খাগড়াছড়িতে আদিবাসী কিশোরীর মেডিকেল রির্পোটে ধর্ষণের আলামত মেলেনি বলে জানিয়েছে গঠিত মেডিকেল বোর্ড। মঙ্গলবার রাত সাড়ে আটটার দিকে খাগড়াছড়ির সিভিল সার্জন ছাবের আহম্মেদের কাছে তারা প্রতিবেদন জমা দেন।
সংশ্লিষ্ট চিকিৎসকদের সূত্রে জানা গেছে, সিভিল সার্জনের কাছে জমা দেওয়া ওই প্রতিবেদনে ধর্ষণের পরীক্ষার ১০টি সূচকের সব কটিতে স্বাভাবিক লেখা রয়েছে। এর অর্থ ধর্ষণের কোনো আলামত নেই।
ধর্ষণের আলামত পরীক্ষার চিকিৎসক দলের নেতৃত্ব দিয়েছেন খাগড়াছড়ি আধুনিক সদর হাসপাতালের চিকিৎসক গাইনী বিশেষজ্ঞ ডা. জয়া চাকমা। তিন সদস্যের টিমে হাসপাতালের মেডিকেল অফিসার মোশারফ হোসেন ও নাহিদা আক্তার ছিলেন।
গণমাধ্যমকে জয়া চাকমা বলেন, ‘আমরা মেডিকেলে রির্পোট জমা দিয়েছি। সব পরীক্ষানিরীক্ষা করেছি। কিন্তু আসলে ধর্ষণের কোন আলামত পাইনি।’
এদিকে, সিঙ্গীনালার আদিবাসী কিশোরীর ধর্ষণের মেডিকেল রিপোর্টকে মনগড়া বলছেন আদিবাসী নেতারা। জুম্ম ছাত্র-জনতার মুখপাত্র কৃপায়ন ত্রিপুরা বলেন, ‘এটি সরকারের একটি পরিকল্পিত মনগড়া প্রতিবেদন, আপনারা দেখলেই বুঝতে পারবেন। পার্বত্য চট্টগ্রামে ধর্ষণের পরীক্ষার প্রতিবেদন এত দ্রুত কখনো দেওয়া হয়েছে কি না, তা আমাদের জানা নেই। আর বিভিন্নজন সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে নানাভাবে ভুক্তভোগী কিশোরীর ছবি দিচ্ছেন, এটিও একটি অপরাধ। আমরা এর সুষ্ঠু বিচার চাই।’
জাতীয় নাগরিক পার্টির সদ্য সাবেক কেন্দ্রীয় নেতা অলিক মৃ বলেন, ‘তনু, মুনিয়ার মেডিকেল রিপোর্ট কেমন ছিল? মনে আছে? ঠিক খাগড়াছড়ির ধর্ষণের রিপোর্টও সেভাবে আসছে।’
আইনজীবী সায়ক চাকমা বলেন, ‘যদি বিশ্বাস রাখি যে আইন নিজস্ব গতিতে চলবে, সেক্ষেত্রে এই অপরাধ সংঘটিত হয়েছে কি হয় নাই, এ নিয়ে মেডিকেল রিপোর্ট হবে। আর এই রিপোর্ট প্রথমে যাবে তদন্তকারী সংস্থার কাছে। কিন্তু তা না করে এই রিপোর্ট প্রথমেই গিয়েছে সাংবাদিকদের কাছে। এইসূত্রে মেডিকেল রিপোর্টটি স্বাভাবিকভাবেই তার বিশ্বাসযোগ্যতা হারিয়েছে।’
যোগ করে তিনি আরও বলেন, ‘রিপোর্টটি দেখিয়ে যারা বলার চেষ্টা করছেন, যে ঘটনা আদৌ ঘটে নাই, তারা স্পষ্ট এবং সচেতনভাবেই মিথ্যা তথ্য উপস্থাপনের মাধ্যমে ঘটনাটিকে ভুয়া প্রমাণ করতে চাচ্ছেন। এর মাধ্যমে ধর্ষণের ঘটনা যে আসলেই ঘটেছে, সেটাই প্রতীয়মান হয়।’
এরআগে, গত ২৩ সেপ্টেম্বর খাগড়াছড়িতে অজ্ঞাত তিন আসামির বিরুদ্ধে আদিবাসী কিশোরীকে দলবদ্ধ ধর্ষণের অভিযোগ আনা হয়। পরে এই ঘটনায় শয়ন শীল নামে এক তরুণকে আটক করে রিমান্ডে নেওয়া হয়। অন্য দুই আসামি গ্রেফতারের দাবিতে বিক্ষোভ, অবরোধে সহিংসতা মারা যায় ৩ জন। খাগড়াছড়িতে জারি করা হয় ১৪৪ ধারা।
কোন মন্তব্য নেই
একটি মন্তব্য পোস্ট করুন