ক্ষুদ্র নৃগোষ্ঠী নয়, আদিবাসী পরিচয়ের স্বীকৃতি দাবি

 


ভাষা-সংস্কৃতির সংরক্ষণ, বিকাশ, অধিকার বৈচিত্র্য রক্ষায় ক্ষুদ্র নৃগোষ্ঠী নয়, আদিবাসী পরিচয়ের স্বীকৃতি দাবি করেছেন সাঁওতালসহ বিভিন্ন জাতিগোষ্ঠীর মানুষেরা। শনিবার গাইবান্ধা জেলা শিল্পকলা একাডেমি মিলনায়তনেআদিবাসী-বাঙালি যুব মিলনমেলা সাংস্কৃতিক উৎসবেবক্তারা এই দাবি জানান।

ইউরোপীয় ইউনিয়ন, ফ্রি প্রেস আনলিমিটেড আটিকেল নাইনটিন এর সহযোগিতায় বেসরকারী উন্নয়ন সংস্থা অবলম্বন এই উৎসবের আয়োজন করে। উৎসবের স্লোগান ছিল, ‘অধিকার, জীবিকা সংস্কৃতি রক্ষায় আদিবাসী-বাঙালি যুব মিলি একতায়

শিরিন আখতারের সঞ্চালনা ইয়ুথ লিডার ললিতা কিস্কুর সভাপতিত্বে অনুষ্ঠানে স্বাগত বক্তব্য দেন অবলম্বনের নির্বাহী পরিচালক প্রবীর চক্রবর্তী।

আলোচনায় অংশ নেন গাইবান্ধা জেলা প্রশাসকের প্রতিনিধি অতিরিক্ত জেলা প্রশাসক (রাজস্ব) মো. জসিম উদ্দিন চৌধুরী, সমাজসেবা অধিদপ্তর গাইবান্ধার উপ-পরিচালক মো. ফজলুল হক, যুব উন্নয়ন অধিদপ্তরের উপ-পরিচালক মো. মাহফুজার রহমান, উদীচী জেলা সভাপতি অধ্যাপক জহুরুল কাইয়ুম, গাইবান্ধা প্রেসক্লাব সভাপতি অমিতাভ দাশ হিমুন, এনজিও বিষয়ক কনসালটেন্ট সালমা পারভীন, ইয়ুথ লিডার স্মরণিকা মার্ডি প্রমুখ।

আলোচকরা বলেনআদিবাসী সম্পর্কে জনসাধারণের মধ্যে বিভ্রান্তি রয়েছে। জনসাধারণ আদিবাসী এবং দলিত কারা তা জানে না। তাদের নিজস্ব রীতিনীতি, মূল্যবোধ, খাদ্যাভ্যাস, সামাজিক কার্যকলাপ, চিকিৎসা ব্যবস্থা, বিবাহ ব্যবস্থা এবং অন্যান্য সাংস্কৃতিক কর্মকান্ড রয়েছে।আদিবাসীজনগোষ্ঠীকে রক্ষায় বাঙালি জনগোষ্ঠীকে আরও সংবেদনশীল হতে হবে।

এর আগে সকাল ১০টায় আদিবাসীদের অধিকার আদায়ের জন্য বিভিন্ন দাবি সম্বলিত ব্যানার, ফেস্টুন হাতে তিন শতাধিক সাঁওতালসহ অন্যান্য জাতিগোষ্ঠীর যুব নারী-পুরুষ তাঁদের ঐতিহ্যবাহী পোশাকে শোভাযাত্রায় অংশ নেয়। জেলা শিল্পকলা একাডেমি থেকে শোভাযাত্রাটি বের হয়ে শহরের প্রধান প্রধান সড়ক প্রদক্ষিণ করে আবারও শিল্পকলা একাডেমিতে এসে শেষ হয়।

উপার্জনক্ষম ব্যক্তিকে হারিয়ে দিশেহারা সেই গারো পরিবার

 


শেরপুরের ঝিনাইগাতীতে একমাত্র উপার্জনক্ষম ব্যক্তিকে হারিয়ে দিশেহারা হয়ে পড়েছে এফিলিস হাগিদকের পরিবার। গত মঙ্গলবার (২০ মে), রাত সাড়ে দশটার দিকে সিএনজি অটোরিকশায় কাজ শেষে এফিলিস স্থানীয় আরও তিনজনকে সঙ্গে নিয়ে বাড়ি ফিরছিলেন। বাড়ির কাছাকাছি পৌঁছালে গজনী এলাকায় সড়কে দাঁড়িয়ে থাকা বন্য হাতির দল তাদের সামনে পড়ে।

এসময় সাথের তিনজন দৌঁড়ে পালিয়ে গেলেও এফিলিস হাগিদক পালাতে পারেননি। এসময় একটি হাতি তাকে শুড় দিয়ে পেঁচিয়ে আছাড় দিলে সেখানেই তার মৃত্যু হয়। নিহত এফিলিস হাগিদক ছিলেন পরিবারের একমাত্র উপার্জনক্ষম ব্যক্তি। তাঁর মৃত্যুতে দিশেহারা হয়ে পড়েছে পরিবার।

নিহত এফিলিস হাদিগক (৪৫) বড় গজনি অবকাশ কেন্দ্র এলাকার বাসিন্দা। তিনি দিনমজুর হিসেবে কাজ করতেন। তাঁর উপার্জনেই চলত স্ত্রী ও দুই সন্তানের সংসার।

এফিলিসের স্ত্রী প্রীতিনাস হাদিমা বলেন, ‘দিনমজুরির কাজ করে যে টাকা-পয়সা পেত, তা দিয়ে কোনো রকম সংসার চলত। কিন্তু স্বামীর মৃত্যুর পর এখন ছেলেমেয়ে নিয়ে কীভাবে চলবো? সংসারইবা কীভাবে চলবে? ছেলেমেয়ের লেখাপড়া খরচ কীভাবে জোগাড় হবে?’

কাংশা ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান মো. আতাউর রহমান বলেন, একমাত্র উপার্জনক্ষম ব্যক্তির মৃত্যুতে পরিবারটি অসহায় হয়ে পড়েছে। সরকারি-বেসরকারি সহায়তায় তাদের পাশে দাঁড়ানো প্রয়োজন।

বন বিভাগের গজনি বিট কর্মকর্তা মো. সালেহিন নেওয়াজ জানান, ক্ষতিপূরণ পেতে প্রয়োজনীয় কাগজপত্রসহ আবেদন ময়মনসিংহ বিভাগীয় কার্যালয়ে পাঠানো হয়েছে। তিনি আশা করছেন, দ্রুতই নিহতের পরিবারকে তিন লাখ টাকার ক্ষতিপূরণের চেক দেওয়া হবে।

আদিবাসী তরুণীদের পারফর্মেন্সে প্রেসিডেন্ট কাপ টেবিল টেনিসে চ্যাম্পিয়ন সেনাবাহিনী

 


দুই আদিবাসী তরুণীর অনবদ্য পারফর্মেন্সে প্রেসিডেন্ট কাপ টেবিল টেনিসের দ্বিতীয় দিনে বাংলাদেশ টেবিল টেনিস অনূর্ধ্ব-১৯ বালিকা দলগত বিভাগে চ্যাম্পিয়ন হয়েছে বাংলাদেশ সেনাবাহিনী। শুক্রবার শহীদ তাজউদ্দিন আহমেদ উডেনফ্লোর জিমন্যাশিয়ামে এ খেলা অনুষ্ঠিত হয়।

খই সাই মারমা ও রেশমি তঞ্চঙ্গ্যা বালিকা বিভাগের শীর্ষ র‍্যাঙ্কিংধারী। তবে দলগত খেলায় ঐশী রহমানও রেখেছেন সমান অবদান। ফাইনালে তারা রানার্সআপ উত্তরা টেবিল টেনিস একাডেমির বিপক্ষে ৩-০ সেটে বিজয়ী হয়েছে।

উত্তরা টেবিল টেনিস দলের সদস্যরা হলেন মুসরাত জান্নাত সিগমা, লাবনী দত্ত, শ্রাবন্তী দেবনাথ রাণী ও নুসরাত জাহান অনন্যা।

টুর্নামেন্টের অপর সেমিফাইনালিস্ট হলো বাংলাদেশ জেল টেবিল টেনিস দল এবং জেবিএল ৭১।

 

খুলনায় মুন্ডা ভাষা সংরক্ষণে মতবিনিময় সভা

 


মুন্ডা ভাষা সংরক্ষণে মতবিনিময় সভা করেছে আন্তর্জাতিক মাতৃভাষা ইনস্টিটিউট শিক্ষা মন্ত্রণালয়। শুক্রবার (২৩ মে) বিকাল ৩টায় খুলনার কয়রা উপজেলার ২নং কয়রা নলপাড়া মুন্ডা কমিউনিটিতে মতবিনিময় সভা অনুষ্ঠিত হয়।

মাতৃভাষা ইনস্টিটিউট শিক্ষা মন্ত্রণালয়ের পরিচালক অধ্যাপক . মুহাম্মদ আসাদুজ্জামানের সভাপতিত্বে অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথি ছিলেন দুর্নীতি দমন কমিশন ঢাকার কমিশনার (তদন্ত) মিঞা মুহাম্মদ আলি আকবার আজিজী। বিশেষ অতিথি ছিলেন খুলনা বিশ্ববিদ্যালয়ের ইংরেজি ডিসিপ্লিন অধ্যাপক মো. সামিউল হক, মাতৃভাষা ইনস্টিটিউট শিক্ষা মন্ত্রণালয়ের অতিরিক্ত পরিচালক (প্রশাসনঅর্থ প্রশিক্ষণ) আবুল কালাম উপজেলা নির্বাহী অফিসার রুলী বিশ্বাস।

মতবিনিময় সভায় খুলনা জেলা জাতীয় আদিবাসী পরিষদের সাধারণ সম্পাদক নিরাপদ মুন্ডা, আদিবাসী ফোরামের খুলনা জেলা আহ্বায়ক বলাই কৃষ্ণ মুন্ডা, সাধনা মুন্ডাকবিতা মুন্ডা, শায়ন্তী মুন্ডা, সুব্রত মুন্ডা প্রমুখ মতামত ব্যক্ত করেন

এছাড়াও মতবিনিময় সভায় কয়রা উপজেলার বিভিন্ন এলাকার আদিবাসী মু্ডা মাহাতো পরিবারের সদস্যরা উপস্থিত ছিলেন।

জানা গেছে, খুলনার কয়রা উপজেলার তিনটি ইউনিয়নের কয়েকটি গ্রামে আদিবাসী মুন্ডা জনগোষ্ঠীর দেড় হাজারের বেশি মানুষের বসবাস। মুন্ডাদের নিজস্ব ভাষামুন্ডারি কিন্তু এর কোনো লিখিত রূপ নেই, কালের বিবর্তনে হারিয়ে গেছে বর্ণমালা। শুধু মুখে মুখে প্রচলিত কথ্য ভাষাও আজ বিলুপ্তির পথে।

মতবিনিময় সভায় বক্তরা মুন্ডা জনগোষ্ঠীর ভাষা সংরক্ষণে পদক্ষেপ গ্রহণের উপর জোরারোপ করেন। যেন মুন্ডাদের ভবিষ্যৎ প্রজন্ম ভাষা ও সংস্কৃতির সঙ্গে পরিচিত হতে পারে।

© all rights reserved - Janajatir Kantho