কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তা (এআই) আদিবাসী জাতিগোষ্ঠীকে প্রায়ই বিকৃতভাবে বা ভুলভাবে উপস্থাপন করছে। গুগলে ‘ইনডিজেনাস পিপল’ লিখে খোঁজা হলে মাঝেমধ্যে এমন ছবি দেখানো হয়, যা তাদের ‘আদিম’, ‘বন্য’, ‘বর্বর’, ‘জংলি’ ও ‘হিংস্র’ আকারে উপস্থাপন করে।
সোমবার (১১ আগস্ট) ঢাকার মুক্তিযুদ্ধ জাদুঘর মিলনায়তনে ‘আদিবাসী নারীর অধিকার রক্ষা ও ভবিষ্যৎ গড়ার লড়াইয়ে আধুনিক প্রযুক্তির ভূমিকা’ শীর্ষক আলোচনা সভায় বক্তারা এমন অভিযোগ করেন। বাংলাদেশ আদিবাসী নারী নেটওয়ার্ক এ সভার আয়োজন করে।
আলোচনা সভায় দৈনিক আমাদের সময়ের সম্পাদক আবু সাঈদ খান বলেন, ‘এআইয়ের কাছ থেকে আমরা যেসব তথ্য পাব, সেটা ততক্ষণ পর্যন্ত ভুলে ভরা থাকবে, যতক্ষণ না আমরা সঠিক তথ্য সন্নিবেশিত করতে পারি। আদিবাসী ও নারী কর্মীদের এই তথ্য সন্নিবেশিত করার দায়িত্ব পালন করতে হবে।’
বাংলাদেশ আদিবাসী ফোরামের সাধারণ সম্পাদক সঞ্জীব দ্রং বলেন, ‘পুরুষতন্ত্র দিন দিন ভয়াবহ হয়ে উঠছে। অপর দিকে বিভিন্ন পন্থায় নারীকে বৈষম্যের শিকার হতে হচ্ছে। সম্পদ ও বিভিন্ন সামাজিক সেবা দেওয়ার ক্ষেত্রে আদিবাসী নারীদের অধিকার নিশ্চিত করতে হবে। সম্পদের ব্যবহার ও সিদ্ধান্ত গ্রহণেও তাদের অধিকার নিশ্চিত করা জরুরি।’
মানুষের জন্য ফাউন্ডেশনের পরিচালক বনশ্রী মিত্র বলেন, ‘নারীর প্রতি সহিংসতার ঘটনা ঘটলেও অনেকে এগিয়ে আসেন না। একজন সংখ্যালঘু সম্প্রদায়ের প্রতিনিধি হিসেবে আমরা যখন কোনো সহিংসতার শিকার হই, তখন সেটা বলতে লজ্জা পাই। কিন্তু মূলধারার মানুষের সেই লজ্জাও আমরা দেখি না। এই মানসিকতার পরিবর্তন দরকার। দেশকে এগিয়ে নিতে হলে সব শোষণ–বঞ্চনাকে পেছনে ফেলে একসাথে এগিয়ে যেতে হবে।’
আলোচনায় অংশ নিয়ে বাংলাদেশ মহিলা পরিষদের পরিচালক জনা গোস্বামী
বলেন, ‘আদিবাসী জাতিগোষ্ঠীর নারীরা দুভাবে প্রান্তিক। প্রথমত তাঁরা নারী, এরপর তাঁরা আদিবাসী।
অনেক কিছু এখন গণমাধ্যমে আসছে না। অনেক কিছু সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম থেকে পাওয়া যাচ্ছে।’
বাংলাদেশ আদিবাসী নারী নেটওয়ার্কের সহসভাপতি লালসা চাকমার সভাপতিত্বে আলোচনা সভায়
অন্যান্যের মধ্যে বক্তব্য দেন মানুষের জন্য ফাউন্ডেশনের ইয়ুথ অ্যান্ড সোশ্যাল কোহেসনের প্রধান ওয়াসিউর রহমান, বাংলাদেশ আদিবাসী নারী নেটওয়ার্কের সহসাধারণ সম্পাদক হেলেনা তালাং। সভা শেষে সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠান পরিবেশন করে এফ মাইনর, জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ের সাংস্কৃতিক দল আরফি সহ
বিভিন্ন জাতিগোষ্ঠীর শিল্পীরা।