জিআই স্বীকৃতি পেল মণিপুরী শাড়ি

 


ভৌগোলিক নির্দেশক (জিআই) পণ্যের স্বীকৃতি পেয়েছে মণিপুরী শাড়ি। গত ৩০ এপ্রিল দেশের বিভিন্ন জেলার ২৪টি ভৌগোলিক নির্দেশক পণ্যের মধ্যে মণিপুরী শাড়ি জিআই স্বীকৃতি লাভ করে। স্বীকৃতি প্রাপ্তিতে মণিপুরী তাঁত শিল্পের সাথে জড়িত প্রত্যেকেই উচ্ছ্বসিত।

জানা গেছে, সিলেটের মণিপুরী তাঁতের শাড়ি এবং মণিপুরী জনজাতির ইতিহাস আমাদের দেশে প্রায় ৩শ বছরের অধিক পুরনো। মণিপুরীরা তাদের নিত্যপ্রয়োজনীয় কাপড়, শাড়ি, গামছা, শাল, বিছানার চাদর ফানেক, লাহিঙ, ওড়নাসহ অন্যান্য প্রয়োজনীয় কাপড় নিজেদের জন্য বুনন করে আসছেন।

সাধারণত উজ্জ্বল রঙের দেশীয় সুতায় তৈরি হয় মণিপুরী শাড়ি। এক রঙের, এক থেকে দুই ইঞ্চি হয়ে থাকে শাড়ির পাড়ের চওড়া। পাড়ের রং প্রায় শাড়ির রঙের বিপরীত হতে দেখা যায়। আঁচল, জমিন ও পাড়ে মন্দিরের প্রতিকৃতির পাশাপাশি বিভিন্ন নকশা থাকে।

বুনন শিল্পে দক্ষ মণিপুরী নারীরা প্রয়োজনীয় কাপড় নিজেরাই বুনে থাকেন। প্রায় প্রতিটি মণিপুরী ঘরেই তাঁত রয়েছে। তাদের বুননকৃত শাড়ি ব্যাপক জনপ্রিয়তা পেয়েছে। এর সুনাম এখন বিশ্বব্যাপী ছড়িয়ে পড়েছে।

জিআই স্বীকৃতি প্রাপ্তিতে বাংলা একাডেমির নাট্য সাহিত্য পুরস্কারে ভূষিত লেখক গবেষক নাট্যনির্মাতা শুভাশিস সিনহা বলেন, মণিপুরী শাড়ি এমনিতেই সমাদৃত। এর জিআই সনদ আমাদের জন্য একটি বিশাল অর্জন।

কমলগঞ্জ উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা মাখন চন্দ্র সূত্রধর বলেন, মণিপুরী অধ্যুষিত কমলগঞ্জে সর্বাধিক উৎপাদিত পণ্য মণিপুরী শাড়ী জিআই পণ্যের স্বীকৃতি পাওয়ায় উৎসাহের পাশাপাশি উৎপাদন বৃদ্ধি পাবে। তাঁতিরা আর্থিকভাবে লাভবান হবেন। এছাড়া তাদের জন্য দ্রুত সময়ে প্রশিক্ষণের ব্যবস্থা করা হবে।

ক্রিকেট বল নিক্ষেপে চট্টগ্রাম বিভাগে চ্যাম্পিয়ন চন্দ্র ত্রিপুরা

 


চট্টগ্রাম বিভাগীয় পর্যায়ে প্রাথমিক শিক্ষা প্রতিযোগিতায় ক্রিকেট বল নিক্ষেপে চ্যাম্পিয়ন হয়েছে চন্দ্র ত্রিপুরা। গতকাল চট্টগ্রাম প্রাইমারি ট্রেনিং ইনস্টিটিউট মাঠে এই প্রতিযোগিতা অনুষ্ঠিত হয়।

প্রতিযোগিতা শেষে বিজয়ী চন্দ্র ত্রিপুরার হাতে চট্টগাম বিভাগীয় কমিশনার ড. মোঃ জিয়াউদ্দীন পুরস্কার তুলে দেন।

চন্দ্র ত্রিপুরা কাপ্তাই উপজেলার ৩নং চিৎমরম ইউনিয়নের দুর্গম এলাকায় অবস্থিত চংড়াছড়ি আবাসিক সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের ৫ম শ্রেণীর ছাত্র।

চন্দ্র ত্রিপুরার এই সাফল্যে তাকে কাপ্তাই উপজেলা নির্বাহী অফিসার মোঃ রুহুল আমিন, উপজেলা শিক্ষা অফিসার মোঃ জাহাঙ্গীর আলম, সহকারি শিক্ষা অফিসার আশীষ কুমার আচার্য্য, চংড়াছড়ি আবাসিক সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক মোঃ মনিরুজ্জামান সহ অনেকেই অভিনন্দন জানিয়েছেন।

গণধর্ষণের পর চোখ উপড়ে আদিবাসী নারীকে হত্যার অভিযোগ

 


বান্দরবানের থানচি উপজেলায় চিংমা খিয়াং (২৯) নামের এক আদিবাসী নারীকে গণধর্ষণের পর চোখ উপড়ে হত্যার অভিযোগ উঠেছে। সোমবার (৫ মে) বিকেলে উপজেলার তিন্দু ইউনিয়নের মংখয় পাড়া সংলগ্ন জঙ্গলে এ ঘটনা ঘটে।  

হত্যার শিকার চিংমা খিয়াং তিন্দু ইউনিয়নের ৮ নম্বর ওয়ার্ডের মংখয় পাড়া গ্রামের সুমন খিয়াং এর স্ত্রী। তিনি তিন সন্তানের জননী।

স্থানীয়রা জানান, প্রতিদিনের মতো সোমবার সকালে চিংমা খিয়াং জুমে যান। দুপুরেও বাড়ি না ফেরায় পাড়ার লোকজন মিলে স্বজনরা তাকে খুঁজতে বের হন। এসময় তারা জুমে কোনো কিছু টেনে হিচড়ে নিয়ে যাওয়ার চিহ্ন দেখতে পান। তা অনুসরণ করে খুঁজতে গিয়ে বিকাল আনুমানিক ৩ টার দিকে চিংমা খিয়াং এর লাশ উদ্ধার করে তারা।

স্থানীয়দের ধারণা, চিংমা খিয়াংকে ধর্ষণের পর হত্যা করা হয়েছে। মরদেহে আঘাতের চিহ্ন, চোখ উপড়ে ফেলানো এবং রক্তাক্ত অবস্থায় পাওয়া গেছে বলে জানা গেছে।

পরিবারের লোকজনের সূত্রে জানা যায়, গতকালও (৪ মে) চিংমা খিয়াং নিজেদের জুমে কাজ করতে যান। সেসময় তিনি পথে তিনজন বাঙালি সড়ক নির্মাণ শ্রমিক দেখতে পান। শ্রমিকদের চাহনি এবং ভাবভঙ্গি দেখে ভয় পেয়ে গতকাল চিংমা খিয়াং তাড়াতাড়ি বাড়িতে ফিরে আসেন। তিনি বিষয়টি বাড়ির লোকজনকে জানান। এলাকাবাসীর সন্দেহ, ওই বাঙালি শ্রমিকরাই উক্ত ঘটনা ঘটিয়েছে।

থানচি থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মো. নাসির উদ্দিন মজুমদার জানান, দুর্গম পাহাড়ি এলাকায় এক নারীর মরদেহ পাওয়া গেছে। তবে কে বা কারা কীভাবে তাকে হত্যা করেছে তা এখনও জানা যায়নি। তদন্ত শেষে বিস্তারিত বলা যাবে।

এদিকে, চিংমা খিয়াং হত্যার ঘটনায় তীব্র নিন্দা, প্রতিবাদ এবং অবিলম্বে ধর্ষণকারীদের গ্রেপ্তারপূর্বক যথাযথ শাস্তির দাবি জানিয়েছে পার্বত্য চট্টগ্রাম পাহাড়ী ছাত্র পরিষদ (পিসিপি) ও হিল উইমেন্স ফেডারেশন (এইচডাব্লিউএফ)। এছাড়াও বাংলাদেশ খেয়াং স্টুডেন্টস ইউনিয়ন (বিকেএসইউ) সহ বিভিন্ন সামাজিক, সাংস্কৃতিক সংগঠন এ ঘটনায় প্রতিবাদ জানাচ্ছেন।

© all rights reserved - Janajatir Kantho