বাবা-মাকে বড় ঘর বানিয়ে দিতে চান সাফজয়ী থুইনুই

থুইনুই মারমা

পার্বত্য জেলা রাঙামাটির মেয়ে থুইনুই মারমা। লাল-সবুজের জার্সি গায়ে জড়িয়ে উঁচিয়ে ধরেছেন সদ্য অনুষ্ঠিত হওয়া সাফ অনূর্ধ্ব-১৬ নারী চ্যাম্পিয়নশিপের শিরোপা। ভুটান ও ফাইনালে ভারতের বিপক্ষে টাইব্রেকারে জালে বল পাঠিয়েছিলেন এ কিশোরী। তবে এখানেই থেমে যেতে চান না এই পাহাড়ি কন্যা। এগিয়ে যাওয়ার পথে স্বপ্নপূরণের সঙ্গে মা-বাবার স্বপ্নটাও পূরণ করতে চান।

নেপালে সাফ অনূর্ধ্ব-১৬ নারী চ্যাম্পিয়নশিপের জন্য মাধ্যমিক পরীক্ষায় অংশ নেননি থুইনুই। পরীক্ষার হলে বসতে না পারার আক্ষেপ ঘুচিয়েছেন চ্যাম্পিয়ন হয়ে। বলেছেন, ‘ফাইনাল ম্যাচটা আসলে চ্যাম্পিয়ন হওয়ার লক্ষ্য নিয়েই মাঠে নেমেছিলাম। চিন্তাভাবনা ছিল শিরোপা জিতে দেশে ফিরব। আসলে শেষ মুহূর্তে যখন বাঁশিটা দিল, তখন অনুভূতিটা ছিল অন্যরকম। কারণ আমি এসএসসি পরীক্ষা দেইনি। দেশের হয়ে খেলবো বলে।’

‘যখন শেষ মুহূর্তের বাঁশিটা বাজলো তখন দেশের কথা, মা-বাবার কথাই সবচেয়ে বেশি মনে পড়ছিল। আমি যে পরীক্ষাটা দিতে পারিনি, সেই আক্ষেপটাও ভুলে গিয়েছিলাম। মনে হয়েছে সেটারই ফল পেয়ে গেছি। আফসোস হতো যদি চ্যাম্পিয়ন না হতাম। সেদিক থেকে এখন আর কোনো আফসোস নেই, কারণ এসএসসি পরীক্ষা না দিলেও দেশকে কিছু একটা দিতে পেরেছি।’

পরিবার সম্পর্কে থুইনুই বলেছেন, ‘আমরা তিন বোন, দুই ভাই। আমার বাবা কৃষিকাজ করেন, আর মা বাসায় কাজ করেন। আমার ভাই পড়ালেখা শেষ করেছে, তবে বাসাতেই থাকে। আর বড় দিদির বিয়ে হয়েছে, তিনিও আমাদের সঙ্গেই থাকেন।’

ফুটবলার হওয়ার পেছনেও রয়েছে পরিবারের অবদান। এ নিয়ে থুইনুই জানান, ‘আমার মা-বাবা আমাকে ছোটবেলা থেকেই উৎসাহ দিতেন খেলাধুলার প্রতি। আমাকে এমনও বলতেন যে, লোকে যা বলে বলুক তাতে কিছুই যায় আসে না। মূলত ২০১৮ সাল থেকে আমার খেলাধুলা শুরু হয়।’

‘আমার মা-বাবার জন্য ভবিষ্যতে অনেককিছুই করতে চাই। নিজের স্বপ্নপূরণ করতে চাই। এরমধ্যে একটা স্বপ্ন হচ্ছে নিজের মা-বাবাকে বড় একটি ঘর বানিয়ে দিতে চাই। কারণ আমাদের ঘরটা তেমন ভালো নয়।’

সামনেই আসছে মারমাদের সবচেয়ে বড় উৎসব সাংগ্রাই। এ উপলক্ষে এখন থেকেই প্রস্তুতি নিচ্ছেন থুইনুই। উৎসবমুখর এই সময়টাতে মা-বাবার সঙ্গে থাকতে চান সাফজয়ী এই পাহাড়ি কন্যা। 

স্বাধীনতা পুরস্কার পাচ্ছেন কবি অরণ্য চিরান

স্বাধীনতা পুরস্কার অরণ্য চিরান

জাতীয় পর্যায়ে গৌরবোজ্জ্বল ও কৃতিত্বপূর্ণ অবদানের স্বীকৃতিস্বরূপ স্বাধীনতা পুরস্কার পাচ্ছেন কবি ও লেখক অরণ্য চিরান। সমাজ বা জনসেবায় বিশেষ অবদান রাখার জন্য তিনি এ পুরস্কারের জন্য মনোনীত হয়েছেন।

শুক্রবার মন্ত্রিপরিষদ বিভাগের এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে এ তথ্য জানানো হয়। তিনি ছাড়াও আরো ৯ জন এবার স্বাধীনতা পদক প্রাপ্তির জন্য মনোনীত হয়েছেন।

বাকি পুরস্কারপ্রাপ্তরা হচ্ছেন—স্বাধীনতা ও মুক্তিযুদ্ধে কাজী আব্দুস সাত্তার, বীর মুক্তিযোদ্ধা ফ্লাইট সার্জেন্ট মো. ফজলুল হক (মরণোত্তর) ও বীর মুক্তিযোদ্ধা শহিদ আবু নঈম মো. নজিব উদ্দীন খাঁন (খুররম) (মরণোত্তর), বিজ্ঞান ও প্রযুক্তিতে ড. মোবারক আহমদ খান, চিকিৎসাবিদ্যায় ডা. হরিশংকর দাশ, সংস্কৃতিতে মোহাম্মদ রফিকউজ্জামান, ক্রীড়ায় ফিরোজা খাতুন, বীর মুক্তিযোদ্ধা অধ্যাপক ডা. মোল্লা ওবায়েদুল্লাহ বাকী ও এসএম আব্রাহাম লিংকন।

এটি দেশের সর্বোচ্চ রাষ্ট্রীয় পুরস্কার। ২৬ মার্চ স্বাধীনতা দিবস উপলক্ষে সরকার ১৯৭৭ সাল থেকে প্রতি বছর এ পুরস্কার দিয়ে আসছে।

পুরস্কারপ্রাপ্ত প্রত্যেককে পাঁচ লাখ টাকা, ১৮ ক্যারেটের ৫০ গ্রাম ওজনের স্বর্ণের পদক, পদকের একটি রেপ্লিকা ও একটি সম্মাননাপত্র দেওয়া হবে।

প্রসঙ্গত, গারো জনগোষ্ঠীর লেখক-সাহিত্যিকদের মধ্যে অরণ্য চিরান অন্যতম। তাঁর স্বাধীনতা পদকপ্রাপ্তিতে গারো জনগোষ্ঠীর মধ্যে ব্যাপক উদ্দীপনা লক্ষ্য করা যাচ্ছে। অনেকেই সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে উষ্ণ অভিনন্দন শুভেচ্ছা জানিয়ে স্ট্যাটাস দিচ্ছেন। 

গবিতে আদিবাসী শিক্ষার্থীদের মিলনমেলা

আদিবাসী শিক্ষার্থী

সাভারের গণ বিশ্ববিদ্যালয়ে (গবি) আদিবাসী শিক্ষার্থীদের পারস্পরিক যোগাযোগ ও দক্ষতা বৃদ্ধির লক্ষ্যে আলোচনা সভা ও সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠান হয়েছে। শনিবার (২ মার্চ) ক্যাম্পাসের আম বাগান চত্বরে আদিবাসী শিক্ষার্থীরা এ অনুষ্ঠানের আয়োজন করে।

এসময় শিক্ষার্থীরা জানান, ‘বাংলাদেশের বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয়গুলো আদিবাসী শিক্ষার্থীদের উচ্চ শিক্ষায় কী ভূমিকা পালন করছে, এ বিষয়ে দ্রুতই গবেষণার কাজ শুরু করা হবে।’

গবির ইংরেজি বিভাগের ২০ তম ব্যাচের শিক্ষার্থী হ্লামংউ মারমা বলেন, ‘আমরা শিক্ষা দিয়ে আলোর পাহাড় গড়বো। আমরা সংখ্যালঘিষ্ঠ হওয়ার পরেও এ বিশ্ববিদ্যালয়ে এসেছি। কারণ হচ্ছে এ বিশ্ববিদ্যালয় আমাদের শিক্ষাবৃত্তি সুবিধা দিয়ে থাকে। তবে এই সুবিধা যদি কয়েকটা বিভাগের মধ্যে সীমাবদ্ধ না থেকে সকল বিভাগে ব্যবস্থা করা যেত, তাহলে আমরা টেকনিক্যাল বিষয়ে পড়ার সুবিধা পেতাম।’

বাংলা বিভাগের পঞ্চম বর্ষের শিক্ষার্থী বুদ্ধেন্দু চাকমা বলেন, ‘যখন আমাদের উপজাতি পরিচয় দেয়া হয়, তখন নিজেকে ছোট মনে হয়। আমাদের আদি পুরুষরা এদেশে বসবাস করে আসছে। আমরা চাই, আমাদের আদিবাসী পরিচয় দেয়া হোক। এতে আমাদের সংস্কৃতি ও ঐতিহ্য তুলে ধরতে পারবো।’

আদিবাসী শিক্ষার্থীদের এ মিলনমেলায় নানা ধরনের খেলার আয়োজন করা হয়; যার মধ্যে ছিল হাড়ি ভাঙ্গা, র‍্যাফেল ড্র, বালিশ নিক্ষেপ। বর্তমানে গবিতে ৩৫ জনের অধিক আদিবাসী শিক্ষার্থী পড়াশোনা করছেন। 

সাফ অনূর্ধ্ব-১৬ নারী ফুটবল দলে খেলছেন সাথী মুন্ডা

সাথী মুন্ডা

লাল সবুজের জার্সি গায়ে দিয়ে সাফ অনূর্ধ্ব-১৬ নারী ফুটবল দলের হয়ে খেলছেন মুন্ডা জনজাতির মেয়ে সাথী মুন্ডা। প্রচন্ড দারিদ্রের মধ্যে বড় হওয়া এ কিশোরী এখন শুধু পরিবার নয়, বরং প্রতিনিধিত্ব করছেন সমগ্র দেশের প্রতিনিধিত্ব।

অস্তিত্ব সংকটে থাকা মুন্ডা জনজাতির একজন সদস্য হয়েও শ্যামনগর উপকূলের সাথীর হাতে এখন লাল সবুজের পাতাকা। যা স্বাভাবিকভাবেই গর্ব করেছে আদিবাসীদের।

আজ বিকেলে নেপালের মাটিতে বাংলাদেশ জাতীয় দলের নারী ফুটবল দল অনূর্ধ্ব-১৬ দলের হয়ে লড়েছেন পনেরো বছরের এ কিশোরী।

সাতক্ষীরার শ্যামনগর উপজেলার বুড়িগোয়ালীনি এলাকার প্রদীপ মুন্ডা ও প্রতিমা মুন্ডার মেয়ে তিনি। বর্তমানে বিকেএসপিতে ৮ম শ্রেণীতে অধ্যয়নরত এ কিশোরী স্থানীয় বুড়িগোয়ালীনি ফরেস্ট মাধ্যমিক বিদ্যালয় থেকে দু’বছর আগে বিকেএসপিতে পাড়ি জমায়।

সাথীর পিতা প্রদীপ মুন্ডা জানান, মেয়ের অর্জনে তারা শুধুমাত্র পরিবার না, বরং গোটা মুন্ডা জাতি ও এলাকাবাসী দারুণ খুশি।

সাথীর মা প্রতিমা মুন্ডা জানান, অভাবের কারণে তারা স্বামী-স্ত্রী কাজের জন্য দিনের বেশিরভাগ সময় বাড়ির বাইরে থাকেন। সে সুযোগে স্কুল ফাঁকি দিয়ে সাথী স্থানীয় বিজি কলেজ মাঠে ফুটবল খেলতেন। এক পর্যায়ে স্থানীয় প্রশিক্ষক মাসুম বিল্লাহর চোখে পড়লে তিনি সাথীর দায়িত্ব নেন। প্রায় দু’বছর প্রশিক্ষণের পর বিকেএসপিতে সুযোগ মিলে যাওয়ায় তারা রীতিমত বিস্মিত হন। এখন মেয়ে দেশের জার্সি গায়ে চড়িয়ে মাঠে নামছেন জেনে আনন্দে ভাসা হারিয়ে ফেলছেন।

সাথীর প্রশিক্ষকের দায়িত্ব পালনকারী মাসুম বিল্লাহ জানান, ২০২৩ সালে সাথী অনূর্ধ্ব-১৬ পর্যায়ে দেশের হয়ে ভারতের সুব্রত কাপে খেলেছে। দেশের হয়ে দ্বিতীয়বারের মত বিদেশ সফরের অংশ হিসেবে বর্তমানে সে নেপালে রয়েছে।

এদিকে, বাবা প্রদীপ মুন্ডা দেশের সকল মানুষের কাছে মেয়ে সাথীর জন‍্য দোয়া ও আর্শিবাদ চেয়েছেন।

পিসিপি’র সাবেক সভাপতি থুইক্যচিং মারমার পিতা আর নেই

পাহাড়ি ছাত্র পরিষদ

পাহাড়ি ছাত্র পরিষদের (পিসিপি) সাবেক সভাপতি থুইক্যচিং মারমার পিতা ক্যশৈপ্রু মারমা আর নেই। আজ শনিবার (২ মার্চ) ভোর রাত ৪টা ১৫ মিনিটে বান্দরবান সদর উপজেলার ক্রাইক্ষ্যং পাড়ার নিজ বাড়িতে তিনি মৃত্যুবরণ করেন।

মৃত্যুকালে তাঁর বয়স হয়েছিল ৮৬ বছর। তিনি দীর্ঘদিন ধরে বার্ধক্যজনিত বিভিন্ন রোগে ভুগছিলেন।

ইউনাইটেড পিপলস ডেমোক্রেটিক ফ্রন্ট (ইউপিডিএফ) এর প্রচার ও প্রকাশনা বিভাগের নিরন চাকমা এক বার্তায় এ তথ্য জানান।

ক্যশৈপ্রু মারমা ১৯৩৮ সালের ২ মার্চ জন্মগ্রহণ করেন। তিনি ২০০২ সালে বান্দরবান সদর উপজেলার রেইছা ইউনিয়নের মেম্বার হিসেবে নির্বাচিত হয়েছিলেন।

তাঁর তিন ছেলে ও তিন মেয়ে। থুইক্যচিং মারমা হলেন সবার ছোট।

ইউপিডিএফ সভাপতি প্রসিত খীসা, সাধারণ সম্পাদক রবি শংকর চাকমা, পাহাড়ি ছাত্র পরিষদের সভাপতি অঙ্কন চাকমা, হিল উইমেন্স ফেডারেশনের সভাপতি নীতি চাকমা, গণতান্ত্রিক যুব ফোরামের সভাপতি জিকো ত্রিপুরা ও পার্বত্য চট্টগ্রাম নারী সংঘের সভাপতি কণিকা দেওয়ান থুইক্যচিং মারমার পিতা ক্যশৈপ্রু মারমার মৃত্যুতে গভীর শোক প্রকাশ করেছেন।

চবিতে আদিবাসী সংস্কৃতি ও ভাষা বৈচিত্র্য উৎসব

রঁদেভূ

চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ের আদিবাসী শিক্ষার্থীদের সাংস্কৃতিক সংগঠন রঁদেভূর উদ্যোগে চতুর্থবারের মতো আদিবাসী সংস্কৃতি ও ভাষা বৈচিত্র্য উৎসব-২০২৪ অনুষ্ঠিত হয়েছে। বৃহস্পতিবার ‘শেখড়ের টানে তারুণ্যের আহ্বানে, সংস্কৃতির সুর হোক ভাষার জয়গানে’ স্লোগানকে সামনে রেখে আয়োজিত অনুষ্ঠানটি চবি ক্যাম্পাসের উন্মুক্ত মঞ্চে দুপুর ২টায় শুরু হয়।

এতে উদ্বোধক হিসেবে উপস্থিত ছিলেন বিশিষ্ট লেখক ও ভাষা গবেষক মথুরা বিকাশ ত্রিপুরা। আলোচনা সভায় বিশেষ অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন সমাজবিজ্ঞান অনুষদের ডিন প্রফেসর সিরাজ উদ দৌল্লাহ, ইতিহাস বিভাগের অধ্যাপক ড. আনন্দ বিকাশ চাকমা, আধুনিক ভাষা ইনস্টিটিউটের সহকারী অধ্যাপক জেসী ডেইজি মারাক, আন্তর্জাতিক সম্পর্ক বিভাগের প্রভাষক শাং থুই প্রু ও ইংরেজি প্রভাষক নৈরঞ্জনা চাকমা।

রঁদেভূ শিল্পীগোষ্ঠীর সাধারণ সম্পাদক পহেলা চাকমার সঞ্চালনায় অনুষ্ঠানে সভাপতিত্ব করেন সভাপতি সজীব তালুকদার।

অনুষ্ঠানের উদ্বোধক মথুরা বিকাশ ত্রিপুরা বলেন, "আদিবাসী শিশুদের প্রথমে মাতৃভাষা নিয়ে পাঠদান করার সুযোগ তৈরি করে দিতে হবে। আদিবাসীদের মাতৃভাষা তখনই টিকে থাকবে যখন আমাদের প্রজন্মান্তরে সেটি যথাযথ ব্যবহারের পরিবেশ সৃষ্টি হয়। কোন ভাষায় কথা বলার মানুষ একজন মাত্র থাকলেও সেটাকে অন্যান্য ভাষার মত সমান মর্যাদা দিতে হবে। বাংলাদেশের সংকটাপন্ন আদিবাসী জনগোষ্ঠীর ভাষা ও সংস্কৃতিকে পরিচর্যা ও রক্ষণাবেক্ষণের জন্য সরকারিভাবে টেকসই কিছু উদ্যোগ গ্রহণ করা দরকার।"

প্রফেসর ড. সিরাজ উদ দৌল্লাহ বলেন, ‘‘বাংলাদেশের পাহাড় ও সমতলে আদিবাসীদের ভাষা-সংস্কৃতি দিন দিন বিলুপ্তির পথে যাচ্ছে। পাকিস্তান শাসনের সময়ে পূর্ব বাংলায় বাঙালিদের উপর উর্দু ভাষাকে চাপিয়ে দেওয়ার চেষ্টা করা হয়। বাংলা ভাষাকে হারিয়ে যাওয়া থেকে রক্ষার জন্য বায়ান্নর ভাষা আন্দোলন গড়ে ওঠে। আজকের দিনে আদিবাসীদের ভাষা ও সংস্কৃতিগত সচেতন দরকার। যারা বিশ্ববিদ্যালয়ে পড়াশুনা করছেন নিজ নিজ ভাষা সংস্কৃতি নিয়ে অধিকতরভাবে কাজ করা সকলের নৈতিক দায়িত্ব।’’

ড. আনন্দ বিকাশ চাকমা বলেন, "আজকের দিনে অনুশীলন ও চর্চার অভাবে আদিবাসীদের সংস্কৃতি সংকটে পড়ার সম্ভাবনা রয়েছে। এজন্য নতুন প্রজন্মের জন্য ভাষা ও সংস্কৃতি চর্চার সুষ্ঠু পরিবেশ সৃষ্টি করা প্রয়োজন।"

জেসী ডেইজি মারাক বলেন, "পৃথিবীতে অনেক ভাষা হারিয়ে যেতে বসেছে। ভাষা একটি জনগোষ্ঠীর জীবনের অংশ। একটা জনগোষ্ঠী তখনই পরিপূর্ণ হয়ে উঠে যখন সে নিজের মাতৃভাষা নিয়ে মনের ভাব প্রকাশ করতে পারে।"

আলোচনা সভা শেষে রঁদেভূর শিল্পীদের অংশগ্রহণে মনোজ্ঞ সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠান হয়। এছাড়াও চবি চারুকলা ইনস্টিটিউটের আদিবাসী শিক্ষার্থীবৃন্দ এবং অনুষ্ঠানে চারুকলায় অধ্যয়নরত আদিবাসী শিক্ষার্থীদের নানা শিল্প ও চিত্রকর্ম প্রদর্শিত হয়। 

সাবেক ‘মিস ইন্ডিয়া ত্রিপুরা’ রিঙ্কি চাকমা আর নেই

 

সাবেক ‘মিস ইন্ডিয়া ত্রিপুরা’ রিঙ্কি চাকমা

অনলাইন ডেস্ক: মাত্র ২৮ বছর বয়সেই নিভে গেল সাবেক ‘মিস ইন্ডিয়া ত্রিপুরা’ রিঙ্কি চাকমার জীবনের প্রদীপ। ক্যানসারে তাঁর মৃত্যু হয়েছে বলে এক প্রতিবেদনে জানিয়েছে ভারতীয় গণমাধ্যম হিন্দুস্তান টাইমস।

২০২২ সাল থেকে মারণ ব্রেস্ট ক্যানসারের সঙ্গে লড়াই করছিলেন তিনি। ফাইলোডস টিউমার ধরা পড়েছিল‌ তাঁর। প্রাথমিকভাবে সেরেও গিয়েছিল ক্যানসার। কিন্তু পরে আবার ফিরে আসে।

মেপাস্ট্যাসিস প্রক্রিয়ায় ক্যানসার ছড়িয়ে পড়ে প্রথমে ফুসফুসে। পরে সেখান থেকে ব্রেনে। কেমো চলছিল। কিন্তু শরীর তাতে সায় দেয়নি। সংবাদমাধ্যম সূত্র অনুযায়ী খবর, গত ২২ ফেব্রুয়ারি তাকে সাকেতের ম্যাক্স হাসপাতালে ভর্তি করা হয়। সেখানেই চিকিৎসা চলছিল। কিন্তু চিকিৎসায় সাড়া দেয়নি শরীর।

সম্প্রতি ইন্সটাগ্রাম পোস্টে নিজের অসুস্থতার কথা ভক্ত অনুরাগীদের সঙ্গে ভাগ করে নিয়েছিলেন রিঙ্কি চাকমা‌। শেষ পোস্টটি তিনি নয়া দিল্লির এইমস থেকে করেন। এর আগে কখনই নিজের শারীরিক অবস্থার কথা খোলাসা করে লেখেননি ইনস্টাগ্রামে।

তবে ২৭ জানুয়ারির ওই পোস্টে লেখেন, ‘আমি একা লড়াই করে চলেছি একটি মারণরোগের সঙ্গে। এতদিন কাউকেই এই কথা জানাইনি। তবে এখন সেই সময় এসেছে‌‌।’ এরপরেই তাঁর ক্যানসার ধরা পড়ার কথা জানান রিঙ্কি।

রিঙ্কি জানিয়েছিলেন, মারণরোগ সারাতে বর্তমানে তাঁকে কেমোথেরাপি নিতে হচ্ছে। কিন্তু তাতেও বাঁচার আশা কম। মাত্র ত্রিশ শতাংশ। চিকিৎসকরা আগেই আশঙ্কা প্রকাশ করেছিলেন। সেটাই সত্যি হল। ক্যানসারের সঙ্গে দুই বছর লড়েও মাত্র আঠাশেই প্রয়াত হলেন তিনি।

২০১৭ সালে ‘মিস ইন্ডিয়া ত্রিপুরা’ খেতাব জেতেন রিঙ্কি চাকমা। সে বছর মানুষি ছিল্লার মিস ইন্ডিয়া হয়েছিলেন। পরবর্তী সময়ে মানুষি মিস ওয়ার্ল্ড খেতাবও জয় করেন।

ফেমিনা বিউটি প্যাগেন্ট তাদের অফিশিয়াল ইনস্টাগ্রাম হ্যান্ডেলে লিখেছে, ‘রিঙ্কি এমন একটি শক্তি ছিলেন, যাঁর কাজের প্রতি উৎসাহ ছিল প্রবল। ত্রিপুরার হয়ে প্রতিনিধিত্ব করেছিলেন।’

© all rights reserved - Janajatir Kantho