হালুয়াঘাটে পূজা দেখতে বেরিয়ে গারো কিশোরী ধর্ষণের শিকার

 


ময়মনসিংহের হালুয়াঘাটে পূজা দেখতে বেরিয়ে এক গারো কিশোরী ধর্ষণের শিকার হয়েছে বলে খবর পাওয়া গেছে। সোমবার রাতে উপজেলার ২ নং যুগলী ইউনিয়নের একটি গ্রামে ঘটনা ঘটে।

হালুয়াঘাট থানার ওসি হাফিজুল ইসলাম হারুণ গণমাধ্যমকে তথ্য নিশ্চিত করেছেন। সর্বশেষ খবর পাওয়া পর্যন্ত ঘটনায় মামলা দায়েরের প্রস্তুতি চলছে বলে জানিয়েছেন পুলিশ।

পুলিশ ভুক্তভোগী জানান, সোমবার সকাল ১০টার দিকে পূজা দেখার জন্য মোবাইল ফোনে নবম শ্রেণির ওই কিশোরীকে বাড়ি থেকে ডেকে নেন এক যুবক। সারাদিন পূজা দেখে রাতে তাকে অটোরিকশায় তুলে দেন ওই যুবক।

বাড়ি ফেরার পথে অটোরিকশা চালক নির্জন স্থানে নিয়ে ওই কিশোরীকে ধর্ষণ করেন বলে দাবি ভুক্তভোগীর। রাত ১১টার দিকে রাস্তার পাশে তাকে ফেলে রেখে চলে যান অটোরিকশা চালক। পরে ভুক্তভোগী বাড়িতে গিয়ে ঘটনাটি জানালে পুলিশের সহায়তা নেন স্বজনরা।

ভুক্তভোগী কিশোরীর মা বলেন, ‘ওই যুবক আমার মেয়ের পূর্ব পরিচিত। পূজা দেখার জন্য মেয়েকে সে ডেকে নেয়। ফেরার পথে তাকে জোর করে অটোরিকশায় তুলে দিলে ঘটনা ঘটে। অটোরিকশা চালক ঘটনায় জড়িত। আমরা বিচার চাই।

ওসি হাফিজুল ইসলাম বলেন, ‘ ঘটনায় আপাতত একজনকে আসামি করা হচ্ছে। অটোরিকশাটি জব্দ করা হয়েছে। তদন্তে আরও কারো সংশ্লিষ্টতা পাওয়া গেলে মামলায় অন্তর্ভুক্ত করা হবে।

 

‘খাগড়াছড়ির ঘটনা ন্যায়বিচারের চেতনাকে মারাত্মকভাবে প্রশ্নবিদ্ধ করেছে’

 


খাগড়াছড়িতে আদিবাসী কিশোরীর উপর সংঘটিত নৃশংস গণধর্ষণ পরবর্তী সময়ে জাতিগত সহিংসতার ঘটনায় শোক ক্ষোভ প্রকাশ করেছে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় সাংস্কৃতিক সংসদ (ডিইউসিএস) আজ সোমবার (২৯ সেপ্টেম্বর) গণমাধ্যমে পাঠানো এক বিবৃতিতে সংগঠনটি এই প্রতিবাদ জানায়।

ডিইউসিএস-এর সভাপতি নাফিয়া ফারজানা অমিয়া সাধারণ সম্পাদক রওনক জাহান রাকামনি স্বাক্ষরিত এক বিবৃতিতে এইসব তথ্য জানানো হয়।

উদ্বেগ প্রকাশ করে বিবৃতিতে বলা হয়, ধর্ষণ পরবর্তী সময়ে সৃষ্ট জাতিগত সহিংসতা আমাদের মানবিক মূল্যবোধ, সামাজিক নিরাপত্তা কাঠামো এবং ন্যায়বিচারের চেতনাকে মারাত্মকভাবে প্রশ্নবিদ্ধ করেছে। ধরণের অপরাধ শুধু ব্যক্তির নয়, গোটা সমাজের বিরুদ্ধে সংঘটিত এক ঘৃণ্য আক্রমণ।

ডিইউসিএস মনে করে, সহিংসতার প্রতিক্রিয়া কখনোই সহিংসতা হতে পারে না।

সংগঠনটি অপরাধীদের দ্রুততম সময়ে আইনের আওতায় এনে সর্বোচ্চ দৃষ্টান্তমূলক শাস্তির পাশাপাশি ক্ষতিগ্রস্থ জনগোষ্ঠীর নিরাপত্তা, মর্যাদা ন্যায়বিচার নিশ্চিতে কার্যকর ব্যবস্থা নেওয়ার আহ্বান জানান।

খাগড়াছড়ির পর রাঙামাটি-বান্দরবানেও সড়ক অবরোধের ঘোষণা

 


খাগড়াছড়ির পর এবার দাবি পূরণ না হওয়া পর্যন্ত রাঙামাটি বান্দরবান জেলাতেও অনির্দিষ্টকালের জন্য জুম্ম ছাত্র-জনতার ব্যানার থেকে সড়ক অবরোধের ডাক দেওয়া হয়েছে। রোববার (২৮ সেপ্টেম্বর) সন্ধ্যায় সংগঠনটির পাঠানো এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে এই তথ্য জানানো হয়।

বিবৃতিতে জানানো হয়, গত ২৭ সেপ্টেম্বর থেকে খাগড়াছড়িতে চলমান শান্তিপূর্ণ অনির্দিষ্টকালের সড়ক অবরোধ সততার সাথে চলছে। কিন্তু গত কয়েকদিনে খাগড়াছড়ি শহরজুড়ে সেনাবাহিনীর ব্যাপক তল্লাশি, মারধর ধারপাকড়ের ঘটনার প্রমাণ পাওয়া গেছে, যা কখনো গ্রহণযোগ্য নয়। তদুপরি গুইমারায় জুম্ম ছাত্র-জনতার ওপর সেনাবাহিনীর গুলিবর্ষণ এবং সেটেলারদের দ্বারা দোকানপাট বাড়িঘরে লুটপাট অগ্নিসংযোগের নির্মম প্রতিবেদন এসেছে। সেনা সেটেলারদের হামলায় চার জন নিহত এবং বহুজন আহত হয়েছেন।

প্ল্যাটফর্মটির মাধ্যমে আন্দোলনকারীরা এই ঘটনার তীব্র নিন্দা ও প্রতিবাদ জানিয়েছেন। একইসাথে দাবি পূরণ না হওয়া পর্যন্ত তিন পার্বত্য জেলায় অনির্দিষ্টকালের জন্য সড়ক অবরোধ ও সকল পর্যটন কার্যক্রম সাময়িক বন্ধের ঘোষণা দিয়েছেন।

বিবৃতিতে ৮ দফা দাবি তুলে ধরা হয়। দাবিগুলো হল—

১. আলোচনার সময় ও পরবর্তী সময়ে যেকোনো হামলা, সহিংসতা ও ভীতি প্রদর্শন বন্ধে আইনি নিশ্চয়তা দিতে হবে।

২. ধর্ষণ মামলার অবশিষ্ট দুই আসামিকে দ্রুত গ্রেপ্তার ও দৃষ্টান্তমূলক শাস্তি নিশ্চিত করতে হবে। ইতোমধ্যে গ্রেপ্তারকৃত আসামি চয়ন শীলের বিচার দ্রুত সম্পন্ন করে রায় কার্যকর করতে হবে। ভুক্তভোগীকে যথাযথ ক্ষতিপূরণ ও পূর্ণ পুনর্বাসন দিতে হবে।

৩. ২৭ ও ২৮ সেপ্টেম্বর খাগড়াছড়ি ও গুইমারায় লুটপাট, অগ্নিসংযোগ ও গুলিবর্ষণের ঘটনাসহ সকল ঘটনার নিরপেক্ষ তদন্ত করে ৩০ দিনের মধ্যে অফিশিয়াল প্রতিবেদন দিতে হবে।

৪. হামলা ও অগ্নিসংযোগে ক্ষতিগ্রস্ত দোকানপাট ও বাড়িঘরের পূর্ণ ক্ষতিপূরণ রাষ্ট্রীয়ভাবে নিশ্চিত করতে হবে এবং আহতদের সুচিকিৎসার দায়িত্ব সরকারকে নিতে হবে।

৫. শান্তিপূর্ণ অবরোধ ক্ষুণ্ণ করা বা আদিবাসীদের ব্যবসায়িক প্রতিষ্ঠান ক্ষতিগ্রস্ত হলে ক্ষতিপূরণ ও ন্যায়সঙ্গত প্রতিকার দিতে হবে।

৬. চলমান আন্দোলনের প্রেক্ষিতে আটক সব জুম্ম ছাত্র-জনতাকে অবিলম্বে মুক্তি দিতে হবে এবং সাম্প্রতিক হামলার ঘটনায় স্বচ্ছ তদন্ত নিশ্চিত করতে হবে।

৭. আলোচনা টেবিলে অংশ নেয়া প্রতিনিধি ও অংশগ্রহণকারী সকলের নিরাপত্তা নিশ্চিত করতে হবে।

৮. জারিকৃত ১৪৪ ধারা বাতিল করতে হবে।

এদিকে, আহতদের চিকিৎসা ও নিহতদের সৎকারের সুবিধার্থে ঢাকা-খাগড়াছড়ি ও চট্টগ্রাম খাগড়াছড়ি সড়কে দুপুর ১২টা থেকে অবরোধ শিথিল করা হয়েছে। একই সাথে খাগড়াছড়িতে জেলা প্রশাসন যেসব জায়গায় ১৪৪ ধারা জারি করেছিলো, তাও অব্যাহত আছে।

© all rights reserved - Janajatir Kantho