আগামী জাতীয় সংসদ নির্বাচনে প্রার্থী দেওয়ার পরিকল্পনা করছেন আদিবাসী নেতারা। জাতীয় নির্বাচনকে ঘিরে ‘আদিবাসী ঐক্য জোট’ নামে নতুন একটি জোট আত্মপ্রকাশ করতে যাচ্ছেন তারা। আদিবাসী অধ্যুষিত অন্তত ৩০টি অঞ্চলে স্বতন্ত্র প্রার্থী দেওয়ার পরিকল্পনা নিয়েছে এই জোট।
জানা গেছে, জাতীয় নাগরিক পার্টি (এনসিপি) থেকে সদ্য পদত্যাগ করা গারো জনগোষ্ঠীর নেতা অলিক মৃ’র উদ্যোগে নতুন এই জোট গঠন হতে যাচ্ছে। পাহাড় থেকে সমতলে এ জোটের স্বতন্ত্র প্রার্থীদের মার্কা হতে পারে ‘প্রজাপতি’। আর সব আসনেই তরুণ নেতৃত্বকে সামনে আনার চেষ্টা থাকবে।
সম্প্রতি খাগড়াছড়িতে এক পাহাড়ি স্কুলছাত্রী ধর্ষণ ও তার বিচারের দাবিতে সংঘটিত আন্দোলন নিয়ে ‘নীরবতা’ ও ‘মিথ্যাচারের’ অভিযোগে এনসিপি থেকে পদত্যাগ করেন অলিক। তারপরই ‘আদিবাসী ঐক্য জোটের’ ব্যানারে স্বতন্ত্র প্রার্থী নিয়ে দেশজুড়ে নির্বাচনে অংশগ্রহণের এই উদ্যোগ নেন তিনি।
অলিক মৃ নিজে টাঙ্গাইল-১ (মধুপুর ও ধনবাড়ী) আসনে লড়বেন বলে জানা
গেছে। এ এলাকায় তার প্রধান প্রতিদ্বন্দ্বী হবে বিএনপি ও জামায়াতে ইসলামী।
ইতোমধ্যে পার্বত্য চট্টগ্রাম, ময়মনসিংহ, শেরপুর, নেত্রকোনা, টাঙ্গাইল, মৌলভীবাজার, হবিগঞ্জসহ উত্তরবঙ্গের ১৬টি জেলায় আদিবাসী জাতিগোষ্ঠীর আঞ্চলিক দল ও সংগঠনের সঙ্গে যোগাযোগ ও প্রস্তুতিপর্ব চলছে।
অলিক মৃ বলেন, ‘আদিবাসী ঐক্য জোটের ব্যানারে এবার আমরা আদিবাসী অধ্যুষিত অঞ্চলে স্বতন্ত্র প্রার্থী দেব। পার্বত্য চট্টগ্রাম থেকে শুরু করে সমতলের যেখানে যেখানে আদিবাসীরা সংখ্যায় বেশি, সেখানেই প্রার্থী দেওয়া হবে।’
এ জোটের নির্বাচনী মার্কা ‘প্রজাপতি’ চেয়ে নির্বাচন কমিশনের কাছে আবেদন করবেন বলে তিনি জানান।
রাজনৈতিক বিশ্লেষকরা বলছেন, বাংলাদেশের রাজনীতিতে একটি ধারণা প্রচলিত আছে যে, সংখ্যালঘু সম্প্রদায় ও ভিন্ন ভাষাভাষী জনগোষ্ঠীর বেশিরভাগ মানুষের ভোট আওয়ামী লীগের বাক্সে যায়। ক্ষমতাচ্যুত আওয়ামী লীগের পক্ষ থেকেও বিভিন্ন সময়ে এই ‘ন্যারেটিভ’ দাঁড় করানো হয়েছে যে, কেবল তারাই এসব সম্প্রদায় ও গোষ্ঠীর মানুষের ভরসা।
কিন্তু জুলাই গণঅভ্যুত্থানের পর সৃষ্ট পরিবর্তিত রাজনৈতিক প্রেক্ষাপটে আদিবাসী জাতিগোষ্ঠীর নেতারা নিজেরাই সাংগঠনিকভাবে শক্তিশালী হওয়ার চেষ্টা করছেন। সেই চেষ্টারই ফলাফল ‘আদিবাসী ঐক্য জোট’।
কোন মন্তব্য নেই
একটি মন্তব্য পোস্ট করুন