পিসিপি চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয় শাখার কাউন্সিল সম্পন্ন

 


বৃহত্তর পার্বত্য চট্টগ্রাম পাহাড়ি ছাত্র পরিষদ (পিসিপি) চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয় শাখার ২১তম কাউন্সিল সম্পন্ন হয়েছে। শনিবার (৩১ মে), দুপুর ১টায় বিশ্ববিদ্যালয়ের কেন্দ্রীয় ছাত্র সংসদ (চাকসু) হল রুমে এ কাউন্সিল হয়।

পিসিপি চবি শাখার সভাপতি রোনাল চাকমার সভাপতিত্বে ও সাধারণ সম্পাদক ভুবন চাকমার সঞ্চালনায় কাউন্সিল অধিবেশনে বক্তব্য রাখেন সংগঠনটির কেন্দ্রীয় সভাপতি অমল ত্রিপুরা, চট্টগ্রাম মহানগর শাখার সভাপতি সোহেল চাকমা, চবি শাখার সাংগঠনিক সম্পাদক সুদর্শন চাকমা, হিল উইমেন্স ফেডারেশনের কেন্দ্রীয় সদস্য দয়াসোনা চাকমা।

কাউন্সিলে পিসিপি’র কেন্দ্রীয় সভাপতি অমল ত্রিপুরা বলেন, পার্বত্য চট্টগ্রামকে নিয়ে নানা অপপ্রচার চালানো হচ্ছে, নানা অপৎতপরতা রয়েছে, বিশেষ মহলের নির্দেশনায় খুন অপহরণ হত্যা, দমন-পীড়ন, জেল-জুলুম অব্যাহত রেখেছে। এটি পাহাড়িদের ওপর রাষ্ট্রের জাতিগত নিপীড়নের অংশ। রাষ্ট্রের জাতি ধ্বংসের কার্যকলাপের বিরুদ্ধে সকলকে সতর্ক থাকতে হবে, সচেতন হতে হবে, এই অন্যায়ের বিরুদ্ধে প্রতিরোধ সংগ্রাম গড়ে তুলতে হবে।

হিল উইমেন্স ফেডারেশন কেন্দ্রীয় কমিটির সদস্য দয়াসোনা চাকমা বলেন, পাহাড়ি ছাত্র পরিষদের লড়াই সংগ্রাম কখনো মসৃণ ছিলো না। পাহাড়ি ছাত্র পরিষদের আন্দোলন করতে গিয়ে অনেকে শহীদ হয়েছেন। শাসকগোষ্ঠী কর্তৃক অন্যায়ভাবে মামলা, হামলার শিকার হয়েও পিসিপির লড়াই সংগ্রামকে দমাতে পারেনি। পিসিপি তাঁর কাঙ্ক্ষিত লক্ষ্যেই আপোষহীন লড়াই সংগ্রাম করে যাচ্ছে।

চট্টগ্রাম মহানগর শাখার সভাপতি সোহেল চাকমা অভিযোগ করে বলেন, ব্রিটিশ আমল থেকে বর্তমান শাসকরা আমাদের পাহাড়িদের সাথে বিশ্বাসঘাতকতা করেছে। তার একমাত্র কারণ পাহাড়িরা রাজনৈতিকভাবে অগ্রসর এবং সংগঠিত না হওয়ার কারণে। ছাত্রসমাজকে তার দায়িত্ববোধকে অনুধাবন করতে হবে। ছাত্রসমাজকে তার দায়িত্ববোধকে বুকে ধারণ করে জুম্ম জনগণের জাতীয় মুক্তির লক্ষ্যে লড়াই সংগ্রামে সমবেত হতে হবে।

সভাপতি রোনাল চাকমা বলেন, চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ে বহু বছর পর চাকসুতে আমরা কাউন্সিল করছি। এ কাউন্সিল চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ে রাজনৈতিকভাবে তাৎপর্য বহন করছে। বিশ্ববিদ্যালয় জ্ঞান উৎপাদন, বিতরণ ও সম্ভাবনার জায়গা। আমাদের অর্জিত জ্ঞান নিপীড়িত জুম্ম জনগণের কল্যানার্থে পাহাড়ে গিয়ে ব্যয় করতে হবে।

চাকসুতে সংখ্যালঘু জাতিসত্তা বিষয়ক সম্পাদক পদ অন্তর্ভুক্তির দাবি জানিয়ে তিনি আরও বলেন, পার্বত্য চট্টগ্রামসহ সারা দেশের সংখ্যালঘু জাতিসত্তার ভাষা, সংস্কৃতি বিকাশ, চর্চা এবং গবেষণা ও পিছিয়ে পড়া অঞ্চল ও জাতিগোষ্ঠীর শিক্ষার্থীদের প্রতিনিধিত্ব নিশ্চিত করতে চাকসুতে সংখ্যালঘু জাতিসত্তা বিষয়ক পদ অন্তর্ভুক্তি প্রয়োজন। এছাড়া রেসিজম এবং জাতিগত বুলিং প্রতিরোধেও এই সম্পাদক কাজ করতে পারবে।

কাউন্সিলের দ্বিতীয় অধিবেশনে শাখার সাংগঠনিক রিপোর্ট তুলে ধরেন পিসিপি চবি’র সাংগঠনিক সম্পাদক সুদর্শন চাকমা। পুরাতন কমিটি বিলুপ্তি ও প্রস্তাবিত নতুন কমিটি ঘোষণা করেন সদ্য বিদায়ী সভাপতি রোনাল চাকমা। তিনি ভুবন চাকমাকে সভাপতি ও সুদর্শন চাকমাকে সাধারণ সম্পাদক করে ১৯ সদস্য বিশিষ্ট কমিটি ঘোষণা করেন। 

কোন মন্তব্য নেই

© all rights reserved - Janajatir Kantho