ডাকসু নির্বাচনে আদিবাসী প্রার্থীরা লড়ছেন কে কোন পদে

 

ডাকসু নির্বাচনে আদিবাসী প্রার্থীরা। বাঁ দিক থেকে (উপর) রুপাইয়া শ্রেষ্ঠা তঞ্চঙ্গ্যা, সর্ব মিত্র চাকমা, হেমা চাকমা, লিটন ত্রিপুরা, সুর্মী চাকমা, চিম চিম্যা চাকমা।
ডাকসু নির্বাচনে আদিবাসী প্রার্থীরা। বাঁ দিক থেকে (উপর) রুপাইয়া শ্রেষ্ঠা তঞ্চঙ্গ্যা, সর্ব মিত্র চাকমা, হেমা চাকমা, লিটন ত্রিপুরা, সুর্মী চাকমা, চিম চিম্যা চাকমা।

এবারের ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় কেন্দ্রীয় ছাত্র সংসদ (ডাকসু) নির্বাচনে বিভিন্ন প্যানেল স্বতন্ত্র থেকে উল্লেখ্যযোগ্যসংখ্যক আদিবাসী প্রার্থী হয়েছেন। তাদের অনেকেই সম্পাদক, সদস্যপ্রার্থী। অন্যান্য প্রার্থীদের মত আদিবাসী শিক্ষার্থীরাও নজর কেড়েছেন। তাদের স্বতঃস্ফূর্ত অংশগ্রহণ নির্বাচনে এনেছে ভিন্ন মাত্রা। ভোটারদের মধ্যে তাদের অংশগ্রহণ নিয়ে দেখা যাচ্ছে ইতিবাচক মনোভাব।

এমন ভিন্নধর্মী অংশগ্রহণই শিক্ষার্থীদের প্রত্যাশা। তারা বলছেন, আমরা এমন ডাকসু নির্বাচনই চাই। যেখানে যে কেউ তার পছন্দ অনুযায়ী যেকোনো পদে লড়তে পারবেন। নির্বাচনে অংশগ্রহণ করার ক্ষেত্রে থাকবে না কোনো ভেদাভেদ; ধর্ম-বর্ণ, দল-মত নির্বিশেষে সবাই অংশগ্রহণ করতে পারবেন নিজ ইচ্ছানুযায়ী।

১০টি প্যানেলে স্বতন্ত্র প্রার্থীদের মধ্যে কয়েকজন আদিবাসী প্রার্থী রয়েছেন। বিভিন্ন প্যানেলে আদিবাসী প্রার্থীদের পরিসংখ্যান

. উমামা ফাতেমার ‘স্বতন্ত্র শিক্ষার্থী ঐক্যে’র প্যানেলে পাঠকক্ষ ক্যাফেটেরিয়া সম্পাদক পদে লড়ছেন সুর্মী চাকমা ক্যারিয়ার উন্নয়ন সম্পাদক পদে রুপাইয়া শ্রেষ্ঠা তঞ্চঙ্গ্যা। এছাড়াও, সদস্য পদে লড়ছেন সংখ্যালঘু জনগোষ্ঠীর শিক্ষার্থী ববি বিশ্বাস অর্ক বড়ুয়া।

. গণতান্ত্রিক ছাত্রজোটের প্যানেলপ্রতিরোধ পর্ষদথেকে ক্যারিয়ার উন্নয়ন সম্পাদক পদে লড়বেন লিটন ত্রিপুরা। এছাড়াও সদস্য পদে আছেন পৃথিং মারমা হেমা চাকমা।

. ছাত্রদলের প্যানেলে ক্রীড়া সম্পাদক পদে লড়বেন চিম চিম্যা চাকমা।

. ছাত্রশিবিরের ‘ঐক্যবদ্ধ শিক্ষার্থী জোট’ প্যানেলে সদস্য পদে লড়বেন সর্ব মিত্র চাকমা। এই প্যানেলে নেই সংখ্যালঘু সম্প্রদায়ের কোনো প্রার্থী।

বাকি ছয়টি প্যানেলে নেই কোনো আদিবাসী প্রার্থী। প্যানেলগুলো হলো- বামদের একাংশের সমন্বয়ে গঠিত ‘অপরাজেয় ৭১-অদম্য ২৪’ ছাত্র অধিকার পরিষদের ‘ডাকসু ফর চেঞ্জ’ ইসলামী ছাত্র আন্দোলনের ‘সচেতন শিক্ষার্থী সংসদ’ মাহিন সরকারের নেতৃত্বে গঠিত ‘সমন্বিত শিক্ষার্থী সংসদ’ গণতান্ত্রিক ছাত্রসংসদের ‘বৈষম্যবিরোধী শিক্ষার্থী সংসদ’  সর্বশেষ ঘোষিত ‘সম্মিলিত ছাত্র ঐক্য’

জাতীয় ক্রীড়া পরিষদের প্রথম নারী পরিচালক হলেন লাবনী চাকমা

 


জাতীয় ক্রীড়া পরিষদের প্রথম নারী পরিচালক হিসেবে যোগ দিয়েছেন বিসিএস প্রশাসন ক্যাডারের ২৫তম ব্যাচের কর্মকর্তা লাবনী চাকমা। আজ বৃহস্পতিবার নতুন কর্মস্থলে যোগ দিলে তাকে স্বাগত জানান পরিষদের কর্মকর্তা-কর্মচারীরা।

এরআগে লাবনী চাকমা  পরিকল্পনা মন্ত্রণালয়ের পরিচালক (বিপিপিএ) হিসেবে দায়িত্ব পালন করেছেন। তার আগে তিনি রাষ্ট্রপতির কার্যালয়ে উপসচিব (সংযুক্ত) ছিলেন।

রাঙ্গামাটি সদর উপজেলার লাবনী চাকমা ব্যক্তি জীবনে এক ছেলে এক মেয়ের মা।

নতুন কর্মস্থলে যোগদানের প্রতিক্রিয়ায় লাবনী চাকমা বলেন, ‘যখন আমাকে এখানে পদায়ন করা হয়, তখন মনে হয়েছিল ক্রীড়াঙ্গন সম্পর্কে আমার কিছুই তো খোঁজখবর রাখা হয় না, গিয়ে কীভাবে কাজ করবো এমন একটা টেনশন ছিল। তারপরও আমি খুব আনন্দিত খেলাধুলা নিয়ে কাজ করার সুযোগ পেয়ে।

 

এআই আদিবাসী জাতিগোষ্ঠীকে বিকৃতভাবে উপস্থাপন করছে

 


কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তা (এআই) আদিবাসী জাতিগোষ্ঠীকে প্রায়ই বিকৃতভাবে বা ভুলভাবে উপস্থাপন করছে। গুগলেইনডিজেনাস পিপললিখে খোঁজা হলে মাঝেমধ্যে এমন ছবি দেখানো হয়, যা তাদেরআদিম’, ‘বন্য’, ‘বর্বর’, ‘জংলিহিংস্রআকারে উপস্থাপন করে।

সোমবার (১১ আগস্ট) ঢাকার মুক্তিযুদ্ধ জাদুঘর মিলনায়তনে ‘আদিবাসী নারীর অধিকার রক্ষা ভবিষ্যৎ গড়ার লড়াইয়ে আধুনিক প্রযুক্তির ভূমিকাশীর্ষক আলোচনা সভায় বক্তারা এমন অভিযোগ করেন। বাংলাদেশ আদিবাসী নারী নেটওয়ার্ক সভার আয়োজন করে।

আলোচনা সভায় দৈনিক আমাদের সময়ের সম্পাদক আবু সাঈদ খান বলেন, ‘এআইয়ের কাছ থেকে আমরা যেসব তথ্য পাব, সেটা ততক্ষণ পর্যন্ত ভুলে ভরা থাকবে, যতক্ষণ না আমরা সঠিক তথ্য সন্নিবেশিত করতে পারি। আদিবাসী নারী কর্মীদের এই তথ্য সন্নিবেশিত করার দায়িত্ব পালন করতে হবে।

বাংলাদেশ আদিবাসী ফোরামের সাধারণ সম্পাদক সঞ্জীব দ্রং বলেন, ‘পুরুষতন্ত্র দিন দিন ভয়াবহ হয়ে উঠছে। অপর দিকে বিভিন্ন পন্থায় নারীকে বৈষম্যের শিকার হতে হচ্ছে। সম্পদ বিভিন্ন সামাজিক সেবা দেওয়ার ক্ষেত্রে আদিবাসী নারীদের অধিকার নিশ্চিত করতে হবে। সম্পদের ব্যবহার সিদ্ধান্ত গ্রহণেও তাদের অধিকার নিশ্চিত করা জরুরি।’

মানুষের জন্য ফাউন্ডেশনের পরিচালক বনশ্রী মিত্র বলেন, ‘নারীর প্রতি সহিংসতার ঘটনা ঘটলেও অনেকে এগিয়ে আসেন না। একজন সংখ্যালঘু সম্প্রদায়ের প্রতিনিধি হিসেবে আমরা যখন কোনো সহিংসতার শিকার হই, তখন সেটা বলতে লজ্জা পাই। কিন্তু মূলধারার মানুষের সেই লজ্জাও আমরা দেখি না। এই মানসিকতার পরিবর্তন দরকার। দেশকে এগিয়ে নিতে হলে সব শোষণবঞ্চনাকে পেছনে ফেলে একসাথে এগিয়ে যেতে হবে।

আলোচনায় অংশ নিয়ে বাংলাদেশ মহিলা পরিষদের পরিচালক জনা গোস্বামী বলেন, ‘আদিবাসী জাতিগোষ্ঠীর নারীরা দুভাবে প্রান্তিক। প্রথমত তাঁরা নারী, এরপর তাঁরা আদিবাসী। অনেক কিছু এখন গণমাধ্যমে আসছে না। অনেক কিছু সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম থেকে পাওয়া যাচ্ছে।’

বাংলাদেশ আদিবাসী নারী নেটওয়ার্কের সহসভাপতি লালসা চাকমার সভাপতিত্বে আলোচনা সভায় অন্যান্যের মধ্যে বক্তব্য দেন মানুষের জন্য ফাউন্ডেশনের ইয়ুথ অ্যান্ড সোশ্যাল কোহেসনের প্রধান ওয়াসিউর রহমান, বাংলাদেশ আদিবাসী নারী নেটওয়ার্কের সহসাধারণ সম্পাদক হেলেনা তালাং। সভা শেষে সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠান পরিবেশন করে এফ মাইনর, জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ের সাংস্কৃতিক দল আরফি সহ বিভিন্ন জাতিগোষ্ঠীর শিল্পীরা।

© all rights reserved - Janajatir Kantho