দেশের মাটিতে প্রথমবারের মত কলাগাছের আঁশ দিয়ে তৈরী হচ্ছে পরিবেশবান্ধব, স্বাস্থ্যসম্মত ও পুনঃব্যবহারযোগ্য স্যানিটারি ন্যাপকিন। সম্প্রতি রাঙামাটি শহরের সাবারাং রেস্তোরাঁ মাঠে এই পণ্যের প্রদর্শনী হয়েছে। আর এই উদ্যোগের পেছনে রয়েছেন নাউপ্রু মারমা নামের একজন আদিবাসী নারী।
এ প্রকল্প বাস্তবায়ন করছে বেসরকারি উন্নয়ন সংস্থা উইমেন্স এডুকেশন ফর অ্যাডভান্সমেন্ট (ইউভ)। নাউপ্রু মারমা (উইভ) এর নির্বাহী পরিচালক ও জেলা পরিষদের সদস্য।
রাঙামাটি শহরের রাজবাড়ী এলাকায় ছোট পরিসরে শুরু হলেও এটি ইতোমধ্যে ব্যাপক সাড়া ফেলেছে। প্রযুক্তি ব্যবহার করে কলাগাছের আঁশ শুকিয়ে জীবাণুমুক্ত করার পর আল্ট্রাভায়োলেট রশ্মির মাধ্যমে ন্যাপকিন তৈরি করা হচ্ছে। এ কাজে সহযোগিতা করছে আরএসএফ সোশ্যাল ফাইন্যান্স।
সংশ্লিষ্ট সূত্রে জানা গেছে, দীর্ঘ গবেষণা ও স্বাস্থ্যসম্মত কিনা তা পরীক্ষা-নিরীক্ষার পর নারী ও কিশোরীদের জন্য স্যানিটারি ন্যাপকিন তৈরিতে সফলতা পায় ইউভ। এ স্যানিটারি ন্যাপকিন তৈরির মূল উদ্দেশ্য কম দামে পাহাড়ে নারী ও কিশোরীদের মাঝে পুনঃব্যবহারযোগ্য স্যানিটারি ন্যাপকিন পৌঁছে দেওয়া।
ইউভের নির্বাহী পরিচালক ও জেলা পরিষদের সদস্য নাউপ্রু মারমা বলেন, ‘বিশ্বব্যাপী স্যানিটারি ন্যাপকিনের চাহিদা রয়েছে। ভারতে আহমেদাবাদে কলাগাছের আঁশ দিয়ে ন্যাপকিন তৈরির প্রযুক্তি দেখে এসেছি। পাহাড়ে কলাগাছ সহজলভ্য হওয়ায় এখানকার নারীরা এ উদ্যোগের মাধ্যমে স্বল্পমূল্যে স্বাস্থ্যসম্মত ন্যাপকিন পাবেন। একই সঙ্গে পিছিয়ে পড়া নারীরা অর্থনৈতিকভাবে স্বাবলম্বী হওয়ার সুযোগ পাবেন।’
বিশেষজ্ঞরা বলছেন, এ প্রযুক্তি সফলভাবে বাস্তবায়ন হলে পার্বত্য চট্টগ্রামের নারী ও কিশোরীদের স্বাস্থ্য সুরক্ষা নিশ্চিত হবে এবং নতুন কর্মসংস্থানও তৈরি হবে। বড় কোনো প্রতিষ্ঠান প্রযুক্তি নির্ভর সহায়তা দিলে দেশের বাজারের চাহিদা পূরণের পাশাপাশি বিদেশেও রপ্তানি সম্ভব।
প্রকল্প কর্তৃপক্ষ জানিয়েছে, বাংলাদেশ স্ট্যান্ডার্ডস অ্যান্ড টেস্টিং ইনস্টিটিউশনের (বিএসটিআই) অনুমোদন পাওয়ার পর এসব স্যানিটারি ন্যাপকিন বাজারজাত করা হবে।
কোন মন্তব্য নেই
একটি মন্তব্য পোস্ট করুন