের জন্য বিদ্যমান উন্নয়ন বাজেট দীর্ঘদিন ধরে অপ্রতুল, খণ্ডিত এবং নীতিগতভাবে গুরুত্বহীন থেকে যাচ্ছে। অধিকাংশ প্রকল্পে আদিবাসীদের জীবনধারা, সাংস্কৃতিক বাস্তবতা এবং মানবাধিকারের বিষয়গুলো বিবেচনায় আনা হয় না। প্রকল্প বাস্তবায়নেও তাদের অংশগ্রহণ প্রায় নেই বললেই চলে।

অধিকার সুরক্ষা, মাতৃভাষায় শিক্ষা, স্বাস্থ্য, সামাজিক নিরাপত্তা, পরিবেশ সংরক্ষণ ও নারীর ক্ষমতায়নের মতো গুরুত্বপূর্ণ খাতেও আদিবাসীদের জন্য বরাদ্দ পর্যাপ্ত নয় বলে অভিযোগ করা হয়।

এ সময় সংগঠনটির সভাপতি রেবেকা সরেন, সাধারণ সম্পাদক শ্রীকান্ত মাহাতো এবং উপদেষ্টা দিবালোক সিংহ দাবি তুলে ধরে বলেন, সমতলের আদিবাসীদের জন্য পৃথক ভূমি কমিশন গঠন এবং তা কার্যকর করতে পাঁচ বছর মেয়াদি বাজেট বরাদ্দ দিতে হবে; বেদখল হওয়া জমি উদ্ধার ও পুনর্বাসনের জন্য বাজেটে বিশেষ বরাদ্দ দিতে হবে; প্রথাগত সামাজিক কাঠামো ও সাংস্কৃতিক ঐতিহ্য রক্ষায় সুনির্দিষ্ট বরাদ্দ দিতে হবে; আদিবাসীদের জন্য জাতীয় বাজেটে পৃথক অনুচ্ছেদ এবং স্পষ্ট বাজেট খাত নির্ধারণ করতে হবে; সব মন্ত্রণালয় ও দফতরের বাজেটে আদিবাসীদের জন্য আলাদা বরাদ্দ দিতে হবে এবং প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয়ের বিশেষ এলাকার উন্নয়ন কর্মসূচির অর্থ অনিয়ম রোধে কঠোর পদক্ষেপ নেওয়া।

এছাড়াও শিক্ষা খাতে আদিবাসী শিক্ষার্থীদের জন্য বিশেষ বরাদ্দ, নিরাপদ আবাসনের ব্যবস্থা এবং মাতৃভাষায় শিক্ষা কার্যক্রমে বাজেট বাড়ানোরও দাবি জানানো হয়। পাশাপাশি সামাজিক নিরাপত্তা কর্মসূচিতে অংশগ্রহণ নিশ্চিত; কর্মসংস্থানের জন্য দক্ষতা উন্নয়ন প্রশিক্ষণ; ১০০ দিনের কাজ, কাবিখা, ভিজিএফ-এ অন্তর্ভুক্তি এবং রেশনিং ব্যবস্থা চালুর প্রস্তাব দেন তারা।

 

‘চিংমা খেয়াংয়ের উপর অবিচার আদিবাসী অস্তিত্বকে উপহাস করার শামিল’

 


বান্দরবানের থানচি উপজেলায় চিংমা খিয়াংকে (২৯) ধর্ষণ নির্মমভাবে হত্যার ২২ দিন অতিবাহিত হলেও কোনো বিচার প্রক্রিয়ার অগ্রগতি নেই। প্রশাসনের পক্ষ থেকে কার্যকর কোনো পদক্ষেপ গ্রহণ করা হয়নি। পোস্টমর্টেম রিপোর্ট এখনও আলোর মুখ দেখেনি। এটা কেবল চিংমার প্রতি অবিচার নয়, এটি আমাদের আদিবাসী অস্তিত্ব, নিরাপত্তা ন্যায়ের অধিকারকে উপহাস করার শামিল বলে বিবৃতি দিয়েছে বাংলাদেশ খেয়াং স্টুডেন্টস ইউনিয়ন (বিকেএসইউ)

বুধবার (২৮ মে), বিকেএসইউ’র কেন্দ্রীয় তথ্য, প্রচার ও প্রকাশনা সম্পাদক স্বাধীন খেয়াং প্রেরিত এক বিবৃতিতে সংগঠনটি এমন মন্তব্য করে। বিবৃতিতে বলা হয়, আদিবাসী নারী চিংমা খেয়াং, যাকে বর্বরোচিতভাবে ধর্ষণ করে হত্যা করা হয়েছে। এই ঘটনার ২২ দিন পরও তদন্তে কোন দৃশ্যমান অগ্রগতি নেই, অপরাধীরা ধরাছোঁয়ার বাইরে, কিংবা প্রশাসনিকভাবে গোপন রাখা হচ্ছে।

বিকেএসইউ এ ঘটনায় সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষের গাফিলতি, অসচেতনতা এবং উদ্দেশ্যপ্রণোদিত নির্লিপ্ততাকে তীব্রভাবে নিন্দা ও প্রতিবাদ জানানোর পাশাপাশি চারটি দাবি জানিয়েছে। দাবিগুলো হল- চিংমা খেয়াং হত্যার সুষ্ঠু ও নিরপেক্ষ বিচার নিশ্চিত করতে হবে। অবিলম্বে তদন্ত শেষ করে দোষীদের আইনের আওতায় আনতে হবে। তদন্তে আদিবাসী প্রতিনিধি অন্তর্ভুক্ত করতে হবে।

পোস্টমর্টেম রিপোর্ট অবিলম্বে প্রকাশ করতে হবে। রিপোর্ট গোপন রেখে বিচারপ্রক্রিয়া বিলম্ব করা চলবে না। আদিবাসী নারীদের সুরক্ষার জন্য স্থায়ী পদক্ষেপ নিতে হবে। পার্বত্য অঞ্চলে নারীদের বিরুদ্ধে সহিংসতা প্রতিরোধে পৃথক আইন ও সুরক্ষা ব্যবস্থা গ্রহণ করতে হবে। এবং মানবাধিকার সংস্থা ও গণমাধ্যমকে আরও সক্রিয় ভূমিকা নিতে হবে।

‘বমদের উপর অন্যায়ের প্রতিবাদ না করলে একদিন আমাদের অস্তিত্ব থাকবে না’

 


কুকি চিন ন্যাশনাল ফ্রন্টের (কেএনএফ) বিরুদ্ধে অভিযানের নামে সাধারণ বমদের গ্রেফতার একটি পরিকল্পিত ঘটনা। শিশু, বৃদ্ধসহ সাধারণ বম জনগোষ্ঠী আর কেএনএফ কিন্তু এক নয়। অন্যান্য জনগোষ্ঠীদের বম জনগোষ্ঠীর পাশে দাঁড়াতে হবে। অন্যায়ের বিরুদ্ধে কথা বলতে হবে। আমরা যদি এসব অন্যায়ের বিরুদ্ধে আওয়াজ না তুলি তাহলে একদিন আমাদের অস্তিত্ব মুছে যাবে।

বুধবার (২৮ মে) রাঙ্গামাটিতে চিংমা খেয়াংয়ের ধর্ষণ ও ধর্ষণের পর হত্যার ঘটনার সুষ্ঠু বিচার ও সাধারণ বম জনগোষ্ঠীর মুক্তির দাবিতে আয়োজিত বিক্ষোভ মিছিল পরবর্তী সমাবেশে হিল উইমেন্স ফেডারেশনের নেত্রীরা এসব কথা বলেন।

সংগঠনটির রাঙ্গামাটি সরকারি কলেজ শাখা এ কর্মসূচির আয়োজন করে। এতে হিল উইমেন্স ফেডারেশন কেন্দ্রীয় কমিটির সাংগঠনিক সম্পাদক উলিসিং মারমা, পার্বত্য চট্টগ্রাম পাহাড়ী ছাত্র পরিষদ রাঙ্গামাটি সরকারি কলেজ শাখার সভাপতি সজল চাকমা, রাঙ্গামাটি সরকারি কলেজের সাধারণ শিক্ষার্থী প্রিয়োতা চাকমা প্রমুখ বক্তব্য রাখেন।

সমাবেশে এইচডব্লিউএফ-এর কেন্দ্রীয় কমিটির সাংগঠনিক সম্পাদক উলিসিং মারমা বলেন, গত ৫ মে চিংমা খেয়াংয়ের ধর্ষণ ও ধর্ষণের পর হত্যা করা হয়। ঘটনার প্রায় একমাস হতে চলেছে। অথচ ময়নাতদন্তের রিপোর্ট পর্যন্ত প্রকাশ করা হয়নি। চিংমা খেয়াংয়ের পরিবার স্পষ্টই উল্লেখ করেছেন যে, ধর্ষক ও হত্যাকারীরা হলো পর্যটক।

তিনি আরও বলেন, বান্দরবানের থানচি উপজেলায় যাওয়ার সময় অসংখ্য সেনাক্যাম্পের সামনে দিয়ে যেতে হয়। সেনাক্যাম্পে পর্যটকদের এন্ট্রি করতে হয়। অথচ প্রশাসন এখনো অপরাধীদের ধরতে পারছে না।

পিসিপি রাঙ্গামাটি কলেজ শাখার সভাপতি সজল চাকমা অভিযোগ করে বলেন, পার্বত্য চট্টগ্রামে যতগুলো ধর্ষণ ও হত্যার ঘটনা ঘটেছে তা সংঘটিত করেছে সেটেলার বাঙালিরা, যার একটিরও সুষ্ঠু বিচার হয়নি। প্রশাসনের মদদে মূলত এসব ঘটনা ঘটানো হচ্ছে। যার কারণে প্রশাসন এসব ঘটনার ব্যাপারে উদাসীন থাকে।

এই ছাত্রনেতার অভিযোগ, ৭২-এর সংবিধানে আমাদেরকে অস্বীকার করা হয়েছিলো। আজকের গঠিত সংবিধানেও সংস্কার কমিশনে বহুত্ববাদকে তারা গ্রহণ করতে চায় না। আমাদের অস্বীকার করা হচ্ছে। আমাদের এর বিরুদ্ধে লড়াই করতে হবে। কঠোর প্রতিরোধ গড়ে তুলতে হবে।

হিল উইমেন্স ফেডারেশন রাঙ্গামাটি সরকারি কলেজ শাখার সাংগঠনিক সম্পাদক সূচনা চাকমার সঞ্চালনায় ও সভাপতি এলি চাকমার সভাপতিত্বে সমাবেশে প্রিয়া চাকমা, সাধারণ শিক্ষার্থী প্রিয়োতা চাকমা বক্তব্য রাখেন।  

বাংলাদেশের বক্সিংয়ের তরুণ তুর্কি ইমন তঞ্চঙ্গ্যা

 


বয়স সবেমাত্র কুড়ি। এই বয়সেই শক্তি-সামর্থ্যে পেছনে ফেলেছেন অনেক অভিজ্ঞ বক্সারদের। ক্ষিপ্রতা, হার না মানা মানসিকতা আর দক্ষতায় জানান দিয়ে রাখছেন দেশের ভবিষৎ বক্সিং জগৎতে রাজত্ব করার। তিনি ইমন তঞ্চঙ্গ্যা।

যিনি গত ২৪ মে, এক্সেল স্পোর্টস ম্যানেজমেন্ট অ্যান্ড প্রমোশন্সের উদ্যোগে আয়োজিত ‘এক্সেল কনটেন্ডার সিরিজ ২.০’ এ অংশ নিয়ে রীতিমত তাক লাগিয়ে দিয়েছেন। প্রতিযোগিতায় তিনি রিং-এ নেমেছিলেন শক্তিশালী ভারতীয় বক্সার চন্দনদীপের বিরুদ্ধে। যিনি এরই মধ্যে খেলেছেন দশের অধিক ম্যাচ। বয়স, শক্তি-সামর্থ্যেও এগিয়ে। তবে ইমনের অদম্য মানসিকতার কাছে হার মানতে বাধ্য হয়েছেন তিনি।

মিডলওয়েট ক্যাটাগরিতে বাউটটি ছিল ছয় রাউন্ডের। পুরো বাউটে ইমন ছিলেন অপ্রতিরোধ্য। মিডলওয়েট ক্যাটাগরিতে ছয় রাউন্ডের বাউটটি ছিল  ইভেন্টের সবচেয়ে ফ্ল্যাগশিপ লড়াই। প্রথম রাউন্ড থেকেই যেখানে প্রতিপক্ষের উপর ছড়ি ঘুরান ইমন। দ্বিতীয় রাউন্ডে তার উপর্যপুরি জবাব, কাট ও পাঞ্চে মাটিতে পড়ে যান চন্দন। তবে হার মানেনি। নিজেকে সামনে নিয়ে পরের দুই রাউন্ডে ভালোভাবেই লড়াই চালিয়ে যান এই ভারতীয় বক্সার।

তবে পুরো বাউটে ইমন ছিলেন ক্ষুরধার। দু-একবার পাল্টা আক্রমণের চাপে পড়লেও মুহূর্তেই সামলে নিয়ে প্রতিপক্ষের উপর প্রতিষ্ঠা করছিলেন পূর্ণ নিয়ন্ত্রণ। জমজমাট লড়াইয়ের শেষ রাউন্ডে গিয়ে তার আগ্রাসী মনোভাবের সঙ্গে আর পেরে ওঠেননি চন্দন। ইমনের আত্মবিশ্বাস আর টিকেও বক্সিং একডেমিতে খেলা দেখতে আসা দর্শকদের হর্ষধবনি বলে দিচ্ছিল ম্যাচের ফলাফল কি হতে যাচ্ছে। ইমন জিতেছেন তিন রেফারির সম্মিলিত রায়ে।

দেশের তঞ্চঙ্গ্যা জনগোষ্ঠীর প্রথম পেশাদার বক্সার তিনি। বান্দরবানের আলীকদমের বুলু কার্বারি পাড়ার বাসিন্দা ইমন। ছোটবেলা থেকেই খেলাধুলার প্রতি আগ্রহ। গ্রামের বড় ভাইদের সঙ্গে ফুটবল আর ক্রিকেট খেলতেন। বঙ্গবন্ধু স্কুল ফুটবল টুর্নামেন্টেও উপজেলা পর্যায়ে সেরা হয়ে জেলা পর্যায়ে খেলেছেন।

ইমনের বড় ভাই প্রণয় তঞ্চঙ্গ্যা বান্দরবান সদরে পড়াশোনা করতেন। একসময় স্কুল বদলে ইমনও চলে যান সেখানে। ভর্তি হন বীর বাহাদুর স্কুল অ্যান্ড কলেজে। কলেজে পড়াশোনার সময়ই বক্সিয়ের সাথে পরিচয় হয়। আর সেখান থেকেই এগিয়ে শুরু হয় এগিয়ে চলার গল্প। ধীরে ধীরে বক্সিং হয়ে উঠে তাঁর ধ্যানজ্ঞান।

২০১৭ সালে বক্সিং ফেডারেশন আয়োজিত জুনিয়র ন্যাশনাল বক্সিং কম্পিটিশনের জন্য বান্দরবানের ৮ জনের দলে সুযোগ পেয়েছিলো সে। জেলা পর্যায়ে সেরা হয়ে তারা পরে বিভাগীয় পর্যায়ে চট্টগ্রামে খেলতে যান। সেখানেও চ্যাম্পিয়ন হয়ে পৌঁছান জাতীয় পর্যায়ে। এখন স্বপ্ন দেখেন অগ্রজ সুরো কৃষ্ণ চাকমার মতো বক্সিংয়ে নিজেকে অনন্য জায়গায় নিয়ে যাওয়ার।

নবাবগঞ্জে শিয়ালে খাওয়া আদিবাসী যুবকের লাশ উদ্ধার!

 


দিনাজপুরের নবাবগঞ্জে ফসলি জমির মাঠ থেকে শিয়ালে খাওয়া এক আদিবাসী যুবকের লাশ উদ্ধার করেছে পুলিশ। সময় লাশের একটি হাত কানসহ শরীরের কিছু অংশ শিয়াল খেয়ে ফেলেছে। ইউএনবি’র নিউজ।

সোমবার (২৬ মে) সকাল ১০টার দিকে উপজেলার দাউদপুর ইউনিয়নের সিসিডিবি অফিসের পূর্ব পাশের স্থানীয় তুফানের ভাটার ধার থেকে লাশটি উদ্ধার করা হয়।

মৃত আদিবাসী যুবক শুভ সরেন (২৪) একই উপজেলার মালদহ গীর্জাপাড়ার গনেশ সরেনের ছেলে।

নবাবগঞ্জ থানার উপপরিদর্শক (এসআই) মাহমুদুর রহমান বলেন, ‘ নম্বর দাউদপুর ইউনিয়নের হেয়াতপুর গ্রামের মাঝামাঝি একটি ইটভাটার পাশের জমির পানিতে শুভর লাশ উপুড় অবস্থায় পড়েছিল। লাশের একটি হাত একটি কান শিয়ালে খেয়ে ফেলেছে। মাথাসহ কয়েকটি স্থানে শিয়ালের কামড়ের ক্ষত রয়েছে। লাশের আশপাশে শিয়ালের পায়ের চিহ্ন দেখতে পেয়েছেন তারা।

তিনি আরও বলেন, ‘কেনাকাটার কথা বলে রবিবার বিকালে বাড়ি থেকে বের হয়ে রাতে ঘরে ফিরেনি শুভ সরেন। ময়নাতদন্তের জন্য দিনাজপুরের মেডিকেল কলেজের মর্গে লাশ পাঠানো হয়েছে।’ 

 

চাকসু’তে ‘আদিবাসী বিষয়ক পদ’ অন্তর্ভুক্তির প্রস্তাবনা

 

চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ের (চবি) কেন্দ্রীয় ছাত্রসংসদে (চাকসু) আদিবাসী বিষয়ক সম্পাদক সহ পাঁচটি পদ অন্তর্ভুক্তির প্রস্তাবনা দেওয়া হয়েছে। সোমবার (২৬ মে) দুপুরে বিশ্ববিদ্যালয়ের চাকসু ভবনের সামনে আয়োজিত এক সংবাদ সম্মেলনে কয়েকটি আদিবাসী সংগঠনের নেতারা এই দাবি জানান।

সংবাদ সম্মেলনে লিখিত বক্তব্য পাঠ করেন পাহাড়ি ছাত্র পরিষদের চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয় শাখার সভাপতি রোনাল চাকমা। লিখিত বক্তব্যে তিনি বলেন, চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয় বহুজাতি, বহু ভাষা, ধর্ম ও সাংস্কৃতিক বৈচিত্র্যপূর্ণ একটি বিশ্ববিদ্যালয়। এই বিশ্ববিদ্যালয়ে পাহাড় ও সমতলের প্রায় ১৫টির অধিক বিভিন্ন জাতিগোষ্ঠীর শিক্ষার্থী অধ্যয়ন করছে, যার সংখ্যা প্রায় ৭ শতাধিক।

তিনি আরও জানান, জাতিগোষ্ঠীসমূহের শিক্ষার্থীদের অধিকার, ভাষা ও সংস্কৃতির বিকাশ, সংরক্ষণ ও গবেষণায় চাকসু হতে পারে শিক্ষার্থীদের অন্যতম প্ল্যাটফর্ম। পিছিয়ে পড়া জনগোষ্ঠী কিংবা পিছিয়ে পড়া অঞ্চল থেকে সংসদীয় ব্যবস্থায় প্রতিনিধিত্বের সুযোগ রাষ্ট্রের সকল নাগরিকের সমান অবস্থান ও মর্যাদা নিশ্চিত করবে। যা অন্তর্ভুক্তিমূলক গণতান্ত্রিক ব্যবস্থার অন্যতম সৌন্দর্য।

এসময় রোনাল চাকমা বর্তমান চাকসু গঠনতন্ত্র নিয়ে কিছু প্রস্তাবনা তুলে ধরেন। প্রস্তাবিত ৫ দাবি হল, পরিবহন ও আবাসন বিষয়ক সম্পাদক, নারী বিষয়ক সম্পাদক, আদিবাসী বা সংখ্যালঘু জাতিসত্তা বিষয়ক সম্পাদক, স্বাস্থ্য বিষয়ক সম্পাদক এবং হল ছাত্র সংসদ নির্বাচনে ভিপি অথবা জিএস যেকোন একটি গুরুত্বপূর্ণ পদে তাঁদের প্রতিনিধিত্ব নিশ্চিত করা।

লিখিত বক্তব্যে আরো ২টি প্রস্তাবনা তুলে ধরা হয়। আদিবাসী ছাত্রনেতারা বলেন, চাকসুর গঠনতন্ত্রের অনুচ্ছেদ ০২ অনুযায়ী চাকসু'র লক্ষ্য ও উদ্দেশ্য সুস্পষ্ট হওয়া উচিত। লক্ষ্য ও উদ্দেশ্য হিসেবে, বিশ্ববিদ্যালয় সকল শিক্ষার্থীর সমান সুযোগ ও অধিকার নিশ্চিত করা, সংখ্যালঘুদের অধিকার সংরক্ষণ, শিক্ষক-শিক্ষার্থীদের সম্পর্কের উন্নতি এবং শিক্ষার্থীদের অধিকার আদায়ে একটি চাপ প্রয়োগকারী সংস্থা এবং রাষ্ট্রীয় বিভিন্ন নীতির সমালোচনা ও নাগরিক অধিকার চর্চার একটি মুখপাত্র হয়ে উঠা উচিত।

এসময় অন্যান্যের মধ্যে বাংলাদেশ মারমা স্টুডেন্টস কাউন্সিলের সাংগঠনিক সম্পাদক সাথোয়াই অং মারমা, ত্রিপুরা স্টুডেন্টস ফোরাম চট্টগ্রাম মহানগরের সভাপতি ধন রঞ্জন ত্রিপুরা, ওঁরাও জনগোষ্ঠীর প্রতিনিধি পিযুষ টপ্য, বিশ্ববিদ্যালয়ের ইংরেজী বিভাগের শিক্ষার্থী সিনেট চাকমা উপস্থিত ছিলেন। 

হাতির আক্রমনে মৃত্যু: ক্ষতিপূরণের চেক পেল সেই ২ পরিবার

 


শেরপুরের ঝিনাইগাতীতে হাতির আক্রমনে মারা যাওয়া এফিলিস হাগিদক ও আজিজুর রহমান আকাশের পরিবার ক্ষতিপূরণের চেক পেয়েছেন। আজ মধুটিলা ইকোপার্কে আয়োজিত এক সভায় পরিবেশ, বন ও জলবায়ু পরিবর্তন মন্ত্রণালয়ের উপদেষ্টা সৈয়দা রিজওয়ানা হাসান ক্ষতিগ্রস্তদের মাঝে ক্ষতিপূরণের চেক বিতরণ করেন।

সভায় উপদেষ্টা সৈয়দা রিজওয়ানা হাসান বলেছেন, হাতি-মানুষ দ্বন্দ্ব নিরসনে সরকার স্থায়ী সমাধানের পথে কাজ করছে। এজন্য আমাদের ধৈর্য ধরতে হবে।

তিনি আরও বলেন, মানুষ হাতির আবাসস্থল দখল করে নিচ্ছে, ফলে হাতির খাবার কমে যাচ্ছে। ইউক্যালিপটাসসহ বিদেশি গাছ না লাগিয়ে আমাদের হাতির উপযোগী দেশীয় প্রজাতির গাছ লাগাতে হবে। হাতির জীবনও গুরুত্বপূর্ণ, মানুষের জীবনও। বন ফিরিয়ে আনতে হবে। সরকার জনগণের প্রতিপক্ষ নয়, বরং সহায়ক। প্রাকৃতিক বন ধ্বংস হলে আমরাও নিরাপদ থাকব না। বাণিজ্যিক গাছের পরিবর্তে প্রাকৃতিক গাছ রোপণ করতে হবে।  

অনুষ্ঠানে হাতির আক্রমণে নিহত দুই পরিবারকে মোট ৬ লাখ টাকা ও ফসল-ঘরবাড়ির ক্ষতিপূরণ বাবদ ১৫ পরিবারকে ৩ লাখ ২৭ হাজার টাকা প্রদান করেন উপদেষ্টা। এছাড়া এলিফ্যান্ট রেসপন্স টিমের সদস্যদের মাঝে বাইনোকুলার, টর্চ লাইট, হ্যান্ডমাইক, হুইসেলসহ প্রয়োজনীয় সরঞ্জাম বিতরণ করা হয়।

অনুষ্ঠানে সভাপতিত্ব করেন বন অধিদফতরের প্রধান বন সংরক্ষক মো. আমীর হোসাইন চৌধুরী। মুখ্য আলোচক ছিলেন আন্তর্জাতিক খ্যাতিসম্পন্ন বন্যপ্রাণী বিশেষজ্ঞ অধ্যাপক ড. মোহাম্মদ আলী রেজা খান। এছাড়া শেরপুরের জেলা প্রশাসক তরফদার মাহমুদুর রহমান, কেন্দ্রীয় বন অঞ্চলের বন সংরক্ষক এ এস এম জহির উদ্দিন আকন, বন্যপ্রাণী ও প্রকৃতি সংরক্ষণ অঞ্চলের বন সংরক্ষক মো. ছানাউল্লাহ পাটওয়ারী, বিজিবি কমান্ডার লে. কর্নেল তানভির হোসেন মজুমদার প্রমুখ উপস্থিত ছিলেন।  

© all rights reserved - Janajatir Kantho