ঢাকায় দুই দিনব্যাপী আদিবাসী
খাদ্য ও শস্য মেলার উদ্বোধন হয়েছে। শুক্রবার (২১ নভেম্বর) সকাল ১০টার দিকে রাজধানীর
মিরপুরস্থ পার্বত্য বৌদ্ধ কমপ্লেক্স প্রাঙ্গণে এ মেলার উদ্বোধন করা হয়। বেসরকারি উন্নয়ন
সংস্থা নাগরিক উদ্যোগ ও আদিবাসী সুহৃদবৃন্দ এ মেলার আয়োজন করেছে।
নাগরিক উদ্যোগের প্রধান নির্বাহী
জাকির হোসেনের সভাপতিত্বে উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন গণপ্রজাতন্ত্রী
বাংলাদেশ সরকারের পরিবেশ, বন ও জলবায়ু পরিবর্তন এবং পানি সম্পদ বিষয়ক উপদেষ্টা সৈয়দা
রিজওয়ানা হাসান। এছাড়াও অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের গণযোগাযোগ
ও সাংবাদিকতা বিভাগের অধ্যাপক রোবায়েত ফেরদৌস এবং আদিবাসী অধিকার কর্মী মেইনথিন প্রমিলা।
আয়োজনের উদ্বোধক হিসেবে ছিলেন পার্বত্য বৌদ্ধ সংঘের সদস্য মেজর (অব) তপন বিকাশ চাকমা।
উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে উপদেষ্টা
সৈয়দা রিজওয়ানা হাসান বলেন, একটা দেশে যত বৈচিত্র্য থাকে সেই দেশ ততটাই সুন্দর। এই
দেশে যদি কেবল একটি জনগোষ্ঠী থাকতো তখন এতটা সুন্দর লাগতো না।
তিনি আরো বলেন, পাহাড়ী খাবার
গ্রহণ করা এখন একটি ট্রেন্ডে পরিণত হয়েছে। মানুষ পাহাড়ী খাবার খেতে চায় ট্রেন্ড হিসেবে,
ঐতিহ্যর অংশ হিসেবে না। কিন্তু এটিকে একটি বৈচিত্র্যপূর্ণ ঐতিহ্যর অংশ হিসেবে গ্রহণ
করতে হবে। গণমানুষের কাছে নিরাপদ খাবার পৌঁছে দিতে স্বাস্থ্যকর আদিবাসী খাবারগুলোকে
আরো বেশী প্রচার ও প্রসার করতে হবে।
অধ্যাপক রোবায়েত ফেরদৌস বলেন,
শুধুমাত্র আদিবাসীদের খাদ্যভ্যাসের চাকচিক্য দেখলে হবে না, তাদের জন্য ন্যায্য খাদ্য
বন্টন করতে হবে। একটি গণতান্ত্রিক, বৈষম্যমুক্ত, জাতিনিরপেক্ষ, ভাষানিরপেক্ষ সর্বোপরি
একটি বৈচিত্র্যপূর্ণ রাষ্ট্র গঠনে সকলকে এগিয়ে আসতে হবে।
সভাপতির বক্তব্যে জাকির হোসেন
বলেন, এ মেলার উদ্দেশ্য হচ্ছে দেশের আদিবাসীদের বৈচিত্র্যকে পরিচয় করিয়ে দেওয়া। সবার
কাছে আদিবাসীদের অর্গানিক খাদ্যগুলোর পরিচয় করিয়ে দেওয়া। প্রচার বাড়লে, বাজারে এগুলোর
প্রচলন বাড়বে। তখন উৎপাদনও বাড়বে।
আলোচনা সভা শেষে পার্বত্য বৌদ্ধ
সংঘের সদস্য মেজর (অব) তপন বিকাশ চাকমা বেলুন উড়িয়ে দুই দিনব্যাপী এ মেলার উদ্বোধন
ঘোষণা করেন। পরে প্রধান অতিথিসহ উপস্থিত অতিথিবৃন্দ মেলার স্টলগুলো পরিদর্শন
করেন।
মেলায় মারমা ও রাখাইনদের ঐতিহ্যবাহী
মুন্ডি, গারো ও চাকমাদের ঐতিহ্যবাহী পিঠা, পাজনসহ বিভিন্ন ধরণের মুখরোচক খাবার এবং
কলা, বেগুন, মরিচ, পাহাড়ী আলুসহ বিভিন্ন ধরণের কৃষিজ পণ্যর সমাহার বসেছে। দুইদিনব্যাপী
(শুক্রবার ও শনিবার) চলা এ মেলা প্রতিদিন সকাল ১০টা হতে শুরু হয়ে রাত ৯টা পর্যন্ত চলবে।

কোন মন্তব্য নেই
একটি মন্তব্য পোস্ট করুন