‘কারাগারে মারা যাওয়া বম যুবক তথ্য-প্রমাণহীন অভিযোগে আটক ছিলেন’

 


চট্টগ্রামের কেন্দ্রীয় কারাগার হেফাজতে বম যুবক লাল থ্লেং কিমের মৃত্যুর ঘটনায় তীব্র নিন্দা জানিয়েছে ইন্টারন্যাশনাল চিটাগং হিল ট্র্যাক্টস কমিশন (সিএইচটিসি)। সোমবার (১৯ মে), সিএইচটিসি’র তিন কো-চেয়ার সুলতানা কামাল, এলসা স্টামাটোপোলো ও মিরনা কানিংহাম কেইন স্বাক্ষরিত এক বিবৃতিতে এই নিন্দা জানানো হয়। একইসাথে বম জনগোষ্ঠীর উপর পরিকল্পিত নিপীড়ন বন্ধ করার আহ্বান জানিয়েছেন তারা।

বিবৃতিতে উল্লেখ করা হয়, কারাগার হেফাজতে ২৯ বছরের বম যুবক লাল থ্লেং কিমের মৃত্যু সম্পর্কে জানতে পেরে ইন্টারন্যাশনাল চিটাগং হিল ট্র্যাক্টস কমিশন গভীরভাবে মর্মাহত এবং দুঃখিত। লাল থ্লেং কিমকে গত ৭ এপ্রিল ২০২৪ বান্দরবানের রুমার বেথেল পাড়া থেকে গ্রেপ্তার করা হয়। তিনি, ত্রিশ জন নারী ও তিন জন শিশু (এক ও দুই বছর বয়সী) সহ ১২৬ জন বম ব্যক্তির মধ্যে ছিলেন, যারা তথ্য-প্রমাণহীন অভিযোগের ভিত্তিতে যথাযথ প্রক্রিয়া ছাড়াই এক বছরের অধিক সময় ধরে আটক ছিলেন। যাতে স্বচ্ছতা ও আইনগত সত্যতা প্রতিপাদনের অভাব রয়েছে।

সিএইচটিসি জানায়, আজ দুই বছরের অধিক সময় ধরে মাত্র ১২ হাজারের অধিক জনসংখ্যা নিয়ে বম জনগোষ্ঠী পরিকল্পিত মানবাধিকার লংঘন, সামরিক ব্যবস্থার কারণে জাতিগত নির্মূলীকরণের ঝুঁকি, সামরিক বাহিনীর পক্ষের সশস্ত্র গোষ্ঠী কর্তৃক হামলা, এবং গণগ্রেপ্তারের সম্মুখীন হচ্ছে। এই পরিকল্পিত নিপীড়ন তাদের অর্ধেক জনগোষ্ঠীকে বাস্তুচ্যুত করেছে।

সমগ্র বম জাতির এক চতুর্থাংশ ভারতের মিজোরাম রাজ্যে ও মিয়ানমারের চিন রাজ্যে আশ্রয় চাইতে বাধ্য হয়েছে। যেখানে তারা চরম অনিশ্চয়তা ও অমানবিক অবস্থার মধ্যে বসবাস করছে। অপরদিকে অবশিষ্টরা চলাচল, কৃষিব্যবসা ও জীবিকার উপর কঠোর নিষেধাজ্ঞার সম্মুখীন হচ্ছে, যা সমগ্র সম্প্রদায়কে একটি দুর্ভিক্ষাবস্থার দিতে যেতে বাধ্য করেছে।

বিবৃতিতে কমিশন কেএনএফের সাথে যুক্ত নয় এমন সকল নিরীহ বম বন্দীদের অবিলম্বে মুক্তি দেওয়া ও তাদের বিরুদ্ধে দায়েরকৃত সকল মামলা প্রত্যাহার এবং পার্বত্য চট্টগ্রামে কার্যত সামরিক শাসন অবসান ও পার্বত্য চুক্তি পূর্ণাঙ্গভাবে বাস্তবায়নে সুনির্দিষ্ট পদক্ষেপ নেওয়া সহ চার দফা সুপারিশ নিশ্চিত করতে অন্তর্বর্তীকালীন সরকারের নিকট অনুরোধ জানিয়েছেন।

কোন মন্তব্য নেই

© all rights reserved - Janajatir Kantho