বাংলাদেশে পার্বত্য চট্টগ্রামের
জুম্ম আদিবাসী জনগণের উপর চলমান মানবাধিকার লঙ্ঘনের বিরুদ্ধে প্রতিবাদ জানিয়ে শান্তিপূর্ণ
সমাবেশ করেছে লা ভোয়া দে জুম্ম (জুম্মদের কণ্ঠ)। গতকাল প্যারিসের আইফেল টাওয়ারের
পাদদেশে এ সমাবেশ হয়।
সমাবেশে প্রধান বক্তা হিসেবে
উপস্থিত ছিলেন চাকমা সার্কেলের উপদেষ্টা রানী ইয়ান ইয়ান। সমাবেশটি সঞ্চালনা করেন লা
ভোয়া দে জুম্ম’র কার্যকরী কমিটির সদস্য মিসেস সমাপ্তি চাকমা ও সাধারণ সম্পাদক পার্থ
দেওয়ান।
সমাবেশে সম্প্রতি ঘটে যাওয়া
চিংমা খিয়াং-এর সংঘবদ্ধ ধর্ষণ ও নির্মম হত্যাকাণ্ড, বান্দরবানের বম আদিবাসীদের মিথ্যা
মামলায় অন্যায়ভাবে জেলে বন্দী রাখা, ভূমি রক্ষা আন্দোলনের নেতাদের গ্রেফতার, আদিবাসীদের
উচ্ছেদ এবং সামরিক নিপীড়নের মতো একাধিক ঘটনা তুলে ধরা হয়।
সমাবেশটি লা ভোয়া দে জুম্মর
সভাপতি রেমি চাকমার শুভেচ্ছা বক্তব্য দিয়ে শুরু হয়। পরে মিস স্বরণীকার কবিতা পাঠ ও
শিশু শিল্পী হৃদ্যতা দেওয়ান ভুলং সহ শায়েরী, সমাপ্তি এবং সৃজনী আদিবাসী নৃত্য প্রদর্শন
করেন। সমাবেশে রানী ইয়ান ইয়ান ছাড়াও মেকসুয়েল চাকমা, ড. মৃনাল চাকমা সহ অনেকে বক্তব্য
রাখেন।
বক্তারা বলেন, ২০২৪ সালের আগস্টে
বাংলাদেশের অন্তর্বর্তী সরকার সকল নাগরিকের অধিকার রক্ষার প্রতিশ্রুতি দিলেও বাস্তবে
জুম্ম জনগণ এখনো নির্যাতন, দখল ও বৈষম্যের শিকার। সমাবেশ থেকে আন্তর্জাতিক সম্প্রদায়,
বিশেষ করে ফ্রান্স সরকার ও জাতিসংঘের প্রতি জরুরি হস্তক্ষেপের আহ্বান জানিয়ে ৯টি প্রধান
দাবি উত্থাপন করা হয়।
দাবিগুলো হল- অবিলম্বে বম আদিবাসীদের
মুক্তি প্রদান, চিংমা খিয়াং এর সংঘবদ্ধ ধর্ষণ ও নির্মম হত্যাকাণ্ডের বিচার বিভাগীয়
তদন্ত করে দোষীদের শাস্তি প্রদান নিশ্চিত করা, ১৯৯৭ সালের পার্বত্য শান্তিচুক্তির পূর্ণ
বাস্তবায়ন, অপারেশন উত্তরণ বন্ধ করে বেসামরিক শাসন পুনঃপ্রতিষ্ঠা, দখলকৃত জমি ফেরত
দেওয়া ও ভূমি বিরোধ নিষ্পত্তি, জাতিসংঘের নেতৃত্বে বাংলাদেশের সেনাবাহিনীর সদস্য কর্তৃক
সংঘটিত মানবাধিকার লঙ্ঘনের ঘটনার নিরপেক্ষ তদন্ত এবং অভিযুক্ত সেনাদের শান্তিরক্ষা
মিশনে অংশগ্রহণ বন্ধ করা।
এছাড়াও জুম্ম জনগণকে আদিবাসী
হিসেবে সাংবিধানিক স্বীকৃতি প্রদান, সকল মানবাধিকার লঙ্ঘনকারী অপরাধীর বিরুদ্ধে দ্রুত,
স্বচ্ছ ও কঠোর বিচার নিশ্চিত করা ও জুম্ম নারী ও শিশুদের জন্য নিরাপত্তা ও স্বাস্থ্য
সুরক্ষা নিশ্চিতের দাবি জানানো হয়।
কোন মন্তব্য নেই
একটি মন্তব্য পোস্ট করুন