পার্বত্য জেলা খাগড়াছড়িতে আদিবাসীদের প্রকাশ্যে গুলি করে হত্যা করা হচ্ছে। কিন্তু হত্যাকাণ্ডগুলো এই সরকারের দৃষ্টিগোচর হচ্ছে না। এই হচ্ছে এনজিওবাদী ফ্যাসিস্ট সরকারের নমুনা। পার্বত্য চট্টগ্রাম শান্তিতে না থাকলে, বাংলাদেশও শান্তিতে থাকবে না। আদিবাসীরা সবকিছু প্রতিহত করে সামনের দিকে এগোবে।
আজ রোববার, বিকাল ৪টায় খাগড়াছড়িতে এক জুম্ম ছাত্রীকে সংঘবদ্ধ ধর্ষণের বিচারের দাবিতে চলমান শান্তিপূর্ণ অবরোধ কর্মসূচিতে সেটেলার বাঙালি কর্তৃক জুম্মদের উপর পরিকল্পিত হামলা ও ঘরবাড়ি দোকানপাট ভাঙচুরের প্রতিবাদে আয়োজিত এক সমাবেশে সভাপতির বক্তব্যে বাংলাদেশ আদিবাসী ছাত্র সংগ্রাম পরিষদের সভাপতি অনন্ত তঞ্চঙ্গ্যা এসব কথা বলেন।
আদিবাসী ছাত্র-জনতার ব্যানারে এই বিক্ষোভ সমাবেশ হয়। পিসিপি কেন্দ্রীয় কমিটির সাংগঠনিক সম্পাদক সৈসানু মারমার সঞ্চালনায় সমাবেশে পার্বত্য জনসংহতি সমিতির কেন্দ্রীয় সদস্য দীপায়ন খীসা বলেন, ‘আপনারা এত তালবাহানা না করে পাহাড়ের জন্য আইন করে দেন যে, যারা জাতে সেটেলার বাঙালি, ধর্মে মুসলিম তাদের জন্য ধর্ষণ বৈধ। আইন করে দেন পাহাড়ে ধর্ষণ হলে কোন প্রতিবাদ, বিক্ষোভ করা যাবে না। শেখ হাসিনার বানিয়ে দিয়ে যাওয়া ন্যারেটিভ, পাহাড়ীরা প্রতিবাদ করলেই সন্ত্রাসী সেই ন্যারেটিভ প্র্যাকটিস করা বন্ধ করেন।’
দৈনিক আমাদের সময় পত্রিকার নির্বাহী সম্পাদক এহসান মাহমুদ বলেন, ‘আদিবাসীদের প্রতিবাদের ভাষাকে দাবিয়ে রেখে রাষ্ট্র নিজেকে নিপীড়কের ভূমিকায় অবতীর্ণ করেছে। পাহাড়ে রাষ্ট্রের পক্ষ থেকে বৈষম্য বিলোপের ব্যবস্থা না করে উল্টো বৈষম্য, নিপীড়নের চাকা অব্যাহত রেখেছে। আদিবাসীদের বিষয়ে রাষ্ট্র নির্বাক। ক্ষমতার মসনদে বসে আদিবাসীদের হাহাকার এই সরকার দেখতে পাচ্ছে না।’
বাংলাদেশ সুপ্রীম কোর্টের আইনজীবী অ্যাডভোকেট নিকোলাস চাকমা বলেন, ‘ধর্ষকের বিচার চাইতে গিয়ে আমাদের আদিবাসী ভাইবোনদের নিপীড়নের শিকার হতে হয়। পার্বত্য চট্টগ্রামে সেনাশাসন জারি রেখে, ভূমি থেকে উচ্ছেদ করে রাষ্ট্র আদিবাসীদের বাংলাদেশের মানচিত্র থেকে নিশ্চিহ্ন করে দিতে চায়। সংবিধানের দোহাই দিয়ে এই রাষ্ট্রযন্ত্র নিপীড়নের মাধ্যমে আদিবাসীদের মৃত্যুর তালিকা দীর্ঘ থেকে দীর্ঘতর করে চলেছে।’
ছাত্রনেতা শান্তিময় চাকমা বলেন, ‘পাহাড় আজ রক্তাক্ত, কিন্তু রাষ্ট্র বোবা, বধির, আদিবাসীদের আর্তচিৎকার তাদের কানে পৌঁছাচ্ছে না। খাগড়াছড়িতে ঘটে যাওয়া ধর্ষণ ও প্রতিবাদকারীদের ওপর হামলার যথাযথ বিচার না হলে পাহাড় ও সমতলে বৃহত্তর আন্দোলন গড়ে উঠবে।’
বিক্ষোভ সমাবেশের পর একটি প্রতিবাদ মিছিল শাহবাগ থেকে শুরু হয়ে অপরাজেয় বাংলার পাদদেশে গিয়ে শেষ হয়। বিক্ষোভ সমাবেশে বিভিন্ন আদিবাসী ও প্রগতিশীল ছাত্র সংগঠনগুলো সংহতি জানিয়েছে।
এদিকে, খাগড়াছড়ির গুইমারা উপজেলায়
তিনজন আদিবাসীর গুলিতে নিহত হবার
খবর পাওয়া গেছে (সর্বশেষ)। তবে নিহতদের বিস্তারিত পরিচয় এখনও জানা যায়নি। এই ঘটনায় অনেকেই
আহত হয়েছেন।
কোন মন্তব্য নেই
একটি মন্তব্য পোস্ট করুন